বাংলাদেশে দেরিতে হলেও ই-কমার্স শুরু হয়েছে কিন্তু সারাবিশ্বে আজ ই-কমার্সের জয়-জয়কার।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ই-কমার্স ব্যবসা পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে। গত বছর হামবুর্গ ভিত্তিক বিজনেস ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান ওয়াই স্ট্যাটস.কম (yStats.com) “The World’s Leading E-Commerce Companies 2014” শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এ রিপোর্টে তারা বিশ্বের দশটি সবচেয়ে লাভ জনক   ই-কমার্স কোম্পানীর তালিকা প্রকাশ করে।পাঠকদের উদ্দেশ্যে এ দশটি প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এখানে তুলে ধরা হলোঃ

1

Source: http://ystats.com/uploads/report_abstracts/1108.pdf

অ্যামাজন.কম (Amazon.com)

বিখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বলতে অ্যামাজন.কম এর নাম প্রথমেই চলে আসে। আমেরিকা-ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৪ সালে জেফ বেজোস চালু করেন। গত বছরে সাইবার মনডে(Cyber Monday)-তে অ্যামাজন প্রতি সেকেন্ডে ৬৪টি পণ্য অনলাইনে বিক্রী করে। ভোক্তাদের কাছে পণ্য দ্রুত সরবরাহ করবার জন্যে অ্যামাজন তাদের ওয়্যারহাউজ গুলোতে স্মার্ট রোবট সিস্টেম চালু করেছে। কিভা সিস্টেমস নামে একটি প্রতিষ্ঠান রোবট গুলো তৈরি করে।২০১২ সালে অ্যামাজন ৭৭৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে এ রোবটগুলি ক্রয় করে এবং তাদের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে ২০১৩ সাল থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করে। গত বছরের বড়দিনে অ্যামাজন মোট ১৫০০০ রোবট ব্যবহার করে তাদের ওয়্যারহাউজ গুলোতে দ্রুত পণ্য স্থানান্তরের জন্যে।

 

এত বড় একটি প্রতিষ্ঠান হবার পরেও অ্যামাজন দীর্ঘদিন লাভের মুখ দেখেনি যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ভীষণ অসন্তুষ্ট ছিল। গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটি ভাল লাভ করেনি কিন্তু চতুর্থ প্রান্তিকে ভাল ব্যবসা করে। প্রতিষ্ঠানটির নেট লাভ ছিল ২১৪ মিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে এ বছর প্রতিষ্ঠানটি ভাল ব্যবসা করবে।

 

জে ডি.কম ইঙ্ক (JD.com Inc.)

জে ডি.কম এর পুরো নাম হচ্ছে জিং ডং মল। এটি একটি চীনা ই-কমার্স ওয়েবসাইট। এরা মূলত ইলেক্ট্রনিক্স ভোগ্য পণ্য বিক্রী করে। লিউ কিয়াংদং এ কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি রিচার্ড লিউ নামেই বেশি পরিচিত। ১৯৯৮ সালে তিনি জেডি.কম প্রতিষ্ঠা করেন। তবে অনলাইন বিক্রী করা শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের বাজারে জে ডি.কম এর শেয়ার ছিল ৫৪.৩%। ক্রেতাদের কাছে দ্রুত পণ্য পৌছে দিতে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ফুলফিলমেন্ট সেন্টার অবকাঠামো যা চীনে সবচেয়ে বড়।গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ৯৭টি ওয়্যারহাউস ছিল যার মোট আয়তন ১.৮ মিলিয়ন বর্গমিটার। এছাড়াও আছে ১৮০৮টি ডেলিভারি স্টেশন এবং ৭১৫টি পিক-আপ স্টেশন। সমগ্র চীন জুড়ে রয়েছে জেডি.কম এর শক্তিশালী ডেলিভারি নেটওয়ার্ক রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ৬০ হাজারেরও বেশি কর্মচারী রয়েছে।

ওয়াল-মার্ট স্টোরস ইঙ্ক (Wal-Mart Stores Inc.)

ওয়াল-মার্ট স্টোরস ইঙ্ক  এর নাম বাংলাদেশে কমবেশি আমরা সবাই শুনেছি। এটি একটি বহুজাতিক রিটেইল কর্পোরেশন। আমাদের তৈরি পোশাক এর অন্যতম প্রধান ক্রেতা এ প্রতিষ্ঠানটি। স্যাম ওয়ালটন ১৯৬২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। অয়ালমার্ট ইউ.এস, ওয়ালমার্ট ইন্টারন্যাশনাল এবং স্যামস ক্লাব এই তিনটি ব্যবসায় বিভক্ত। বিশ্বের ২৭টি দেশে ১১০০০ এর বেশি রিটেইল আউটলেট রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। রিটেইল আউটলেট হলেও ওয়াল-মার্টের ই-কমার্স ব্যবসাও রয়েছে।২০১৩ সালের বড় দিনের শপিং সিজনে অ্যামাজন.কম এর ওয়েবসাইটে ভিজিট করে ৯০ কোটি ৩০ লক্ষ লোক এবং ওয়াল-মার্টের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে ২৫কোটি লোক। এবারের বড়দিনেও ওয়ালমার্ট অনলাইনে খুবই ভাল ব্যবসা করে।

ই-বে ইঙ্ক (eBay Inc.)

আরেকটি বিখ্যাত আমেরিকান ই-কমার্স কোম্পানি ই-বে ইঙ্ক ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি সি-টু-সি এবং বি-টু-সি ওয়েবসাইট। ২০০২ সালে অনলাইন পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পেপলকে ই-বে কিনে নেয়। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ২০১৪ সালের বড়দিনের শপিং সিজনে প্রতিষ্ঠানটি সেভাবে লাভ করতে পারেনি। এ বছরের শুরুতে ই-বে ২০১৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বলায় হয় প্রতিষ্ঠানটি ৪.৯২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ২০১৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের আয়ের তুলনায় এটি ১২% বেশি তবে বিগত বছরগুলোর বড়দিনের শপিং সিজনের আয়ের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি খুবই সামান্য। ঐ রিপোর্টে আরও বলা হয় যে, ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটি ৪.৩৫-৪.৪৫ বিলিয়ন ডলারের মতো আয় করবে যা বাজার বিশেষজ্ঞদেরও বেশ হতাশ করেছে। অনলাইনের তীব্র প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে টিকে থাকতে ই-বে এখন মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। এ কারণে তারা ২৪০০ কর্মী ছাটাইয়ের ঘোষণা দেয়।

ওটো গ্রুপ (Otto Group):

ওটো গ্রুপ একটি জার্মানী প্রতিষ্ঠান। জার্মানী ও ফ্রান্সে এ প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যবসা তবে  বিশ্বের ২০টি দেশে তাদের ব্যবসা রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বৃহত্তম মেইল অর্ডার কোম্পানী এবং ইউরোপের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। ১৯৫০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৫ সাল থেকে তারা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করে। ২০১৩ সালের তুলনায় জার্মানীতে গত বছরে অনলাইনে বিক্রী বেড়েছে ৫৪.৫%। জার্মানীর ই-কমার্স ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন বিইভিএইচ এর ভাষ্যমতে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত অনলাইন বিক্রীতে ১১.৬ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। ই-কমার্সে ভাল অবস্থানে থাকলেও ওটো গ্রুপকে এখন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ২০১৩ সালে অ্যামাজন.কম আয় করে ১০.৫ বিলিয়ন ডলার এবং অটো গ্রুপ ৯ বিলিয়ন ডলার আয় করে দ্বিতীয় অবস্থানে।

আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড (Alibaba Group Holding Ltd.):

চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড এর কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। ১৯৯৯ সালে জ্যাক মা আলিবাবা.কম নামে একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আলিবাবার যাত্রা শুরু হয়। গত বছরে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে আলিবাবার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও ছাড়ে যার থেকে তারা ২৫ বিলিয়ন ডলার মূলধন সংগ্রহ করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। অ্যামাজন এবং ই-বে এর সম্মিলিত ই-কমার্স ব্যবসার চেয়ে আলিবাবার ব্যবসার পরিমাণ আরও বেশি।গতবছরের ডিসেম্বর কোয়ার্টারে প্রতিষ্ঠানটির আয় ৪০% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.২২ বিলিয়ন ডলার।২০১৪ এর সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে আলিবাবার সক্রিয় ক্রেতার সংখ্যা ছিল ৩০৭ মিলিয়ন। ডিসেম্বর ২০১৪ নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩৪ মিলিয়নে। ঐ বছরের নভেম্বরে “সিঙ্গলস ডে” তে একদিনেই প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে পণ্য বিক্রীর মাধ্যমে ৯বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করে।

সিনোভা এন.ভি. (Cnova N.V.)

 

জনপ্রিয় ফ্রেঞ্চ ই-কমার্স ওয়েবসাইট সিডিসকাউন্ট এবং সিনোভা ব্রাজিল মিলিত ভাবে সিনোভা এন.ভি প্রতিষ্ঠা করে। ফ্রান্স, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, থাইল্যাণ্ড, ভিয়েতনাম, আইভরি কোস্ট, সেনেগাল, ক্যামেরুন এবং বেলজিয়ামে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ১কোটি ২৯ লক্ষ সক্রিয়  ব্যবহারকারী। প্রতিষ্ঠানটি ১কোটি ২০ লক্ষের বেশি পণ্য বিক্রী করে থাকে। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি ২ কোটি ৩৬ লক্ষ অর্ডার পায় এবং গত বছরে ৯ মাসে ২ কোটি ৯ লক্ষ অর্ডার প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। ফ্রান্স এবং ব্রাজিলে সিনোভা ইতিমধ্যেই প্রথম স্থানে রয়েছে এবং এর বাজার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০১৩ সালে সিনোভা এন.ভি এর ওয়েবসাইট ৬.৮বিলিয়ন পেজ ভিউ পায় এবং ২০১৪ সালের ৯ মাসে পায় ৫.৩ বিলিয়ন। ২০১৩ সালে ওয়েবসাইটের গড় মাসিক ইউনিক ভিজিটরের সংখ্যা ছিল ৩৯.১ মিলিয়ন এবং ২০১৪ সালের ৬ মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১.৯ মিলিয়নে।

টেস্কো (Tesco)

টেস্কো যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি বহুজাতিক রিটেইল প্রতিষ্ঠান।১৯১৯ সালে জ্যাক কোহেন এ কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিশ্বের ১২টি দেশে এর ব্যবসা রয়েছে এবং যুক্তরাজ্যে এর ৩৩০০ এর বেশি আউটলেট রয়েছে।কিন্তু নানা সমস্যায় প্রতিষ্ঠানটি জর্জরিত। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যে ৪৩টি আউটলেট বন্ধ করে দিয়েছে এবং নতুন আউটলেট খোলার পরিকল্পনাও বাদ দিয়েছে।প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক করে তোলার জন্যে সিইও ডেভ লিউইস বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।

রাকুতেন(Rakuten):

রাকুতেন (www.rakuten.co.jp/)(www.rakuten.com) জাপানের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স ওয়েবসাইট। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটি ভালই ব্যবসা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আয় করেছে ৩৩.২৮ বিলিয়ন ইয়েন এবং বছর জুড়ে লাভ হয়েছে ১০৬ বিলিয়ন ইয়েন। রাকুতেনের ব্যবসার বড় অংশই জাপান-কেন্দ্রিক কিন্তু দেশটিতে জন্মহার কম হবার কারণে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমছে যার ফলে অনলাইনে কেনার পরিমাণও কমছে। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্যে রাকুতেন সাম্প্রতিক কালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের ব্যবসা ছড়িয়ে দেবার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিনে নিচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে রাকুতেন ১ বিলিয়ন ডলার দিয়ে আমেরিকার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ইবেটস কে কিনে নেয়। এ প্রতিষ্ঠানটি খুবই ভাল ব্যবসা করেছে।

বেস্ট বাই (Best Buy Co.)

বেস্ট বাই মূলত একটি রিটেইল আউটলেট যারা শুধু মাত্র ইলেক্ট্রনিক্স ভোগ্য পণ্য- মোবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, ইত্যাদি বিক্রী করে থাকে। গত বছরের বড়দিনের শপিং সিজনে প্রতিষ্ঠানটি ১১.৩৭ বিলিয়ন ডলার আয় করে। মোবাইল ফোন (আইফোন ৬) এবং বড় স্ক্রীনের টিভি সবচেয়ে বেশি বিক্রী হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বিক্রী বাড়াতে হলে এবং প্রতিষ্ঠানকে লাভবান রাখতে হলে অনলাইনে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু বেস্ট বাই এর দোকান গুলো এই প্রতিষ্ঠানটির একটি শক্তিশালী দিক। কোন ক্রেতা চাইলে বেস্ট বাই থেকে অনলাইনে পণ্য কিনে তাদের নিকটস্থ বেস্ট বাই আউটলেট থেকে পরে নিয়ে নিতে পারে।

Source:

www.bbc.com/news/business-31051044

www.bbc.com/news/business-30283138

www.usatoday.com/story/tech/2014/12/01/robots-amazon-kiva-fulfillment-centers-cyber-monday/19725229/

http://time.com/3605924/amazon-robots/

www.fool.com/investing/general/2014/11/24/wal-mart-extends-black-friday-for-5-days.aspx

http://business.financialpost.com/2015/01/21/ebay-inc-cuts-2400-jobs-as-it-considers-sale-or-ipo/?__lsa=f1c7-60df

www.businesswire.com/news/home/20150121006398/en/eBay-Reports-Fourth-Quarter-Full-Year-Results#.VORff_mUctQ

www.forbes.com/sites/adamtanner/2014/03/05/amazons-war-on-germanys-18-billion-patriarch/

www.reuters.com/article/2014/01/30/us-retail-germany-online-idUSBREA0T13920140130

http://bangla.bdnews24.com/business/article856237.bdnews

http://business.financialpost.com/2015/01/29/alibaba-group-holding-ltd-shares-take-beating-after-revenue-disappoints/?__lsa=f1c7-60df

www.theguardian.com/business/2015/jan/08/tesco-chief-unveils-dramatic-shake-up-troubled-supermarket

www.bbc.com/news/business-30712762

www.reuters.com/article/2015/02/12/rakuten-results-idUSL4N0VM37920150212

http://asia.nikkei.com/Japan-Update/Rakuten-lifted-domestic-e-commerce-sales-14-in-2014

http://techcrunch.com/2014/09/09/rakuten-buys-ebates-for-1-billion/

www.reuters.com/article/2015/01/15/us-best-buy-results-idUSKBN0KO19420150115

www.zdnet.com/article/best-buy-well-need-to-step-up-e-commerce-amid-sales-slump-ahead/

www.nytimes.com/2015/01/16/business/best-buy-outlook-overshadows-holiday-sales-gains.html

লেখকঃ https://www.facebook.com/smmehdi.hassan

25,811 total views, 5 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.