ডিএনসিসি িডিজিটাল হাট

প্রশ্নোত্তরে ডিজিটাল হাট

ক. কোরবানির পশু পছন্দ ও ক্রয় বিক্রয়
খ. কোরবানির পশু জবেহ, মাংস ও অন্যান্য অংশ ডেলিভারি

ক: কোরবানির পশু পছন্দ ও ক্রয় বিক্রয়

১. কিভাবে অনলাইনে পশু ক্রয় করা যায়?
উত্তর: ডিজিটাল হাটে যেসব অনলাইন শপ সংযুক্ত রয়েছে। সেসব হাট থেকে সাধারণ নিয়মে পশু পছন্দ করে অনলাইনে পেমেন্ট দিয়ে কুরবানির পশু ক্রয় করা যাবে।

২. ছবি দেখে কিভাবে পশু পছন্দ করব? অথবা কিভাবে বুঝব যে এটা ঠিকদাম হচ্ছে?
উত্তর: বাস্তবে যেমন সাইজ দেখে এবং ওজন আন্দাজ করে গরু কেনা হয়। তেমনি অনলাইন শপেও গরুর জাতের পাশাপাশি গরুর সাইজ ও ওজন লেখা থাকবে। তা থেকে সহজে ধারণা করা যাবে যে, গরুটির সঠিক দাম রয়েছে কিনা? কিছু গরুর আনুমানিক ওজন থাকবে কিছু গরুর ওজন ডিজিটাল স্কেলে মাপা থাকবে। যারা গরু বিক্রি করবেন তাদেরকে দাম সম্পর্কে একটা নির্দেশনা দেয়া আছে যেমন,
বিক্রেতাগণ জীবন্ত পশুর দুই ধরনের ওজনের যেকোনো একটি উল্লেখ করবেন। প্রথমত, মাপকৃত ওজন যা ডিজিটাল স্কেল অনুসারে বিগত ১ মাসের মধ্যে নেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত আনুমানিক ওজন যা অন্য কোনোভাবে নেয়া হয়েছে। জীবন্ত পশুর ওজনের উপর ভিত্তি করে বিক্রেতা বা দ্বিতীয়পক্ষ নিজেই দাম নির্ধারণ করবেন তবে তা ৪০০ কেজী ওজনের গরুর জন্য কেজিপ্রতি ৩৭৫ টাকার বেশী হবেনা। ৪০১ থেকে ৫০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য কেজিপ্রতি ৪২৫ টাকার বেশী হবেনা এবং ৫০০ কেজি থেকে উধ্ব ওজনের গরুর জন্য কেজিপ্রতি ৪৭৫ টাকার বেশী হবেনা।

৩. কুরবানির ক্ষেত্রে গরুর বয়স হওয়া যেমন জরুরী তেমনি গরু নিঁখুত হওয়াও প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বিষয়গুলো কিভাবে নিশ্চিত করা হবে?
উত্তর: অনলাইন শপে বিক্রিত বেশীরভাগ গরু লাইভস্টক অফিসার কতৃক বয়স ও সু-স্বাস্থ্য সনদপ্রাপ্ত হবে। তাই সার্টিফিকেট দেখে গরু বাছাই করলে গরুতে কোনো সমস্যা থাকার বিষয়টা সমাধান হয়ে যাবে। গরুর বিবরণে গরুর কয়টি দাঁত পরিপক্ক হয়েছে সেটাও উল্লেখ করা থাকে। তাই সহজে গরু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। এছাড়া যেসব গরু স্লটারিং হাউজে যাবে। সেগুলো রিসিভ করার সময় আরো একবার স্বাস্থ্য ও ওজন পরীক্ষা করা হবে।

৪. একজন ক্রেতা কিভাবে গরুর মূল্য শোধ করবেন?
উত্তর: ক্রেতা গরুর ঘোষিত মূল্য দেখে তা শোধ করে দেবেন। এটা তিনি ভিসাকার্ড, মাস্টারকার্ড, বা এমেক্স কার্ড এর মাধ্যমে পরিশোধ করবেন। কেউ চাইলে ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করেও মূল্য শোধ করতে পারেন। এছাড়া রয়েছে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা। এখানে অনলাইন পেমেন্ট চার্জ এড হলেও হাসিল দিতে হবেনা বলে অনলাইন চার্জ ক্রেতার জন্য বাড়তি কোনো চাপ হবেনা।

৫. একজন বিক্রেতা কিভাবে গরুর মূল্য বুঝে পাবেন?
উত্তর: গরু অনলাইনে বিক্রয় হলে ক্রেতার কাছ থেকে পুরো মূল্য গ্রহণ করা হবে অথবা ২৫% বুকিং মূল্য গ্রহণ করা হবে। যেসব ক্রেতা শুধুমাত্র বুকিংমানি দেবেন তাদের পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে বাকী ৮০% টাকা দিয়ে গরুটি ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। ২৫% বুকিং মানি পেলে বুকিং মানির বিক্রেতাকে পুরোটাই পরিশোধ করে গরুটি ক্রয় নিশ্চিত করা হবে। এবং ক্রেতা থেকে পুরো টাকা পেলে মোট দামের ৮০ ভাগ মূল্য বিক্রেতাকে পরিশোধ করা হবে। বাকী ২০০ ভাগ মূল্য গরু ডেলিভারী দেয়ার পরে কোনো সমস্যা না থাকলে বিক্রেতাকে পরিশোধ করা হবে। বাসায় গরু ডেলিভারী দেয়ার ক্ষেত্রে ক্রেতার কাছ থেকে একটি মেসেজ ই-ক্যাব অপারেশন টিমের কাছে পাঠিয়ে ক্রেতার গরু প্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন বিক্রেতা বা মার্চেন্ট বা ভেন্ডর বা এনটিটি। প্রয়োজনে কলসেন্টার ক্রেতার সাথে কথা বলে যাচাই করে নিবে।

৬. ক্রেতা যদি কোনো কারণে অর্ডার ক্যানসেল করেন বা মত পরিবর্তন করেন তখন কি হবে?
উত্তর: সেক্ষেত্রে ক্রেতার পরিশোধিত মূল্য থেকে ২৫% কেটে রেখে বাকী টাকা ফেরত দেয়া হবে। এবং এখান থেকে ১৫% শতাংশ বিক্রেতাকে প্রদান করা হবে যদি ডেলিভারী দেয়ার পর ফেরত আসে। আর যদি ডেলিভারী দেয়ার আগেই ক্রেতা অর্ডার ক্যানসেল করেন সেক্ষেত্রে বিক্রেতাকে ১০% ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। বাকী অর্থ ডিজিটাল হাট কতৃপক্ষ সেবাপ্রদান সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ হিসেবে গ্রহণ করবে।

৭. বিক্রেতা যদি অর্থ পাওয়ার পর গরু অন্যত্র বিক্রি করেন বা গরু সম্পর্কে ভুল তথ্য দেন বা গরু বিক্রি করার ব্যাপারে মত পরিবর্তন করেন সেক্ষেত্রে কি হবে?
উত্তর: বিক্রেতার ব্যাপারে সমস্ত দায়-দায়িত্ব মার্চেন্টকে নিতে হবে। তবে ক্রেতাকে কোনো রকম চার্জ কর্তন ব্যতিরেকে টাকা ফেরত দিতে হবে। অথবা সমমূল্যের অন্য একটি গরুর ব্যবস্থা করবে যদি ক্রেতা সেটি গ্রহণ করতে সম্মত থাকে।

৮. বিক্রিত গরু কিভাবে ডেলিভারী দেয়া হবে?
উত্তর: বিক্রিত গরু ক্রেতার ঠিকানায় অথবা স্লটারিং হাউজে পৌঁছানোর দায়িত্ব বিক্রেতার উপর বর্তাবে এজন্য প্রয়োজনে ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস কতৃপক্ষ কোনো লজিস্টিক কোম্পানীকে দায়িত্বটি দিতে পারবে।

৯. অনলাইনে গরু কিনলে বাড়তি খরচ দিতে হবে কিনা? অনলাইন গরুর হাসিল কত হবে?
উত্তর: ডিজিটাল হাট থেকে গরু কেনার জন্য বাড়তি কোনো কমিশন দিতে হবে না। অনলাইন পেমেন্টে যে ব্যাংক চার্জ হয় সেটা প্রযোজ্য হবে। কেউ ‘‘নগদ’’ এর মাধ্যমে পেমেন্ট দিলে তা মাত্র ১%। যেহেতু অনলাইন শপ সেজন্য এখানে হাসিল প্রযোজ্য হবে না। তাই পেমেন্ট চার্জ দিলেও তা হাসিলের চেয়ে বেশী হবেনা।

১০. যদি একজেলার গরু আরেক জেলার ক্রেতা ক্রয় করে সেক্ষেত্রে কি হবে? পথে গরুর ক্ষয়ক্ষতি হলে সে দায়বার কে বহন করবে?
যদি একজেলার গরু আরেক জেলার ক্রেতা ক্রয় করেন সেক্ষেত্রে পরিবহনের বা ডেলিভারীর দায়িত্ব বিক্রেতাকে গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে পথে গরুর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায়ভার বিক্রেতা অথবা পরিবহন কোম্পানী অথবা বীমা কোম্পানী বহন করবে। যা কোনোভাবেই ক্রেতার উপর বর্তাবেনা।

খ. কোরবানির পশু জবেহ ও মাংস ডেলিভারী

১. জবাইখানায় কিভাবে নিশ্চিত করা হবে যে, যার গরুর মাংস সে পাবে অথবা সঠিক পরিমাণ মাংশ পাবে?
উত্তর: প্রতিটি গরু জবাইখানায় প্রবেশের সময় ওজন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য মালিকের নামসহ সংরক্ষণ করা হবে এবং গরুকে একটি ট্যাগসহ সনাক্তকরণ নাম্বার দেয়া হবে। উক্ত নাম্বারের সাহায্য গরু এবং মাংস চিহ্নিত করা যাবে। ৫ জন কর্মীর এক একটি দল একটি গরু জবাই ও মাংশ পক্রিয়াকরণ বা স্লটারিং করবে। একটি মাংশ প্যাকেজিং হয়ে প্যাকেটের গায়ে নাম লেখার পর অন্য গরু জবাই হবে। এভাবে প্রতিটি দল কাজ করবে। দুটি দলের মধ্যে ৫ ফিটের দূরত্ব থাকবে। তারা মাস্ক, সানিটাইজারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করবে।

২. করোনা সংক্রমণ রোধে কি ধরনের ব্যবস্থা থাকবে?
মাংসকর্মীদেরকে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস, হ্যাড কভার ও স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করা হবে। প্রতিদিন কাজের শেষে এবং শুরুতে গরম ও জীবানুনাশক মিশ্রিত পানিতে কর্মীরা গোসল করে নেবে।

৩. কুরবানির মাংশ অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। সাধারণত দেখা যায় মাংসকর্মীরা ইসলামী উপায়ে গরু জবাই নাও করতে পারে? এবং যার যার গরু তার নামে দোয়া পড়ে জবাই করার বিষয় রয়েছে?
উত্তর: প্রতিটি গরু জবাই করার জন্য একজন আলেম নিয়োজিত থাকবেন। যার যার নাম ও দোয়া পড়ে গরু কুরবানি দেয়া হবে যা তাকে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখানো হবে। এই কাজে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড ও ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নির্দেশিত হালাল গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে।

৪. গরুর মাংস কিভাবে বাসায় ডেলিভারী দেয়া নিশ্চিত করবে?
উত্তর: গরু জবাইর উত্তররুপে মাংস, ফুসফুস, কলিজা, ভুড়ি, মাথা, মগজ ইত্যাদি সব প্যাকে করে জবাইয়ের ৩/৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিকানা অনুযায়ী বাসায় পৌঁছে দেয়া হবে। মাংশ সিএনজি অথবা খোলা পিকআপ ভ্যানে ডেলিভারী করা হবে। একটি গাড়ি একবারে সর্বোচ্চ ২টি ডেলিভারী নিয়ে বের হবে যদি তা একই রুটে হয়। এবং একজন ব্যক্তি তার মাংশ সর্বোচ্চ ২টি ঠিাকানায় ডেলিভারী নিতে পারবেন। এবং ২৫ কিলোমিটারের বেশী দূরত্বে মাংস ডেলিভারী দেয়া হবেনা। যিনি একাধিক ঠিকানায় মাংস ডেলিভারী নিবেন তাকে দ্বিগুণ ডেলিভারী খরচ বহন করতে হবে।

৫. যদি জবাইখানায় গরু দিয়ে থাকি। সেক্ষেত্রে চামড়া বা চামড়ার মূল্যের কি হবে?

উত্তর: এক্ষেত্রে ক্রেতাকে চামড়া দেয়া হবেনা। কারণ তাতে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। জবাইখানা থেকে চামড়া বিক্রি হবে। এবং চামড়া বিক্রির অর্থ ক্রেতাকে প্রদান করা হবে অথবা ক্রেতার ইচ্চায় কোনো স্বেচ্চাসেবি সংগঠন কিংবা এতিমখানায় প্রদান করা হবে।

বি:দ্র: ১২ জুলাই তারিখের মূল চুক্তিপত্র অনুসারে লেখা এবং ১৮ জুলাই মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত সংযুক্ত। পরবর্তীতে কোনো ইস্যু পরিবর্তন হলে যা যুক্ত করে নিতে হবে।

6,782 total views, 2 views today

Comments

comments