Content

লিখতে পারাটা সহজ না, আবার কঠিন ও না । এটা পুরোপুরি নির্ভর করে ব্যাক্তিগত আগ্রহ, দক্ষতা আর প্যাশনের উপর। এটা হয়ত আমরা অনেকেই জানি যে, ‘কন্টেন্ট ইজ কিং’ । বাংলাদেশে ই-কমার্স এখন শৈশবকাল পার করছে। প্রতিযোগিতা নাই বললেই চলে। সব সময় এমনটাই থাকবে ভাবার কোন কারন নাই। সে সময়টা খুব বেশি দূরে নেই যখন ই-কমার্স সাইট গুলোকে প্রচণ্ড প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে। তখন কোয়ালিটি কন্টেন্ট ছাড়া আপনি আপনার সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভিজিবলই করতে পারবেন না। ফেসবুকে বা গুগলে এড দিয়ে কতদিন চলা সম্ভব ? একটা সময় দেখা যাবে আপনার মত সবাই না হউক অনেকেই একই পণ্যের এড দিচ্ছে। তখনও কি এড এখনকার মত কার্যকর থাকবে ? মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন তাহলে উ্পায়টা কি ?

উপায় একটাই “সারভাইভাল দ্যা ফিটেস্ট” নীতি মনে রাখা।  আপনি ফিট হলে মানে আপনার কোয়ালিটি কন্টেন্ট ও ভাল সার্ভিস থাকলে আপনি টিকে থাকবেন সব সময়ই। কেননা কোয়ালিটি কন্টেন্ট আপনার সাইটে ট্রাফিক আনার জন্য জরুরী। আপনার সাইটে (ই-কমার্স বা অন্যান্য) যদি কোয়ালিটি কন্টেন্ট না থাকে তাহলে সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে মানে আপনার সাইটকে খুজে পাবে না। আবার ট্রাফিক আনতে এবং সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইটের খোজ দিতে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে এসইও অপ্টিমাইজড কন্টেন্ট লিখতে হয়। এসইও অপ্টিমাইজড কন্টেন্ট লিখতে পারার দক্ষতা আপনাকে নিয়ে যাবে ব্লগিং এর পরবর্তী ধাপে। এই পোস্টে আমি বিগিনারদের জন্য এসইও অপ্টিমাইজড কন্টেন্ট লিখার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।

এই টিপসগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি এসইও অপ্টিমাইজড কন্টেন্ট লিখে আপনার সাইটকে (ই-কমার্স বা অন্যান্য) র‍্যাঙ্ক করাতে পারেন। ফ্রিলেন্স রাইটাররা কন্টেন্ট লিখে দিতে ৫ থেকে ৩০ ডলার ঘণ্টা পর্যন্ত চার্জ করে থাকে। তাই আপনি নিজেই যদি অপ্টিমাইজড কন্টেন্ট লিখার কৌশল জেনে থাকেন তাহলে আপনাকে আর কন্টেন্ট লিখানোর জন্য ডলার গুনতে হবে না, বরং আপনি নিজেই নিজের ই-কমার্স বা অন্যান্য সাইটের জন্য কন্টেন্ট লিখতে পারেন অথবা প্রয়োজনে কন্টেন্ট লিখে আয় করতে পারেন।

এই পোস্টে আমি ৬ টি কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করবো।

১। ভিজিটরদের জন্য লিখুনঃ

SEO optimized content

আপনি কোন লিখার সময় যদি শুধুমাত্র গুগল, পান্ডা বা রোবটকে সামনে রেখে লিখেন তাহলে ত হবেনা , আপনার লেখা যেহেতু রক্ত মাংসের মানুষ পড়বে তাই তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই আপনাকে লিখতে হবে। অনেকে র‍্যাঙ্ক পেতে নানা ধরনের ব্লাক হ্যাট পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু গুগলকে এত মফিজ ভাবার দিন এখন শেষ । গুগল এখন অনেক স্মার্ট । আপনার ব্লাক হ্যাট সব প্রচেষ্টা এক সময় র‍্যাঙ্ক এনে দিলেও এখন আপনাকে টকটকে লাল কার্ড এনে দিবে। মানে প্যানাল্টি।

কিছু টিপসঃ

১। যতটা সম্ভব সহজ কন্টেন্ট লিখুন
২। ব্যাকরণগত ভুল এড়িয়ে চলুন
৩। সুপঠিত কন্টেন্ট লিখতে চেষ্টা করুন।
৪। ভিজিটরদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করুন।
৫। আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট লিখুন।
৬। নিজেকে বা নিজের কোম্পানিকে আপনার লেখার মাধ্যামে আপনার নিসের উপর বিশেষজ্ঞ প্রমান করতে চেষ্টা করুন।
৭। কঠিন কঠিন শব্দ এড়িয়ে চলুন।

২। মজার,ইউনিক ও সুপঠিত কন্টেন্ট লিখুনঃ

UniqueSEo content

এটা একজন বিগিনারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপসগুলোর একটি । আপনি যদি কোন কিছু ইউনিক ও মজার লিখে থাকেন আপনার ভিজিটররা সেটা পড়তে পছন্দ করবে। তারা আপনার মজার লেখাগুলোর আপডেট পেতে বা আরো মজার লেখা পড়তে বার বার আপনার সাইটে ফিরে আসবে। ই-কমার্স সাইটের ক্ষেত্রে কন্টেন্টগুলো মজার না হলেও হবে দরকারি ও তথ্যবহুল লেখা। সেখানে আপনি লিখতে পারেন আপনার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত, কি কি সুবিধা তারা পেতে পারে পণ্য থেকে, আপনার পণ্যটি কিভাবে ব্যাবহার কারীদের জীবনকে আরো সহজ করে তুলবে, কিভাবে সেগুলোর যত্ন নিতে হবে , কিভাবে সেগুলো ব্যাবহার করতে হবে ইত্যাদি। বেশির ভাগ বিক্রেতারা এই ভুলটি করে থাকে যে, তারা তাদের অফার করা পণ্যের দিকেই সব মনোযোগ ঢেলে দেন, তারা সেই সব পণ্য থেকে ক্রেতারা কি ধরনের সুবিধা পাবেন, কি ধরনের অভিজ্জতার সম্মুখীন তারা হবেন এসব নিয়ে কিছুই বলেন না। এই বিষয়টাকে মার্কেটিং মাওপিয়া   (marketing myopia)   বলে। এসব বিক্রেতারা ভুলে যান যে, একটা পণ্য একজন ক্রেতার একটা সমস্যা সমাধানের টুল বা উপায় মাত্র। একজন কোয়ার্টার ইঞ্চি ড্রিল বিট উৎপাদনকারি ভাবতে পারেন ক্রেতাদের ড্রিল বিট প্রয়োজন । কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন একজন ক্রেতার আসলে কি প্রয়োজন । একজন ক্রেতার আসলে প্রয়োজন একটি কোয়ার্টার ইঞ্চি গর্ত কোয়ার্টার ইঞ্চি ড্রিল বিট না । এই ধরনের বিক্রেতারা ভীষণ বিপদে পরে যান বাজারে যখন নতুন কোন পণ্য আসে যেগুলো ক্রেতাদের প্রয়োজন আর ও ভাল ভাবে মেটায় অথবা অপেক্ষা তুলনামূলক কম মুল্যের হয়।

সুলিখিত কন্টেন্ট অনেক বেশি ভিজিটরদের আকর্ষণ করবে। শুধু ভিজিটর না, গুগল ও ইউনিক ও সুলিখিত কন্টেন্ট পছন্দ করে। গুগল ও পাঠকদের জন্য মজার ও সাথে ইউনিক কন্টেন্ট খুজে বেড়ায় এবং সেগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন র‍্যার্ঙ্কিং দেয় সবার উপরে।

৩। স্ক্যানেবল কন্টেন্টঃ (হেডিং, বুলেট ইত্যাদি)

scannable seo content

স্ক্যানেবল টেক্সট ভিজিটরদেরকে কোন কিছু পড়তে আকর্ষিত করে। প্রতি পেইজে কিছু স্ক্যানেবল টেক্সট রাখুন। স্ক্যানেবল মানে সেসব টেক্সটকে আপনি গুরুত্ব দিয়ে বুলেটের মাধ্যামে হাইলাইট করেন। আপনি হয়ত আপনার কোন পণ্য ক্রেতাদের জীবন যাত্রা কতটা সহজ করে দিবে এই নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখছেন। আপনি সেক্ষেত্রে সে পণ্যের বিশেষ কিছু গুণাবলীকে বুলেটের মাধ্যামে হাইলাইট করতে পারেন।
আপনার লেখার শুরুতে একটা আকর্ষণীয় হেডিং থাকা জরুরী যেটা আপনার ভিজিটরদেরকে রিলিভেন্ট কিছু পড়তে সাহায্য করবে।

৪। কোয়ান্টিটির সাথে কোয়ালিটিকেও গুরুত্ব দিনঃ

SEO optimized content

একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার যদি কোয়ালিটি থাকে তবেই আপনার কোয়ান্টিটি গুরুত্ব বহন কর, অবশ্যই এর অন্যথা হবার নয়। কোয়ান্টিটি বলতে আপনার কন্টেন্ট হতে হবে মিনিমাম ৪০০ থেকে ৫০০ শব্দের মধ্যে। ই-কমার্স রিলেটেড কোন আর্টিকেল সাধারণত এই শব্দ সীমার মধ্যেই লেখা হয়ে যায়।

এখন দেখা গেল আপনি আপনার লেখার কোয়ালিটি বজায় রেখেই আপনি ৮০০ থেকে ১০০০ বা তারও বেশি লিখতে সক্ষম তখন কি আপনি তা লিখবেন না ? অবশ্যই লিখবেন। সেরকম হলে আপনি ভিজিটরের কাছে খুব শিগ্রীই একজন তুখোর লেখক হিসেবে গণ্য হবেন।

কোয়ালিটি মানে কিন্তু ইউনিকনেসকেও বোজায়। কোনভাবেই আপনার লেখা যেন অন্য কোন লেখার কপি না হয় বা স্পিন করা লেখা না হয়। আপনার লেখা অবশ্যই কপিস্কেপ টেস্ট পাস লেখা হতে হবে।

৫। কিওয়ার্ডের স্মার্ট ব্যাবহারঃ

Keyword Seo

কিওয়ার্ডের ব্যাবহারে স্মার্ট হওয়া জরুরী। আপনি যদি ভাল ভাবে আপনার কিওয়ার্ড গুলো ব্যবহার করতে পারেন তবে সেগুলো আপনার পোস্টকে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক পেতে সাহায্য করবে।কিওয়ার্ড ইউজ করলে র‍্যাঙ্ক পাওয়া যাবে এই ভেবে কোদাল, টুকরি নিয়ে নেমে গেলেন আর মনের সুখে যত খুশি কিওয়ার্ডের ব্যাবহার করতে শুরু করলেন। এটা আপনাকে কোন র‍্যাঙ্ক ত দিবেই না বরং স্প্যামের দায়ে আপানাকে প্যানাল্টি উপহার দেয়া হবে। আপনার টারগেটেড কিওয়ার্ড আপনি এক পোস্টে ২ থেকে ৩ বার ব্যাবহার করতে পারেন । আর সব কিওয়ার্ডকে এক প্যারাতে না দিয়ে বরং প্রথম প্যারা,মাজখান ও শেষ প্যারাতে ভাগ করে দিলে গুগল সেটাকে ভালভাবে নেয়।

৬। আসাধারন কন্টেন্ট লিখতে চেষ্টা করুনঃ

optimized content

এমন কন্টেন্ট লিখতে চেষ্টা করুন যেটা কিনা আপনার হাজারো প্রতিযোগীদের থেকে আপনার পোস্টকে আলাদা করে দিবে সহজেই। সেরকম লেখার জন্য সময় ও শক্তি ব্যায় করুন যতটা প্রয়োজন। অতিরিক্ত তাড়াহুড়ার ফল ভাল নাও হতে পারে।

দেখতে পারেন ভিডিও

উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করে এবং আপনার সময় ও শক্তিকে বিনিয়োগ করে হয়ে উঠতে পারেন সফল লেখক এবং একই সাথে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারেন একজন সফল অনলাইন ব্যবসাহী হওয়ার পথে ।

 

আরো পড়তে পারেনঃ

১। ই-কমার্স সাইটে ভিজিটর আনার যত পদ্দতি এবং সেগুলো শেখার রিসোর্স । (১য় পর্ব)

২। ই-কমার্স সাইটে ভিজিটর আনার যত পদ্দতি এবং সেগুলো শেখার রিসোর্স । (২য় পর্ব)

৩। ই-কমার্স সাইটের জন্য কেন করবেন ভিডিও মার্কেটিং ?

৪। ৭ টি মারাত্তক ভুল যা ই-কমার্স সাইটগুলো করে থাকে ।

৫। আপনার ই-কমার্স সাইটটিকে কিভাবে কার্যকর ও আকর্ষণীয় ভাবে সাজাবেন।

 

Personal Profile: আনোয়ার হোসেন
Business Page : econtentbd
Website: www.econtentbd.com
Skype ID : anower009
E-Mail ID: [email protected]
Mobile: 01916572657

 

তথ্যসুত্রঃ

১। http://www.bloggingtechniques.com/seo-content-writing-tips-for-beginners/

২। https://www.titan-seo.com/NewsArticles/seocontent.html

৩। http://contentmarketinginstitute.com/2012/08/optimize-content-when-you-dont-know-seo/

৪। http://help.outbrain.com/customer/portal/articles/1411677-how-to-write-good-seo-friendly-articles

৫। http://en.wikipedia.org/wiki/Marketing_myopia

 

9,859 total views, 3 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.