আপনাদের ধারণা দিয়েছিলাম যে ব্যবসা বাণিজ্য এবং ই কমার্স সম্পকে কি কি বিষয় জানা দরকার। এখন বলতে চাচ্ছি সেটা জানার জন্য কি করতে হবে বা কিভাবে জানা জাবে। বিষয়টা সে লেখাটার সাথে সম্পৃক্ত হলেও কলেবর ঠিক রাখার স্বার্থে আলাদা লিখতে হলো। তাই আজ লিখছি ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে যা কিছু জানা দরকার তা কিভাবে জানতে পারবেন। আমাদেও দেশে ৫ ধরনের লোকেরা ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে ভালো জানতে পারে।
যেমন
০১. যাদের পারিবারিক ব্যবসায়িক ঐতিহ্য রয়েছে,
০২. যারা ভালো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যবসায়ীদের সাথে ড্রিল করেএমন ফার্মে কাজ করেন।
০৩. যারা ব্যবসার উপর লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।
০৪. যারা পত্রিকার অর্থ পাতায় কাজ করেন
০৫. ঐারা ব্যবসা করার প্রস্তুতি স্বরুপ সব খোজখবর রাখেন। যারা এই ৫টির একটাতেও পড়েন না, এই লেখা তাদের কাজে লাগতে পারে।
তাহলে এবার মূল কথায় আসি।
০১. চোখ কান খোলা রাখুন
এটা খুব ভালো ও কার্যকর উপায় আপনার উপরের যোগ্যতা, শিক্ষা পারিবারিক ঐতিহ্য প্রশিক্ষণ ইত্যাদি থাকা সত্বেও আপনার চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এটা ২০ বছরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেজন্য প্রত্রিকার অর্থনীতি পাতায় চোখ বুলান, খবরগুলো পড়–ন, প্রয়োজন মনে করলে কাটিং রেখে দিন। দেশে নতুন কি পন্য ও ব্যবসা আসছে খবর রাখুন, বিজনেস ম্যাগাজিন ও টিভিতে বিজনেস প্রোগ্রাম দেখুন। বিশ্ববজারে নতুন আবিষ্কার সম্পর্কে জানার জন্য নেটের সাহায্য নিন। ব্যবসায়ীদের সাক্ষাৎকার ও জীবনী পড়–ন।
০২. নিয়মিত গ্রাহক হোন:
একটি প্রত্রিকা, একটি ব্যবসায়িক কাগজ এবং একটি আইটি ম্যাগাজিন এর নিয়মিত গ্রাহক হোন। সাথে একটি লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন রাখলেও ভালো জনগনের রুচি সম্পর্কে ধারণা পাবেন। সর্বসাকুল্যে মাসে ৫শ টাকার মামলা। কিন্তু আপনি উপকৃত হবেন। ম্যাগাজিনগুলোতে আগেই জানতে পারবেন নতুন পন্য তার দাম ও ফিচার সম্পর্কে। শুধু যে লেখা পড়ে তা নয় বিজ্ঞাপন দেখেও অনেক তথ্য পাওয়া যায়। আজই হকার ভাইকে বলুন। আপনার পত্রিকা আপনাকে আপডেট রাখবে। একবছর রাখলেই টের পাবেন। পাশাপাশি আপনার কর্মী বা পরিবারের লোকেরাও পড়ে অনেক কিছু জানতে পারবে। প্রয়োজনে কখনো আপনাকে পরামর্শ দিতে পারবে।
০৩. অংশগ্রহণমূলক কাজ করুন:
সমাজে বিভিন্ন অংশগ্রহণমূলক কাজ করুন। যেখানে আরো ১০ জন মানুষ বা ৫ জন ব্যবসায়ী জমায়েত হয়। সেখানে যান। তাদেও চিন্তা ভাবনা জানুন। আড্ডা দিন। আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত সেমিনার বা বৈঠকে আসুন। আপনার যদি দরকার হয় দাওয়াত পাওয়ার জন্য বসে থাকবেন না। এসব জায়গায় অনেক কিছুই জানা যায়।
০৪. অন্যের সাথে শেয়ার করুন:
অনেকে ব্যবসায়িক সিক্রেট মনে করে অনেক কিছু বলতে চান না। এটা আসলে খুব কম ক্ষেত্রেই সঠিক, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক নয়। কারণ আপনি একটি নতুন ব্যবসার কথা ভাবেন, তাহলে আপনি হয়তো তার সুবিধাগুলোই জানেন কিন্তু অন্য কারো সাথে আলোচনা করলে হয়তো এর সমস্যাগুলো জানতে পারবেন। তাছাড়া তিনি যদি আপনার কাছ থেকে শুনে আপনার ব্যবসাটা শুরু করেন এসব ক্ষেত্রে সাধারণত সুবিধা করতে পারে না। তাছাড়া করলেও ক্ষতি কি? প্রত্যেকের নিজের ব্যবসা নিজের লাভ। যেসব এলাকায় চশমার দোকান বেশী সেখানেই কিন্তু চশমা বেশী বিক্রি হয়।
০৫. বিষয়ের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করুন:
আপনি যে বিষয়ে ব্যবসা করছেন বা ব্যবসা করার কথা ভাবছেন তার আদ্যপ্রান্ত জানার চেষ্টা করুন। সে পন্য যে এলাকায় উৎপাদিত হয় তা ভিজিট করুন, কৃষকের সাথে কথা বলুন। অথবা পন্যটি যে কারখানায় বানানো হয় তা সরেজমিনে দেখে আসুন। এর প্রক্রিয়া জেনে নিন। কিকি কাঁচামাল লাগে কোথায় পাওয়া যায় ধারণা নিন। শ্রমিকদের সাথে কথা বলুন। কাঁচামাল কিভাবে সংগ্রহ হয়। ফিনিশগুড কিভাবে ডেলিভারি হয় জেনে নিন। জানতে চেষ্টা করুন। কোম্পানীর মার্কেটিং মেথড কি? বিজনেস পলিসি কি? কাস্টমারের প্রতি তাদের অবজার্বেশন কি? বিষয়ের ভেতরে যাওয়া চেষ্টা করুন। আমি যা উল্লেক করেছি তার চেয়ে বেশী জানতে পারবেন।
উপরের ৫টি কাজ না করলেও আপনি হয়তো ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু ভালো জানা আর না জনার মধ্যে পার্থক্য আছে সেটা নিশ্চয় মানবেন। আপনি কি জেনে বুঝে করবেন না না জেনে করবেন। সিদ্ধান্ত একান্ত আপনার।
9,813 total views, 5 views today