How to design your eCommerce site

‘শপিং ত মেয়েদের কাজ’। একটা সময় ছিল যখন এমনই ভাবা হত। কিন্তু অজকের দিনে এমনটা মোটেই ঠিক নয় । কেননা অনলাইনেই এমন অনেক টেক গ্যাজেট স্টোর রয়েছে যেখানে পুরুষ ক্রেতারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করে দেয় অনায়াসে, একই রকম ভাবে প্রচুর ভাল ভাল বিশেসায়িত অনলাইন স্টোর রয়েছে শিশু, পিতামাতা বা কিশোর কিশোরিদের জন্য। এই পোস্টে আমি ই-কমার্সের গুন গান গাইবো না । সেসব আপনারা ভালই জানেন। তাই আমি এই পোস্টে একটা আদর্শ ই-কমার্স সাইটে যেসব ফিচার থাকা উচিত বা এর হোম পেইজ বা লে-আউট নিয়ে কথা বলবো যেন আপনার ই-কমার্স সাইটের ডিজাইন আপনাকে সাফল্য পেতে সাহায্য করে।

১। লোগোঃ

স্টার্টআপ সপ বা ব্রান্ডেড স্টোর সে যাই হোক সবার জন্যই একটা পরিষ্কার পরিছন্ন , এবং সহজে সনাক্ত করা যায় এমন একটা লোগো একটা বিজনেস কার্ডের মত কাজ করে। অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে একটা লোগো কোন কোম্পনি বা সংগঠনের জন্য নিশ্চয়তা বা বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে কাজ করে। আপনি আপনার লোগোটি ভেবে চিনতে ডিজাইন করে নিন কেননা এই লোগো আপনাকে বা আপনার কোম্পানিকে একটা ব্যান্ড হিসেবে দাড় করানোর প্রথম হাতিয়ার।

২। দ্রুত ও সঠিক সার্চ বক্সঃ

serach box

আজকের দিনে আমরা সবাই ব্যাস্ত, ভয়ানক ব্যাস্ত । এমন কি দম ফেলবার ও সময় যেন আমাদের নেই। তাহলে আপনার কাস্টমাররা আপনার থেকে ব্যাতিক্রম হবে , একথা কেন ভাবছেন ? না ভেবে থাকলে আপনার ই-কমার্স সাইটে একটা দ্রুততার সাথে কার্যকর সার্চ বক্স থাকা বাধ্যতামূলক যেন আপনার ক্রেতারা অল্প সময়ের মধ্যেই খুজে পায় ঠিক যে প্রডাক্টটা তারা খুঁজছে । আর একটা বিষয় আপনার সার্চ বক্সটা অবশ্যই সহজেই দেখা যায় এমন জায়গায় রাখতে হবে। মানে আপনার সাইটে একটা সার্চ বক্স আছে বটে তবে সেটাকে খুজে পেতেই কাস্টমারদের কে অন্য একটি সার্চ বক্স লাগবে , এমনটা হলে সার্চ বক্স রাখার উদেশ্য থেকে আপনি দূরে সরে গেলেন। আপনার সার্চ বক্সটি থাকা উচিত সাইটের উপরের দিকে যেন খুব সহজেই চোখে পরে।

দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাপার হল, আপনার সার্চ অপসানটা যেন ঠিক ঠাক কাজ করে সেদিখে লক্ষ্য রাখতে হবে। মানে নিদিষ্ট কোন প্রডাক্ট সার্চ করলে আম জনতা টাইপের সব প্রডাক্ট নিয়ে যেন হাজির না হয় বরং সার্চ করা সেই প্রডাক্টই যেন আসে ।

৩। ফিচার প্রডাক্টঃ

Cat3

আপনি আপনার সাইটের হোম পেজে বা পেজের যেকোন সাইডে ফিচার প্রডাক্ট নামে একটা অপসান রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি আপনার টপ সেলিং প্রডাক্ট সম্পর্কে ক্রেতাকে জানাতে পারেন, কোন আকর্ষণীয় অফার দিতে পারেন অথবা সাধারন প্রডাক্ট ও সেখানে রাখতে পারেন যেগুলো কে আপনি পুশ করে সেল করতে চাচ্ছেন বা ভিজিটরদের নজরে আনতে চাচ্ছেন।

৪। রিলেটেড প্রডাক্টঃ

related product

এটা একটা দারুন ফিচার যা দিয়ে আপনি আপনার ভিজিটরদের কে তারা যে প্রডাক্টটি দেখছে তার সাথে রিলেটেড কি কি প্রডাক্ট আছে তা বলতে পারেন। এটা অসাধারণ একটা আপসেলিং কোশল। আপনি এখানে এই চাতুরির সাথে এই লাইন টি ব্যাবহার করতে পারেন “Customers Who Bought This Item Also Bought ” এর মাধ্যমে আপনি ভিজিটরকে একই সাথে একাধিন পণ্য কিনতে উৎসাহিত করতে পারেন।

৫। নিঊজ লেটার সাবস্ক্রিপ্সানঃ

281-big

এই ফিচারের মাধ্যমে আপনি ভিজিটরদের কে তাদের ইমেইল ঠিকানা দিয়ে আপনার নতুন নতুন পণ্য বা সেবা বা কোন অফার সম্পর্কে জানাতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি একটা ইমেল লিস্ট ও বানাতে পারেন যা দিতে পরবর্তীতে আপনি ইমেইল মার্কেটিং করে আপনার পণ্য সেল করতে পারেন।

৬। প্রডাক্ট জুম করে দেখার অপসানঃ

url

আপনার সাইটে যদি একটা ভাল প্রডাক্ট জুম অপসান থাকে তাহলে সেটা আপনার জন্য হবে একটা প্লাস পয়েন্ট। কিছু কিছু সময় ক্রেতারা চান কেনার আগে পণ্যটা অনুভব করতে ,স্পর্শ করতে। কিন্তু অনলাইনে ত এর কোন সুযোগই নাই। আপনি এর বিকল্প হিসেবে খুব ভাল একটা জুম অপসান রাখতে পারেন যেন ক্রেতারা খুঁটিতে খুঁটিয়ে আপনার পণ্যটিকে কেনার আগে দেখে নিতে পারে। পণ্যের বিস্তারিত দেখার সুযোগ ভিজিটরদের কে ক্রেতা তে রূপান্তরিত করার একটি ভাল হাতিয়ার।

৭ । ক্যাটাগরি অপসানঃ

url

আপনার সব পণ্যের একটা ভাল করে গোছানো ক্যাটাগরি থাকা উচিত। আর ক্যাটাগরিতে যেন খুব সহজেই এক্সেস করা যায় সেদিকে ও নজর দিতে হবে। সেজন্য আপনি ক্যাটাগরিকে সাইটের উপরে বা যেকোণ একপাশে রাখতে পারেন।

৮। ন্যাভিগেশনঃ

Website_navigation

সব সাইটের জন্যই ন্যাভিগেশন একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।ই-কমার্সের জন্য এটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য খেয়াল রাখতে হবে আপনার ভিজিটররা যেন খুব সহজেই আপনার সাইটের বিভিন্ন সেকশানে এক্সেস করতে পারে তার সাথে সাথে যেন যেকোন সেকশান থেকে শপিং কার্টে এক্সেস করতে পারে।

৯। ভাল পেমেন্ট গেটওয়ে ও আইকোনঃ

payment-methods

আপনার সাইটে যদি ভাল একটা পেমেন্ট গেটওয়ে থাকে তাহলে সেটা আপনার ভিজিটরদের কে আশ্বস্ত এবং নিশ্চিন্ত করবে। ভিজিটররা সাছন্দ বোধ করবে এমনটা মাথায় রেখে পেমেন্ট গেটওয়ে মারচেন্ট নির্বাচন করতে হবে। আপনি পেমেন্ট এর জন্য হয়ত ব্যাবহার করেন,ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, গিফট ভাউচার, ক্যাশ অন ডেলিভারি অথবা পেপাল । ওসবের যেগুলোই আপনি ব্যবহার করেন না কেন ফুটারে তাদের স্পস্ট আইকোন থাকা উচিত।

১০। প্রাইভেসি পলিসিঃ

পরিষ্কার ভাবে সব কিছু উল্লেখ করে বানানো একটা প্রাইভেসি পলিসি সাইটের সাইটের ফুটারে রাখতে হবে।

১১। ভাল রিটার্ন পলিসিঃ

আপনার সাইটে যখন ভিজিটররা একটা ভাল রিটার্ন পলিসি দেখবে তখন তারা খুব স্বাভাবিক ভাবেই এটা ভেবে আশ্বস্ত বোধ করবে যে যদি কিছু ভুল-চুক হয় তবে ফেরত ত দেয়া যাচ্ছেই। আপনি হয়ত ভাবছেন ,রিটার্ন পলিসি আপনার জন্য জামেলার কারন হবে। কাস্টমাররা পণ্য কিনবে পণ্য ফেরত পাঠাবার জন্য। পুরোটাই ভুল ধারনা , আপনি যদি মুরগির নাম বলে কাচকি মাছ খাওয়ানোর চেষ্টা না করেন মানে আপনি যদি আপনার কথা ও কাজে সৎ থাকেন তাহলে ভাল একটা রিটার্ন পলিসি আপনার সেল আরো বাড়িয়ে দিবে নিশ্চিত থাকেন কেননা ক্রেতারা তখন নিজেকে অনেক বেশি সেফ মনে করবে।

১২। লগইন ও রেজিস্টেশনঃ

আপনার সাইটের ভিজিটরদেরকে রেজিস্টেশন করার অপসান দিন। যাতে করে তারা যখন পুনারায় ফিরে আসলে যেন আবার ও বিলিং ও পেমেন্ট ডিটেইল পুনরায় এন্ট্রি করা না লাগে। ভিজিটরদের কে দ্রুত চেক আউট এর অপসান দিন।

১৩। হাই কোয়ালিটি ইমেজঃ

quality_website_images

আপনার সাইটে হাই কোয়ালিটি গ্রাফিক ব্যানার, ইমেজ ব্যবহার করুন। এতে করে ভিজিটরদের কে আকৃষ্ট করে সহজ হবে। সেলস প্রমোশান ও বিভিন্ন অফারের জন্য ও সুন্দর সুন্দর ব্যানার ব্যাবহার করুন যাতে করে সেগুলো দেখেই ভিজিটরের মনে ক্লিক করার ইচ্ছে হয়।

১৪। ডেলিভারি ইনফরমেশনঃ

পরিষ্কার ভাবে টাইম ফ্রেম উল্লেখ করে সব সময় আপনি কিভাবে আপনার পণ্যটি ডেলিভারি দিবেন তা উল্লেখ করুন এতে করে ক্রেতা ঠিক কখন তার কেনা পণ্যটা হাতে পাবে তার একটা ধারনা পাবেন।

১৫। নিউজ ও ইভেন্ট (ব্লগ)

e-commerce-templates-38

এই সেকসানটির মাধ্যামে আপনি আপনার সাইটের পণ্য, পন্য সম্পর্কিত কোন খবরাখবর ,এবং কোন ইভেন্টের সম্পর্কে ক্রেতাকে জানাতে পারেন। একটা ব্লগিং প্লাটফর্ম ব্যাবহার করে আপনি খুব সহজেই এই কাজটি করতে পারেন। এই অংশটি আপনার ই-কমার্স সাইটটির এস ই ও (SEO) এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটি আপনার সাইটটিকে র্যা ঙ্ক করাতে খুবই সাহায্য করবে।

১৬। কেন ক্রেতারা আপনার কাছ থেকে কিনবেন ?

why buy from us

যদিও বাংলাদেশে কমপিটিশান এখনও বহিবিশ্বের মত নয়। তারপর ও একথা বলাই যায় বাংলাদেশেও প্রতিজোগিতা এখন আগের তুলনায় বেশি এবং ক্রমেই তা বাড়ছে ও আরো বাড়বে। তাহলে একজন ক্রেতা অনলাইন আরও অনেক দোকানের মাজ থেকে আপনার স্টোর থেকে কেন পণ্য বা সেবা কিনবে। এ বিসয়টা ক্রেতাদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে। এই রকম কিছু বার্তা আপনার সাইটে থাকতে হবে, সম্ভব হলে প্রমান সহ।
কিছু ইউনিক সেলিং পয়েন্ট হতে পারে এমনঃ

 

  •  ফ্রি ডেলিভারি
  • পরের দিনই ডেলিভারি
  • সুলভ মুল্য
  • মার্কেট লিডার
  • কাস্টমার সাপোর্ট হটলাইন
  • নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে ।

১৭। কাস্টমার সাপোর্টঃ

customer support

কাস্টমাররা যারা অনলাইন থেকে কোন কিছু কিনবেন তারা অর্ডার করার সময় কোন প্রয়োজন হলে সাহায্য পাবেন এমনটা জানলে খুবই আশ্বস্ত হবেন এবং নিশিন্ত মনে কেনার সিদ্দান্ত নিয়ে অর্ডার করতে পারবেন।
তাই তাদের কে আশ্বস্ত করার জন্য কাস্টমার সাপোর্ট নাম্বার সহজেই খুজে পাওয়া যায় সাইটের এমন জায়গায় রাখতে হবে ।

১৮। ওয়েব সাইট নিরাপত্তাঃ

আপানর ই-কমার্স সাইট টিকে অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে। ক্রেতারা তাদের ক্রেডিট কার্ড বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পেমেণ্ট ম্যাথড ব্যবহার করে পণ্য কিনবেন তাই সাইট নিরাপত্তা একটা বড় ইস্যু। ক্রেতা কোন কারনে আপনার সাইট নিরাপদ মনে না করলে সব কিছু অনেক বেশি ভাল বা কোয়ালিটি সম্পন্ন হলে ও ক্রেতারা কোন পণ্য না কিনে ফিরে যেতে পারে। আর একজন অসন্তুষ্ট ক্রেতা দ্বিতীয়বার ফিরে আসবে এটা ভাবার ও কোন কারন নাই। তাই আপনার সাইটে সঠিক নিরাপত্তা ব্যাবস্থা থাকতে হবে যেমনঃ এইচ টি টি পি এস (https) যা সাইট ব্রাউজ করার সময় কাস্টমারের কম্পিটারে ভাইরাস আক্রমণ প্রতিরোধ করবে। এটা আপনার সাইটে সাইবার এটাক হলে কাস্টমারের কোন তথ্য চুরি হবে না এমন নিশ্চয়টা দেয়।

১৯। সোশ্যাল মিডিয়া লিঙ্কঃ

এক গবেষণায় দেখা গেছে শতকরা কমপক্ষে ২০ ভাগ সেল আসে সোসাল মিডিয়া গুলো থেকে। আমরা সামাজিক জীব হওয়াতে । আমরা সব সময় জানতে চাই কোন একটা বিষয়ে অন্যদের কি ভাবছে। সেটা আপনার পণ্যের জন্য ও সত্য। ফেসবুক, গুগুল প্লাস, টুইটার হল জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াম গুলর অন্যতম। এসব হল সেলফ প্রমোশানের দারুন কিছু মাধ্যাম। অনলাইন শপ গুলর জন্য তাদের
ক্রেতাদের কে পণ্য সংক্রান্ত খোজ খবর, বিশেষ অফার, স্পেশাল ডিল, বা প্রমোশান ইত্যাদি তথ্য প্রদান করে আপডেট রাখার সবচেয়ে ভাল উপায়। তাই আপনার সাইটে প্রধান প্রধান সব সোশ্যাল মিডিয়ার লিঙ্ক সহ আইকন থাকতে হবে।

২০। ট্রাষ্ট মার্কসঃ

Screenshot_1

ট্রাস্ট মার্কস হল ছোট ইমেজ বা লোগো যেগুলো ক্রেতাকে সাইট টি নিরাপদ বলে সাক্ষ্য দেয়। ট্রাস্ট মার্কস আসতে পারে নেটওয়ার্ক সলিউসান , McAfee, Verisign, BBB, TRUSTe, GeoTrust ইত্যাদি থেকে। এধরনের এক্রেডিটেশান সারটিফিকেট ক্রেতা কে এক ধরনের নিরাপত্তা বোধের অনুভুতি দেয় ফলে ক্রেতারা নিশিন্তে তাদের ব্যাক্তিগত তথ্য ও পেয়িং ডিটেইলস শেয়ার করে থাকে। এসব ট্রাস্ট মার্ক আইকন আপনি আপনার সাইটের ফুটারে প্রদর্শন করতে পারেন।

আপনার ই-কমার্স সাইট টিকে উপরের ফিচারগুলো সহ সাজিয়ে নিয়ে শুরু করে আপনার ব্যাবসায়কে নিয়ে যান আপনার কমপিটেটদের নাগালের বাইরে।

হ্যাপি ই-কমার্সিং

পরবর্তী লেখাঃ

১। ই-কমার্স সাইটে ভিজিটর আনার যত পদ্দতি এবং সেগুলো শেখার রিসোর্স । (১ম পর্ব)
২। ৩ টি উপায়, প্রডাক্ট পেইজ এস ই ও (SEO) অপ্টিমাইজ করার।

 

আনোয়ার হোসেন

Content  Writer  &  Online  Marketer

Cell: 01916 572 657 , Email: [email protected]

ফেসবুকে আমি । জানতে বা জানাতে যোগ দিতে পারেন ফেসবুক গ্রুপে (Online Content, Professional Blogging, e-marketing, SEO Group)

তথ্যসুত্রঃ
১। http://www.hongkiat.com/blog/essential-things-ecommerce-site-should-have/
২। http://www.searchenginejournal.com/15-must-have-features-ecommerce-site/27233/
৩। http://www.hailstorm.ie/important-features-of-an-ecommerce-website/

8,547 total views, 2 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.