অদেখা মানুষের সাথে কথা বলতে

টেলিফোন ম্যানার্স

 

-জাহাঙ্গীর আলম শোভন

আমরা প্রতিনিয়ত ফোনে কথা বলি। কথায় কথা বাড়ে। কথা দিয়ে মানুষের শত্রু হওয়া যায় এবং কথা দিয়ে মানুষের বন্ধু হওয়া যায়। টেলিফোনে না দেখেও নিজেকে প্রেজেন্টে করা যায় সুন্দর অথবা বাজে ভাবে। একজন মানুষের কথা বলার স্টাইল, হাসি ম্যানার ইত্যাদির মাধ্যমে ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির মনে এই প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটির একটা কাল্পনিক অভিব্যক্তি ফুটে উঠে। তাই ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে ম্যানার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা এই বিষয়ে কিছু চেষ্টা করব। এটা সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে যারা ই-কমার্স ব্যবসা করেন যাদের ক্রেতারা অনেক সময় ফোনে বা অনলাইনে পরিচিত হন এবং যারা কল সেন্টার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 

সাধারণ ম্যানার

১। অফিস টাইম:

অফিসিয়াল ব্যাপারে অফিস টাইমের মধ্যে ফোন দিন। জরুরী প্রয়োজন হলে অফিস সময়ের আগে পরে ফোন দিবেন না। যদি নেহায়েত দিতে হয় তাহলে অবশ্যেই সরি বলে নিন।

 

২। কল টাইম:

কিছু সময় এড়িয়ে ফোন করার চেষ্টা করুন। সকালে লোকজন ঘুমে থাকতে পারে, দুপুরে লাঞ্চ টাইম, নামাযের টাইম, শুক্রবারে জুমার নামাযের সময়, রমযানে ইফতারের সময়। এই সময়গুলো ফোন দেয়া থেকে বিরত থাকুন। একবার ফোন দেয়ার পর সাড়া না পেলে সাথে সাথে ফোন না দিয়ে ২০ মিনিট পরে কল দিন।

 

৩। ওয়েলকাম টিউন:

মোবাইলের ওয়েলকাম টিউন ঠিক করুন আপনার ব্যক্তিত্ব অনুসারে নয়। আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান সে সে ড্রিম অনুসারে। কোনো সস্তাগান দিয়ে ওয়েলকাম টিউন করবেন না। যদি ব্যতিক্রম কোনো ওয়েলকামটিউন সেট করতে চান। সেক্ষেত্রে সামাজিক কোনো স্লোগান দেয়া ভাল।

 

৪। রিং টোন:

ফোনের রিংটোনের ক্ষেত্রেও আপনাকে ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিতে হবে। আপনার আশপাশে বিভিন্ন মানের, মাপের এবং রুচির মানুষ থাকতে পারে। আপনার রিংটোনে যেন একজন মানুষও বিরক্ত না হয় এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে।

 

৫। পরিচয়:

ফোনে করে প্রথমেই নিজের পরিচয় দিন। আবার কেউ ফোন করলেও নিজের পরিচয় দিতে পারেন। আমাদের দেশে অনেকে এই নিছক ভদ্রতা জানে না। তাই পরিচয় না দিয়ে উল্টো পরিচয় জানতে চায়। তার সাথে তর্কে যাওয়া কোনো স্মার্ট লোকের কাজ নয়। আপনি পরিচয় দিতে পারেন সবসময়।

৬। হাঁচি কাশি:

ফোনে কথা বলার সময় নিজের আবেগ প্রকাশ করবেন না। উচ্চশব্দে হাসি এবং কান্না থেকে বিরত থাকুন। হাসি কাশি আসলে ফোন থেকে মুখ দূরে সরিয়ে নিন।

 

৭। ব্যক্তিগত:

কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে যদি কাজ সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে জানতে না চাওয়া ভাল। নিজের ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধা আলোচনা করতে যাবেন না।

 

৮। মেয়াদ:

১/২ মিনিটের বেশী লম্বা আলোচনা হলে তার কাছ থেকে সময় চেয়ে নিন। কেউ অহেতুক লম্বা আলোচনা করতে চাইলে কথা বলার সময় নেই, কাজ আছে এভাবে না বলে বরং বলুন আপনার অন্য মিটিং আছে অন্য কেউ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। আপনি পরে আবার এই বিষয়ে কথা বলবেন।

 

৯। সহযোগিতা:

কারো কাছে কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে সরাসরি সহযোগিতা না চেয়ে পরামর্শ চাইতে পারেন। তাতে তিনি যদি সহযোগিতা করতে চান তাহলে নিজেই জানাবেন। আপনার কাছে কেউ সহযোগিতা চাইলে সেটা যদি আপনি করতে না পারেন। বিনয়ের সহিত বলুন এই মুহুর্তে সম্ভব না। ভবিষ্যতে পারলে জানাবেন।

 

১০। ফোন রাখা

ফোন রাখার সময় বলে রাখুন। এবং অপরপক্ষের অনুমতি নিয়ে ফোন রাখুন। অবশ্যই ফোন রাখার আগে ফোন রাখছেন সেটা একবার মেনশন করে নিন। কথা বলা অবস্থায় ফোন কেটে গেলে আবার ফোন দিয়ে বিদায় নিয়ে নিন।

 

১২। পরিচয় নিশ্চিত

ফোনে কথা বলার সময় আপনার পরিচিত ব্যক্তিও যদি অপরপ্রান্ত থাকে তাহলে পরিচিয় নিশ্চিত হয়ে তারপর আলাপ শুরু করুন। অপরপ্রান্তে সব সময় আপনার কাংখিত ব্যক্তি নাও থাকতে পারে। তাই বিপত্তি এড়াতে সাবধান থাকুন।

12| হাসিমুখে কথা বলুন

বলা হয়ে থাকে হাসি মুখের জয় সর্বত্র। তাই হাসিমুখে কথা বলুন। অপরপ্রান্তের ব্যক্তিটি যেন বুঝতে পারে আপনি জলি মাউন্ড বা হাসিমুখে কথা বলছেন। অনেক সময় সে ব্যক্তির রাগও পড়ে যেতে পারে হাসিমুখের আলাপ শুনে। তবে হাসিমুখ মানে এই নয়যে, উচ্চশব্দে হো হো করে হাসতে হবে।

 

– লেখক জীবমুখী লেখক,

লেখকের আত্মউন্নয়নমূলক বইসমূহ

১। লেখাপড়া করে যে

২। আনফোল্ড ইউর পটেনশিয়াল

৩। নিজেকে গড়ে তুলতে।

৪।  এইম ইন লাইফ

 

 

6,914 total views, 6 views today

Comments

comments