ই-কমার্স ও বাংলাদেশ

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সভায় ই-ক্যাব সদস্যদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবীর একাংশ

১।  যে সকল প্রতিষ্ঠান অনলাইন ভিত্তিক  (ওয়েবসাইট ভিত্তিক সেবা) সেবা প্রদান করছে  সে সকল প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন সার্ভার পেমেন্ট, ইন্টারনেট সেবাসহ আনুষঙ্গিক খরচের উপর ভ্যাট এবং আয়কর মওকুফ করা। এখানে উল্লেখ্য যে অনলাইন সার্ভার পেমেন্ট বা ক্লাউড হোস্টিং এর পেমেন্টের বিপরীতে আয়কর বাবদ অতিরিক্ত ২০% এবং মূসক বাবদ অতিরিক্ত ৫% পেমেন্ট দিতে হয়।

২। যেহেতু অনলাইন শপ বা ই-কমার্স পুরোপুরি ওয়েবসাইট ভিত্তিক সেবা, কাজেই এই সেবাটিকে  আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর সিক্সথ সিডিউল পার্ট এ প্যারাগ্রাফ ৩৩ তে অন্তর্ভূক্ত করা।

৩। অনলাইন ফার্মেসীগুলো ঔষধ তৈরিকারক ও হোলসেলার কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় করে তা সরবরাহ করে থাকে। ক্রয়কৃত পণ্য ভ্যাট দিয়ে ক্রয় করা হয় ও গ্রামেন্টস ও কর্পোরেটে প্রয়োজনীয় ঔষধ পণ্য সরবরাহে ২% AIT কর্তন করা হয় যাতে এ ধরনের সেবাদানকারীগণ নিরুৎসাহিত হয়। কারণ ঔষধ সরবরাহে  লভ্যাংশ ৫-৭%  এর বেশী পাওয়া যায়না। তাই  মোট মুলের উপর ২% উপর AIT ঔষধ ও স্বাস্থ্য পণ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি চাপ হয়ে যায়। করোনাকালীন সময়ে জীবন ঝুকিমুক্ত রাখতে ঔষধ ও স্বাস্থ্যপণ্যে  AIT মওকুপ প্রয়োজন। এছাড়া মতে ঔষধ ডেলিভারি চার্জ এর উপর ১৫% হারে ভ্যাট ধার্য আছে। জীবন ঝুকি মুক্ত ও বাঁচানো সকল পন্নে VAT/AIT সম্পূর্ণ মউকুফের জোর দাবি জানাচ্ছি ।

৪। ডেলিভারির জন্য ব্যাবহারিত মোটর জান ও মোটর ভ্যান ক্রয়ে ট্যাক্স মউকুফের বিধানে এই খাতকে গতিশীল করবে ।

৫। ই-কমার্স বিষয়ক আলাদা ভ্যাট/ট্যাক্স পরামর্শক সেল বা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট/ তথ্য ভান্ডার চালু করা যা উদ্যোক্তাকে কর পরিশোধে উৎসাহিত করবে । কেননা বর্তমান প্রায় সকল ভ্যাট/ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ এই বিশেষ শিল্পটি বুঝে না এবং সেই অনুযায়ী পরামর্শ পাওয়া যায় না।

৬। ফুড ডেলিভারী সার্ভিস বা এফডিএস বিশেষ করে রেস্তোরার ও বাসাবাড়ির রান্না করা খাবার ডেলিভারীর ক্ষেত্রে চার্জ এর উপর ১৫% ভ্যাট এর পরিবর্তে ৫% করা যুক্তিযুক্ত হবে।

৭। যেসব প্রতিষ্ঠান শুধু নিজেদের পণ্য বিক্রি করে তা ডেলিভারী করে। তারা ডেলিভারী সেবার উপর ব্যবসা বা লাভ করেনা। তাদের ক্ষেত্রে ডেলিভারী চার্জের উপর ভ্যাট রহিত করা উচিৎ হবে।

৮। ফেসবুক এড বা বিদেশী মাধ্যম ব্যবহার করে পেমেন্ট দেয়ার ক্ষেত্রে ১৫% করে দুইবার ভ্যাট আদায় করা হয়। যা অযৌক্তিক এবং এতেকরে প্রতিষ্ঠানের বিপনন খরচ বেড়ে যায় যা পণ্যমূল্যের উপর প্রভাব ফেলে।

(বিভিন্ন বছরের বাজেট প্রস্তাবে আরো দাবীগুলো উল্লেখ করা হয়েছে

উপরোক্ত বিষয়য়ে ই-ক্যাবের অবস্থান

১) ভ্যাট ও ট্যাক্স এর বিষয়ে ই-ক্যাব সরকার ও সরকারী দপ্তরকে সহযোগিতা করতে চায়।

২) ই-কমার্স সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয় যেমন ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য বিষয়ে দ্রুত সমাধানে ই-ক্যাব সরকার এবং সরকারী দপ্তরের সহযোগিতা চা।

৩। ই-ক্যাবের সদস্য ব্যবসায়ীরা বেশীরভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাই তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্স সম্পর্কে জানাতে আলাদা আলাদা সেমিনার আয়োজনের প্রস্তাব করছি। যা জুম অনলাইনে হতে পারে। অভিজ্ঞ ভ্যাট ট্যাক্স কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের জবাব দেবেন।

৪। ই-কমার্স এর ব্যবসা ও পেমেন্ট পদ্ধতির বিস্তারিত সম্পর্কে অনেক সরকারী কর্মকর্তাদের  অবহিত করতে একটি অরিন্টেশান প্রোগ্রাম এর প্রস্তাব করছি। যাতে ই-কমার্স সম্পর্কে অভিজ্ঞরা ও বিভিন্ন অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা ই-কমার্সের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন।

৫। ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে ভ্যাট ট্যাক্স আদায়ের ক্ষেত্রে সহজ কোনো উপায় বের করতে ই-ক্যাব এনবিআর এর সাথে একযোগে কাজ করতে চায়। এবং ই-ক্যাবের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করার ব্যাপারে একটি সুন্দর ও ঝামেলাহীন উপায়ে কাজ করতে সহযোগিতা করতে চায়।

৬। যেসব ব্যক্তি একই সাথে কোনো চাকরী বা ব্যবসার পাশাপাশি লেখালেখি করে আয় করেন। তাদের করমূক্ত আয়সীমা বর্ধিত করা উচিৎ। এই সমস্ত ব্যক্তিবর্গ নিজেরা চাকরী ও ব্যবসার পাশাপাশি বাড়তি সময় ও পরিশ্রম দিয়ে বই লিখে থাকেন। উক্ত বই লেখা থেকে বিক্রিত আয়। করমূক্ত মোট আয়ের সাথে যুক্ত করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ তারা একদিকে সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকে। অন্যদিকে এটা তাদের বাড়তি পরিশ্রম। কারণ একটি বই লিখার জন্য প্রচুর পড়াশোনা ও গবেষণা করতে হয়।

৭। ই-কমার্স খাতে রাজস্ব আদায়ের জটিলতা নিরসনে এনবিআর ও ই-ক্যাব এর একটি যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করছে ই-ক্যাব।

1,449 total views, 3 views today

Comments

comments