বিজনেস ইরফরমেশন :
আজকের বিষয়: ব্যবসায়িক হিসাব খোলা
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
প্রশ্ন ০১: ব্যবসায়িক হিসাব কি এটা কেন খোলা হয়?
সাধারণত আমরা ব্যাংকে লেনদেন করার জন্য ব্যক্তি নামে যে হিসাব খুলে তাকে ব্যক্তিক হিসাব বলা হয়। এই হিসাব মূলত সঞ্চয়ী হিসাব বা সেভিংস একাউন্ট। এই হিসাবে ব্যবসায়িক লেদদেন অনুমোদন করেনা। যদিও আপনার ব্যবসায়ের টাকা আ্পনি আপনার হিসাবে রাখলে কোনো সমস্যা নেই। আবার এই হিসেবের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। দৈনিক কতোবার টাকা লেনদেন করা যাবে তারা লিমিটেশন রয়েছে। আমার বেশী টাকা জমা হয়ে গেলেও সমস্যা হতে পারে। এসব বিবেচনায় ব্যবসায়িক হিসাব বা কারেন্ট একাউন্ট বা সিডি একাউন্ট বলে। ব্যবসা পরিচালনার জন্য এ হিসাব খোলা প্রয়োজন হয়।
প্রশ্ন ০২: ব্যবসায়িক হিসাব কি কি কাজে লাগে?
১. ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য ব্যবসায়িক হিসাব খুলতে হয়।
২. দৈনিক বেশীবার টাকা উঠানো জমা দেয়ার জন্য এ হিসাব সহায়ক
৩. এ হিসাবের বিপরীতে ব্যাংকে থেকে লোন পাওয়া যায়
৪. ব্যবসায়ী হিসেবে বিদেশ গমনের জন্য এ একাউন্টের স্টেটমেন্ট জমা দিতে হয়।
৫. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা করতে হলে কারেন্ট একাউন্ট প্রয়োজন হয়। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিনামে চেক ইস্যুকরবেনা চেক ইস্যু করবে প্রতিষ্ঠানের নামে। এবং তা হবে একাউন্ট পেয়ী চেক। সেক্ষেত্রে আপনি চেক ক্যাশ করতে পারবেন না। শুধুমাত্র চেকের গায়ে প্রতিষ্ঠানের যে নাম লেখা আছে। সে নামের একাউন্টেই সেটা জমা করতে পারবেন।
৬. একটি ব্যবসায়িক হিসেবের মাধ্যমে লেনদেন করলে আপনি দেনা পাওনার হিসাব করা সহজ হবে।
৭. ইনকাম টেক্স দেয়ার জন্য আপনার হিসাবের বিবরণ প্রয়োজন হবে।
৮. আরো অনেক কাজে এ্হিসাব ও এর প্রতিবেদন প্রয়োজন হয়
9. সারাদেশ থেকে লোকেরা আপনার হিসাবে টাকা জমিা দিতে পারবে। আপনিও্ ব্যাংেকর মাধমে যেকোনে পার্টিকে টাকা দিতে পারবে।
10. অনেক কোম্পানী আছে যারা আপনার সাথে ব্যবসা করার জন্য আপনার আর্থিক সামর্থ যাচাই করবে। এবং সেজন্য আপনার ব্যাংক হিসাব দেখতে চাইবে।
প্রশ্ন ০৩: ব্যবসায়িক হিসাব কোন ব্যাংকে খোলা যায়?
বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্ত সব ব্যাংকেই ব্যাংক হিসাব খোলা যায়।
প্রশ্ন ০৪: ব্যবসায়িক হিসাব খুলতে কি কি লাগে?
১. ৩ কপি পার্সপোর্ট সাইজের ছবি
২. নমিনির ১ কপি ছবি, নমিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ভোটার আইডি কার্ডের কপি
৩. আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর কপি, তবে কোন কোন ব্যাংক মূল আইডিটা দেখতে চায়।
৪. ট্রেড লাইসেন্স মূল কপি ও ফটোকপি। মূল কপি দেখে ফেরত দেবে।
৫. বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র। অর্থাৎ যে বাড়িতে আপনি ব্যবসা করেন। সে বাড়িওয়ালার সাথে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পাদিত চুক্তিপত্র।
৬. ১২ ডিজিটযুক্ত টিআইএন সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
প্রশ্ন ০5: ব্যবসায়িক হিসাব খুলতে কতটাকা লাগে?
সাধারণত একটা কারেন্ট একাউন্টে সব সময় ১ হাজার টাকা জমা থাকতে হয়। মনে করুন ১ হাজার টাকাই লাগে। তবে ব্যাংক গেলে আপনাকে বলবে অন্তত দু হাজার টাকা জমা দিতে। তবে আমি সাজেস্ট করবো নিজের ব্যবসা যখন আর নিজের একাউন্ট যখন তখন ৫/১০/২০ হাজার রাখাই ভালো যদি সম্ভব হয়। মনে রাখবেন এই জমা টাকায় ব্যাংক কোন লভ্যাংশ দেবেনা। তবে ইদানিং কোনো কোনো ব্যাংক সিডি একাউন্টে ২৫/৫০ হাজার বা লাখ টাকা নিয়মিত রাখলে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেয়।
প্রশ্ন 6: যদি অংশীদারী ব্যবসা হয় 3 জনের নামে একাউন্ট হয় তাহলে কি ব্যাংক তটা ডেবিট কার্ড দেবে।
উত্তর: না দেবেনা। একটা একাউন্টের জন্য 1টাই ডেবিট কার্ড
প্রশ্ন 7: অংশীদারী একাউন্ট কিভানে মেনটেন করা হয়।
উত্তর: বিভিন্ন অপশন রয়েছে। যেমন
1. ২জন সাইন থাকবে। 2 জনের সই ছাড়া টাকা উঠানো যাবেনা।
2. 2 জন সাইনির যেকোন 1 জনের সাইন থাকেল টাকা উঠানো যাবে।
3. 3 জন সাইন থাকবে। 2 জনের সই ছাড়া টাকা উঠানো যাবেনা।
4. 3 জন সাইনির যেকোন একজন বাধ্যতামূলক সহ 2 জনের সাইন থাকেল টাকা উঠানো যাবে।
পরামর্শ- জাহাঙ্গীর আলম শোভন
27,140 total views, 3 views today