ই কমার্স : ব্যবসায়ে লোকসান ঠেকানোর ১৫টি উপায় ও ২টি গোপন কথা
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
365
লাভের মতো লোকসানও ব্যবসায়ের সা¦াভাবিক একটা বিষয় কিন্তু কোন ব্যবসায়ী লোকসানের জন্য ব্যবসা করেন না। ব্যবসা করেন লাভের জন্য। তবু কখনো কখনো লোকসান হয়ে যায়। আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এসব লোকসানে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হন। এমনকি কেউ কেউ পেশা পরিবর্তণ করতে বাধ্য হন। একজন ব্যবসায়ী ব্যবসায়ে ক্ষতি হলে এতে যে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হন ,ুশুধু তা নয় তিনি পারিবারিক সমাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে থাকেন। এবং সবচে বড় কথা হলো অনেক ক্ষেত্রে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস ও পেশার প্রতি ভরসা হারিয় পেলেন। এটা পরবর্তীতে উদ্যোক্তার জীবন ও কাজে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। কোনো কোনো নির্দিস্ট ব্যবসায়িক সেক্টরে পর পর একাধিক লোকসানের ঘটনা ঘটলে পরো ব্যবসায়িক সেক্টরে হাতাশা নেমে আসে। এরং এর নিতিবাচক প্রভাবে ব্যবসায়িকখাত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তখন এর সাথে জড়িত বিশাল একটা গোষ্টির জীবন যাপন হোচট খেয়ে যায়।

বর্তমান বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ই কমার্সখাতে প্রতিদিন নতুন নতুন উদ্যোক্তা যুক্ত হচ্ছে। ব্যবসায়টি কমপুজিতে করা যায় বিধায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এতে উৎসাহিত হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসা না বুঝে হঠাৎ করে শুরু করার কারণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আবার অনেকে টিকে থাকলেও উঠে দাড়াতে পারছেন না। কিন্তু কিছু লোক ঠিকই সফল হচ্ছেন ফলে এই সেক্টর দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। আসুন ই কমার্স ব্যসায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসায়ে লোকসানের বিষয়টা কিভাবে মোকাবিলা করবেন এ বিষয়ে আমরা কয়েকটি বিষয় শেয়ার করি।

০১: জেনে শুনে শুরু করুন:
যেকোনো ব্যবসায় জেনে শুনে শুরু করতে হয়। এ ব্যাপারে গাফিলতি করা এক ধরনের পাপ। আমাদের দেশে সাধারণত এ ধরনের প্রবণতা রয়েছে। আমরা ১০ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ যাই ১০ হাজার টাকা খরচ করে কোনো কাজ শিখিনা। আমরা ২০ লাখ টাকা খরচ করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান শুরু করি কিন্তু ২০ হাজার টাকা খরচ করে সে ব্যবসায়ের খুটিনাটি জানতে চাইনা। এজন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আপনি ব্যবসাটা বা পন্যটা বা সেবাটা সম্পর্কে যত জানবেন তত অন্যের উপর নির্ভরশীলতা কমবে এবং আপনি সঠিক সিদ্ধন্ত নিতে পারবেন। সাধারণত যারা বিভিন্ন ওয়ার্কশপে চাকরী করে তারা এ ব্যবসায়ে  সফল হয়। হোটেল ও টেইলারিং ব্যবসায়ের বেলায়ও প্রযোজ্য। এটা সত্যি হয়েছিলো গার্মেন্টস ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও। এবং আপনি অবশ্যই কম ঝুকিযুক্ত পন্য বা ব্যবসা বেচে নেবেন।

০২: আপনার থাকবে ভালো পরিকল্পনা:
একটি ভালো, সঠিক, সহজ, বাস্তবমূখী পরিকল্পনা একটা ব্যবসায়ের প্রাণ। তাই ব্যবসায়ের শুরুতে আপনি পরিকল্পনা করুন। আপনি কি করেবেন? কেন করবেন? কিভাবে করবেন? এবং কাদের জন্য করবেন। এই প্রশ্নের জবাব খুজে আপনি প্রথম দফা উতরে যান। দ্বিতীয় দফায় আপনি দেখুন যে আপনার পন্যের চাহিদা আছে কিনা? কত টাকা বিনেয়াগ করা যাবে? কত করে লাভ হতে পারে? পুজি উঠতে কতদিন সময় লাগতে পারে?  ইত্যকার নসব বিষয় ভেবে তবে পারিকল্পনা করুন,  ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং ইত্যাদি কাজে তেমন খরচ হতে পারে। সেটা মেটা খরচের কত শতাংশ এবং ইউনিট প্রাইচে কত পড়ে এতে করে আপনি  ক্ষতির সম্মক্ষিন হবেন কিনা ? আগেই বোঝার চেস্টা করুন। আপনার পরিকল্পনার অবশ্যই কয়েকটি ধাপ থাকবে। ধাপে ধাপে কাজ বরবেন। সব টাকা একসাথে বিনিয়োগ না করে সেটাও পর্যায়ক্রেেম করতে পারেন।

০৩:  লোকসান পুজির অংশ
অনেকসময় নতুন ব্যবসায়ীরা বাজার দখল করার জন্য ইচ্ছাকৃত লোকসান দিয়ে থাকেন। কমদামে পন্য বিক্রয় করে এটাকে মার্কেটিং খরচ হিসেবে ধরে থাকেন। ফলে লোকসানটা বিনিয়োগকৃত পূজির অংশ হয়ে তাকে। সেক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই মনে রাখতে হবে সময়ের হিসেবে আপনি এই ভুর্তকি কতদিন চালাতে পারবেন? এবং টাকার মূল্যে আপনি এটা কত অংক পর্যন্ত বহন করতে পারবেন? এমনকি কত ইউনিট পন্যের জন্য এটা প্রয়োজ্য হবে?  লোকসানের সঠিক পরিকল্পনা থাকলে আপনি লোকসান থেকেও ফায়দা তুলতে পারেন। আর একজন প্রকৃত ব্যবসায়ী তিনি হবেন যিনি লোকসান থেকেও লাভবান হওয়ার রাস্তাটা জানেন।

০৪: সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত
এটি ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। কারণ আপনি বাজার যাচাই করে দেখলেন, ১৬ জিবি পেনড্রাইভে ৪০ টাকা দাম কমিয়ে দিলে বিশাল একটা সাড়া আসতে পারে। কিন্তু আপনি সে সিদ্দান্ত নিতে ২০ দিন চলে গিয়েছে এর মধ্যে বাজার ৩২ জিবির পেনড্রাইভ চলে এসেছে ১৬ জিবির চেয়ে মাত্র ১০০ বেশী টাকা দামে। এখন দেখা যাচ্ছে ১৬ জিবির দাম ১১০ টাকা কমালেও কাজ হবে কিনা সন্দেহ। আরেকটি বিষয় হলো, আপনি কখনো যদি সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তো সেটা ভুল হলে আপনি সংশোধন করতে পারবেন। কিন্তু দেখা গেল আপনি এমন সময় একটি সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা আর পরিবর্তণ করার সময় নেই, অথচ সিদ্ধন্তটি সঠিক হয়নি।

০৫: লাভ লোকসানের হিসাব
আপনি আগেই হিসাব করে রাখবেন কতটাকা লাভ বা লোকসান হতে পারে। যদি ২০ হাজার টাকা লোকসান হয় তাহলে আপনার পলিসি কি হবে। আপনি কিভাবে ঘুরে দাড়াবেন বা ২০ হাজার টাকার মেকআপ পলিসি কি হবে। এসব আপনাকে আগেই ভেবে রাখতে হবে। একেবারে কাগজে কলমে হিসেব করে রেখে দিতে হবে। লোকসান এর ব্যাপারে একটা প্রস্তুতি থাকতে হবে যাতে করে সামন্য কয়টাকা লোকসানের জন্য আপনার মেজাজ বিগড়ে না যায় আর আপনি খেই হারিয়ে না পেলেন।  ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে মাথা ঠান্ডা েেরখে কাজ করার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে। আর প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি লেনদেনে কথানো লাভ হয়না। লাভ হয়  বছর শেষে। লাভটাকে সেভাবে হিসেব করুন। ব্যবসায়ের গতি থাকলে আপনি মাসিব লাভ লোকসানের একটা পর্যালোচনা করতে পারেন। যেহতেু আপনি সক বিভিন্ন পেমন্ট দিয়ে থাকেন। অধবা প্রতি ৬ মাসে। তবে লাভ লোকসানের বার্ষিক হিসেব এবং সেটা আর্থিক বছর ধরে করাটাই সর্বত্র চলে। এজন্য আপনাকে অনেক সময় বৃহৎ লাভের আশায় ক্ষুদ্র লাভ ছেড়ে দিতে হতে পারে।

০৬: রিস্ক ফান্ড:
ব্যবসায়িক ক্ষতি রিকভার করার জন্য আপনি রিস্ক ফান্ড রেখে দিতে পারেন। ধরি আপনি ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যবসায়ে নেমেছেন। এখানে আপনার উচিৎ হবে ২০/২৫ হাজার টাকা রিস্ক ফান্ড হিসেবে আলাদা রেখে দিতে পারেন। তাহলে বিপদের সময় আপনি সেটাকা খরচ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। এটা অনেক উপকারে আসে। যেমন ধরুন আপনি অনেক পন্য শপে তুলেছেন খুব ভালো চলছেনা। এমুহুর্তে আপনি জানলেন যে একটা নতুনপন্য এসেছে এটা প্রথম প্রথম তুললে ভালো সাড়া আসবে। তখন আপনার সে ফান্ডকে আপনি কাজে লাগাতে পারবেন। সাময়িক লোবসানের হাত থেকে হয়তোবা বেচে যেতে পারেন।

০৭: এভারেজ দাম এভারেজ লাভ:
রিস্ক ফান্ডের মতো রিস্ক রেট পলিসিও আপনি নিতে পারেন। এতে করে সাম্ভাব্য ক্ষতি বা লোকসানের ব্যাপারে আপনি আগেই সতর্ক হয়ে গেলেন।  যেমমন আপনি ১৪৪টি মাইক্রোওভেন আনলেন। আপনি জানেন যে শতকরা ১০ভাগ ওভেন নস্ট হয় বা নস্ট থাকে। তখন আপনি যদি প্রতিটি ওভেন ৫০০০ টাকা করে কিনে থাকেন। তাহলে ১৪৪ টির দাম হবে ৭২০,০০০ টাকা। এখন আপনি মূল্য নিধারণ করুন ১৩০টি পন্যের উপর। ৭২০,০০০কে ১৩০ দিয়ে ভাগ করে আপনি দেখনি প্রতিটিতে আপনার ক্রয়মূল্য কত পড়ে। তবে এক্ষেত্রে মার্কেট প্রাইসের সাথে সমাঞ্জস্য রাখার বিষয়টিও ভুলে যাবেন না।

০৭: অন্যের সাহায্য নেয়া:
দেখা গেল আপনি চায়না থেকে কোনো একটি পন্য ১০০০ পিস এনেছেন। এখন পন্যটি শীত এসে গেলে আর চলবেনা। গরম থাকতে একে সেল করতে হবে। কিন্তু আপনার শপ থেকে যেভাবে দৈনিক ২/৩টা সেল হচ্ছে এভাবে বিক্রি হলে মাল সময় মতো বেচা হবেনা। এতে যে টাকা অলস পড়ে থাকবে শুধু তাই নয় বরং মাল নস্ট হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় আপনি পরিচিতদের শপে একটা দাম ধরে ১০/২০/৩০ কপি করে বিক্রি করতে দিতে পারেন। দামটা  এমনবাবে ধররেন যেন আপনার চেয়ে কম দামে বিক্রি করার সুযোগ না থাকে। এভাবে আপনি সাম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে পারেন।

০৮: মিতব্যয়িতা
ব্যবসায়ের লোকসান ঠেকাবার আদি এবং কার্যকর পদ্ধতি হলো মিতব্যয়িতা। আপনার ব্যবসা এবং লাভ কিন্তু একটা মার্জিনের বেশী কথনোই হবেনা। আপনার লাভ পুজি, পন্য, বিক্রয়, দাম ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল এবং সেটা একটা রেঞ্জ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। সূতরাং আপনি যদি হিসেবি হোন। খরচের হাতটা একটু সমঝে নিতে পারেন। আশা করা যায় আপনার লোকসানের ঝুঁকিটা কমে যাবে। এজন্য আপনি বাড়তি খরচ পরিহার করুন। পানি বিদ্যুত ও গ্যাস ব্যবহারে মিতবযী হোন। যদি ফার্মে অনেক কর্মী থাকে তাদেরকেও এই অভ্যাসে নিয়ে আসুন। এবং অহেতুক পরিহার করনু। লাভ হওয়ার সন্দেহ আছে এরকম খাতে বিনিয়োগ করার আগে তিনবার ভাবুন।

০৯: কাজও পরিশ্রম: আপনি নিজে কাজগুলো বুঝবেন পরিশ্রম করবেন, অন্যের উপর ভরসা না করে নিজে সময়মত কাজ করবেন বা কাজ আদায় করে নেবেন। এতে আপনার ব্যবসায়ের ক্ষতি কমে আসবে। আপনি যদি একজন কর্মচারী কম রাখতে পারেন। সেটা একটা লাভ। আপনি যদি নিজে কোন কাজ করতে পারেন সেটা একটা সুবিধা। একটা কথা আামি বলে থাকি যে আপনাকে হয়তো নিজ কাজটা করতে জানতে হবে অথবা কাউকে দিয়ে করাতে জানতে হবে। আর যদি দুটোর একটাও না পারেন। তাহলে আপনার ব্যবসা করার দরকার নাই। আপনি বরং অন্যের কাজ করেন। তবে এর অর্থ এই নয় যে প্রয়োজন সত্বেও আপনি কোনো লোক না েিনয় নিজে নিজে সব করবেন।

১০. সময়ানুবর্তিতা সময়ের ব্যাপারে কাজের সাথে সম্বন্বয় করতে হবে। কারণ আপনার মাস শেষে ঘরভাড়া, বেতন বিল কিছু খরচ দিতেই হবে তাই আপনার জন্য কাজ কম হয় বা বিক্রি বেশী না হয় তাহলে গড়পড়তা আপনার খরচ বেড়ে  যাবে। খরচ বেড়ে যাওয়া মানেই লাভ কমে যাওয়া এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ সময় হলো অর্থ। কেননা আপনি হয়তো ব্যাংক থেকে ১০ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছেন। এখন আপনাকে এজন্য বছরে ১২% সূদ দিতে হবে। আপনার খরচ মিলিয়ে বছরে আরো ৫ লাখ টাকা খরচ আছে । এখন আপনি একটি পন্য কিনলেন লাভ করলেন ৫০ শতাংশ লাভ হবে। আপনি হয়তো লোনের ৫০% মানে ৫ লাখ টাকা দিয়েই পন্য কিনতে পারলেন বাকী টাকা অফিস সেটআপ অন্যান্য কাজে খরচ হলো। আপনি খুশি হলেন যে আপনার ৫০% মানে ২লাখ ৫০ হাজার লাভ হবে। কিন্তু দেখেন হিসেবটা ভুল। কারণ আপনার বছরে খরচ আছে ৫ লাখ। আর যদি আপনার পন্য বেচতে ২ বছর লেগে যায় তাহলে তো একেবাবের বুকে মাটি লেগে যাবে। হ্যাঁ আপনার ১০% লাভেও অনেক কিছু হতে পারে যদি আপনি টাকাটা মাসে ২বার রোলিং করতে পারেন। বুঝিয়ে বলি আপনি এমনভাবে পন্য কিনলেন যাতে ২ সপ্তাহে পন্য বিক্রি হয়ে যায়। তাহলে প্রতি মাসে আপনার লাভ হবে ২০% । মাসে ২০ শতাংশ হলে বছরে ২৪০% । এখন আপনার ৫ লক্ষ টাকার পন্যে বছর শেষে ১২ লাখ টাকা লাভ হলো। এটা কিন্তু পুরোটা ্আপনার লাভ নয়।বার্ষিক খরচ রয়েছে। রয়েছে পুঁজি।

১১.    বেচতে নয় কিনতে লাভ:
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে একটি কথা প্রচলিত আছে- ব্যসায়ে নাকি বিক্রি করার সময় লাভ করা যায়না, লাভ করতে হয় ক্রয় করার সময় ।  আসলে তাই:  কারণ একটি পন্যের মার্কেটে একটি প্রচলিত বা আকাংিখত দাম রয়েছে,  আপনি যদি সে দামের চেয়ে বেশী বিক্রি করতে চান, সেটা বিক্রি হবেনা। আর বিক্রি না হলে লাভের প্রশ্ন আসছেনা। তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে আপনার প্রতিদ্বন্ধির চেয়ে কম দামে কিনতে। আপনি যদি ইউনিট প্রতি ১০ টাকা কমদামে ক্যালকুলেটর কেনেন। আপনি মার্কেট প্রাইসে বিক্রি করতে গেলে আপনার প্রতিটিতে ১০ টাকা বেশী লাভ হবে। অথবা আপনি যদি বিক্রি করার সময় ১০টা কমদামে বিক্রি করেন আপনার কোন ক্ষতি হবেনা। বরং কম দামের কারণে আপনার বিক্রি আরেকটু বাড়তে পারে।

১২.     বিশেষ প্রমোশন:
যে পন্যটি সিজনাল সেটা আপনি বিশেষ প্রমোশনে বিক্রি করতে পারেন। মনে করেন আপনি একটি ফ্যান চীন থেকে এনেছেন। মোট সংখ্যা ৩০ হাজার এটা আপনাকে এপ্রিল থেকে আগষ্ট মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।  এর অর্থ এই নয় যে আপনি প্রতিমাসে ১০০০ কপি করে বিক্রি করলে হবে। কারণ এপ্রিল এবং মে এর পর এটা আর তেমন একটা বিক্রি হবেনা। সেজন্য আপনাকে প্রথমে এপ্রিলের ২ সপ্তাহের জন্য এর দাম দিয়ে অফার দিতে হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে যদি ৫০% বিক্রি না হয় আপনাকে এর দাম কমাতে হবে। এবং যদি এপ্রিলের মধ্যে এর ৭৫% বিক্রি না হয় আপনাকে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে হলেও মে ৫ তারিখরে মধ্যে  অন্তত ৯০ % পন্য সেল করার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৫. গ্রুপ সেল:
আপনি জানেন যে পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্রতিটি পন্যের উপর কম লাভ করে থাকে। কিন্তু তাদের ব্যবসা খুচরা ব্যবসায়ীদের থেকে বেশী হয়। কারণ তারা অনেক বেশী পরিমানে সেল করে থাকেন। এক একজন ব্যবসায় তাদের কাছ তেকে বেশী পরিমানে পন্য কিনেন বলে তাদের প্রমোশন ও ম্যানেজমেন্ট খরচও মাথাপিছু হারে কমে যায়। একই কারণে তাদের পন্য রোলিং বেশী হয়। দেখা যায় যে তোদের পন্য একমাসের বেশী স্টকে থাকেনা। ফলে তারা ৫%ঁ হারে লাভ করলেও তাদের টানজেকশান বেশী হয় বলে সমস্যা হয়না।  তাই গ্রুপ সেল করার চেষ্টা করবেন। একই ঠিকানায় একই অর্ডারে কেউ যদি ১০/২০ ইউনিট অর্ডার করে তার জন্য দামটা কিময়ে দিন। আপনার প্যাকিং খরচ, হ্যাসেল, টেনশান অনেকটাই কমে যাবে।

আসুন লাভ যেমন ব্যবসায়ের লোকসানও তাই। তাই বলে লোকসান হওয়ার কোনো রাস্তাই খোলা রাখ্ াঠিক নয়। সেজন্য লোকসান ঠেকানোর গোপন ২টি কথা জেনে নিই।

warren-buffett

প্রথম কথা: এমন কোন কাজ করবেন না, সিদ্ধান্ত, নেবেন না, পন্য কিনবেন না, খরচ করবেন না, ভুল করবেন না যাতে ব্যবসায়ের লোকসান হকে পারে।
দ্বিতীয় কথা: কোনো সময়, কোনো অবস্থায়, কোনো কারণে, কারো জন্যে, কোনো পরিস্থিতিতে প্রথম কথাটা পয়েন্ট টা ভুলে যাবেন না।

11,315 total views, 4 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.