আবুল খায়ের
এই লেখাটি মূলত যারা এখনো ই-কমার্স ব্যাবসায় নামেন নি বা নামবেন বলে ভাবছেন তাদের জন্য। যারা করছেন তারাও পড়তে পারেন, ই-ক্যাব ব্লগ সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
ই-কমার্স সম্পর্কে জানেনা বা ই-কমার্স শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হননি এমন লোকের সংখ্যা এখন খুবই কম (অনলাইনে)। তো অনেক সময় অনেকেই এ ব্যাবসায় বুঝে শুনে হোক আর ঝোকের মাথায়ই হোক নেমে পড়ছেন। ই-ক্যাব গ্রুপে এবং ই-ক্যাব ব্লগে এমন পাঠকের সংখ্যা বর্তমানে অনেক যারা খুব শীঘ্রই ই-কমার্স ব্যাবসা করবেন বলে ভাবছেন। তবে এমন লোকের সংখ্যাও কম নয় যারা কী প্লার্টফর্ম ব্যাবহার করে ই-কমার্স সাইট ডেভলপ করা উচিৎ সেটা এখনো জানেন না। গ্রুপে প্রায়সই এধরনের প্রশ্ন চোখে পড়ে যেখানে অনেকেই জানতে চান, ই-কমার্স সাইটের জন্য কোন সিএমএস টি ভালো? এরকম প্রশ্ন আমার মাথায়ও বেশ কিছুদিন আগে এসেছিলো। তো এই প্রশ্নের গঠনমূলক একটি উত্তর দানের প্রচেষ্টা থেকেই মূলত এই পোষ্টটি লিখছি। যদিও সব ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান আমার নেই, তবুও কিছুটা অভিজ্ঞতার আলোকে লেখাটি লিখছি।
সিএমএস-কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যে নামটির সাথে অনেকেই ইতোমধ্যেই পরিচিত হয়েছেন। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে সিএমএস আসলে কী জিনিস। তো চলুন সবার আগে সিএমএস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারনা নেওয়া যাক।
সিএমএস হচ্ছে এমন একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন যার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের সব ধরনের কন্টেন্ট পাবলিশ, এডিট, মোডিফাই, ওরগানাইজ, ডিলিট সর্বোপরি যাবতীয় কাজকে কেন্দ্রীয় ভাবে সম্পাদনা, ব্যাবস্থাপনা এবং পরিচালনা করতে পারবেন। সিএমএস সব ধরনের কন্টেন্টকে ডায়নামিক উপায়ে সম্পাদনা করে থাকে। সিএমএস ব্যাবহার করে একজন নন-প্রোগ্রামারও খুব সহজেই তার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের সিএমএস অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, ব্লগিং, ই-কমার্স ইত্যাদি। তো আমরা মূলত ই-কমার্স ভিত্তিক কিছু সিএমএস এর সুবিধা, অসুবিধা এবং গ্রহনযোগ্যতা সম্পর্কে এখানে জানবো।
ই-কমার্স সিএমএস এর কথা উঠতেই মূলত যে প্রথমসারির সিএমএসের নাম চলে আসে তা হচ্ছে, ম্যাজেন্টো, ওপেনকার্ট, উ-কমার্স, ভার্চুমার্ট, প্রেস্টাসপ, সিএস-কার্ট, টমাটোসপ ইত্যাদি। এই প্লাটফর্ম গুলো মূলত সেলফ হোস্টেড। অর্থাৎ আপনার নিজস্ব সিপ্যানেল অথবা জেডপ্যানেলে আপনি বিনামূল্যে এগুলো ইন্সটল এবং হোস্ট করতে পারবেন।
এছাড়াও কিছু হোস্টেড ই-কমার্স সিএমএস রয়েছে, সপিফাই, বিগকমার্স, ভল্যুশন ইত্যাদি। এই সিএমএস গুলো মূলত প্রিমিয়াম এবং এদের নিজস্ব হোস্টিং এ আপনার সাইটকে হোস্ট করতে হবে। কাজেই আমরা ফ্রি এবং সেলফ হোস্টেড কয়েকটি জনপ্রিয় সিএমএস সম্পর্কে জানবো।
১. ম্যাজেন্টোঃ ই-কমার্স সিএমএস এর প্রশ্ন উঠলেই সবার আগে যেটার নাম চলে আসে, তা হচ্ছে ম্যাজেন্টো। বহুল ব্যাবহৃত এই সিএমএসটি ই-কমার্স সাইটের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাপ্লিকেশন। একটা ই-কমার্স সাইট পরচালনার জন্য যে যে ফিচারগুলো দরকার তার সবই রয়েছে ম্যাজেন্টো তে। এবার ম্যাজেন্টোর কিছু সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে আমরা জানবো।
সুবিধাঃ আগেই উল্লেখ করেছি যে ম্যাজেন্টো হচ্ছে, ই-কমার্সের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সিএমএস। কাজেই একটি ই-কমার্স সাইট চালাতে আপনার যে যে ফিচার দরকার সব পাবেন ম্যাজেন্টোতে। এতে সহাস্রাধিক অতিরিক্ত প্লাগিনস বা এক্সটেনশন রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি বিল্ট ইন ফিচারের পাশাপাশি যদি অতিরিক্ত কোনো কিছু আপনার সাইটে যুক্ত করতে চান করতে পারবেন। পন্য সংযুক্তি, পন্যের বিবরন, ফিচার, ক্যাটেগরি, ম্যানুফ্যাকচারার, অর্ডার, সেলস, রিভিউ, কাস্টমার প্রোফাইল, মাল্টিপল এডমিন, রিপোর্ট, ডেলিভারি মেথড, পেমেন্ট মেথড, পেমেন্ট গেটওয়ে, কনফিগারেশন সেটিং, ডিজাইন সেটিংস সহ আরো অনেক দরকারি অপশন আর ফিচারস রয়েছে। এটি একটি এসইও বান্ধব সিএমএস। এছাড়াও গুগল অ্যানালাইসিস সহ বেশ কিছু ইন্টিগ্রেশনস রয়েছে এতে। মোট কথা সাইট পরিচালনার জন্য দরকারের চাইতেও অধিক ফিচার পাওয়া যাবে এখানে।
অসুবিধাঃ ম্যাজেন্টোকে অনেকেই রিসোর্স হাংগ্রি সিএমএস বলে থাকেন। কারন এতে এত পরিমান তথ্য ইনপুট করতে হয় যে অনেক সময় ব্যাবহারকারী বিরক্ত ও বিভ্রান্ত হয়ে যান। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ম্যাজেন্টোর ডেভলপার খুজে পাওয়া। অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যাবহার করা হয় ম্যাজেন্টোতে। কাজেই অনেক ক্ষেত্রে ওয়েব ডেভলপাররা ম্যাজেন্টো নিয়ে কাজ করার তেমন আগ্রহ দেখান না। অনেককেই এসব ল্যাংগুয়েজের কমান্ড বুঝতেও একটু ঝামেলা পোহাতে হয়। কাজেই ম্যাজেন্টোর জন্য এক্সপার্ট ডেভলপারের সংখ্যা খুবই কম। যারা আছেন তাদের ওয়ার্ক ডিমান্ডও অনেক বেশি।
গ্রহনযোগ্যতাঃ যদিও সিএমএস হিসেবে ম্যাজেন্টো খুব একটা সহজবোধ্য নয়, তবে কেউ এর ফিচার এবং সেটিংস গুলো ভালো ভাবে বুঝে থাকলে ম্যাজেন্টো ছাড়া অন্য কোনো সিএমএস ব্যাবহার করা অনুচিৎ বলে আমার দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয়।
২. ওপেনকার্টঃ ম্যাজেন্টোর পরেই ই-কমার্স সিএমএস হিসেবে যার নাম আগে উঠে আসে, সেটা হচ্ছে ওপেনকার্ট। ওপেনকার্ট হচ্ছে ই-কমার্স সিএমএস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে হালকা এবং সহজবোধ্য। ম্যাজেন্টোর মত ওপেনকার্টেও সব ধরনের ই-কমার্স ফিচার রয়েছে। এর সুবিধা ও অসুবিধা নিচে তুলে ধরা হল।
সুবিধাঃ ওপেনকার্ট অ্যাপ্লিকেশনটি অনেক হালকা হওয়ায় ওয়েবমাস্টার এবং ভিজিটর দুপক্ষের জন্যই সাইটের প্রতি একটা পজেটিভ ধারনা তৈরী হয়। অনেক সময় সাইট এবং টেম্পলেট যদি ভারী হয় তাহলে ভিজিটর সাইট ব্রাউজিং করতে বিরক্ত হয়ে যায়, ফলে আপনি আপনার মূল্যবান ভিজিটর হারানোর আশঙ্কায় থাকতে পারেন। এছাড়াও একটা ই-কমার্স সাইট পরিচালনার জন্য মূলত যেসব ফিচার আপনার দরকার তার সবই রয়েছে ওপেনকার্টে। এই সিএমএসটিতেও সহস্রাধিক এক্সটেনশন রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি বিল্টইন ফিচারের পাশাপাশি অতিরিক্ত অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সহজবোধ্য প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে ওপেনকার্ট ডেভলপ করা। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ফ্রি এবং প্রিমিয়াম ওয়েব টেম্পলেট। মোটামুটি একটু ভালোভাবে সব ব্যাপারগুলো বুঝে নিলে, যে কেউ ওপেনকার্ট অপারেট করতে পারবে।এটি এসইও বান্ধব সিএমএস।
অসুবিধাঃ সব ধরনের সিএমএসেই কিছু না কিছু অসুবিধা রয়েছে। কাজেই ওপেনকার্টও তার বহির্ভূত নয়। অসংখ্য প্লাগইনস থাকায় অনেক সময় অধিকাংশ প্লাগইনসেই কিছু না কিছু বাগ থেকে যায়।যার ফলে আপনি ঠিক যেভাবে আপনার সাইটটিকে উপস্থাপন করতে চান, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেভাবে করাটা সম্ভব নাও হতে পারে।আর আমাদের দেশে ই-কমার্স নির্ভর ডেভলপারদের সংখ্যা এখনও সেভাবে বেড়ে ওঠেনি। বিশেষ করে এক্সপার্ট দের সংখ্যা। কাজেই আপনার সাইট ডেভলপের জন্য একজন দক্ষ ডেভলপার পেতে অনেক সময় ঝামেলা হয়ে যেতে পারে। বা সাইট ডেভলপের জন্য আপনার বাজেট তার ডিমান্ডের চেয়ে অপ্রত্যুল হয়ে যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারটা খুব একটা দেখা যায় না।
গ্রহণযোগ্যতাঃ গ্রহনযোগ্যতার দিক থেকে আমি ওপেনকার্টকেই সেরা মনে করি। কারন হচ্ছে এটি এতটাই লাইট এবং সহজবোধ্য যে, যার অন্তত বিভিন্ন ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন অপারেট করার দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে সেই এটা অপারেট করতে পারবেন। কাজেই হালকা আর সহজবোধ্য ই-কমার্স সিএমএস এর ব্যাপারে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে আমি অবশ্যই আপনাকে ওপেনকার্ট ব্যাবহারের পরামর্শ দেবো।
৩. প্রেস্টাশপঃ ম্যাজেন্টো এবং ওপেনকার্ট ই-কমার্স সিএমএসের পরেই যার নাম চলে আসে তা হচ্ছে প্রেস্টাশপ। প্রেস্টাশপও ওপেনকার্টের মতই আরেকটি হালকা এবং সহজবোধ্য ই-কমার্স সিএমএস। এর রয়েছে অসংখ্য প্লাগইনস এবং থিম। নিচে প্রেস্টাশপের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।
সুবিধাঃ প্রেস্টাশপে ই-কমার্স সাইট পরিচালনার জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি কেউ অতিরিক্ত কোনো ফিচার ব্যাবহার করতে চাইলে আলাদা ভাবে এক্সটেনশন যুক্ত করে নিতে পারবেন। তাছাড়া পন্য ডিসপ্লে থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত সব ধরনের প্রসেস প্রেস্টাশপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে বেশ কিছু প্রথমসারির প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যাবহার করা হয়েছে যার কারনে আপনার সাইটটিকে অডিয়েন্সের সামনে খুব চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। এটিও একটি এসইও বান্ধব সিএমএস।
অসুবিধাঃ আমাদের দেশে প্রেস্টাশপের ব্যাবহার খুব একটা দেখা যায় না। কাজেই এর জন্য এক্সপার্ট ডেভলপার খুজে পাওয়াটা একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাছড়া এর লোকেশন আর কারেঞ্চি পদ্ধতি বাংলাদেশের আদলে খুব একটা মানানসই নয়। বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ প্লাগইন্স গুলোই পেইড হওয়াতে ব্যাবহারকারীর জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করাটা ব্যয় বহুল হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও এই সিএমএস এবং এর প্লাগইন্সগুলোতে অনেক ফাইলমিসিং বা বাগ লক্ষ করা যায়।
গ্রহণযোগ্যতাঃ আপনি যদি সহযবোধ্য সিএমএস খুজে থাকেন, তাহলে প্রেস্টাশপও আপনার জন্য একটা ভালো অপশন। তবে আপনি যদি বাংলাদেশের আদলে আপনার সাইটটিকে ডেভলপ করতে চান, তবে প্রেস্টাশপকে এড়িয়ে যাওয়াটাই আমি শ্রেয় মনে করি।কারন যখন আপনার কাস্টম কিছু ফিল্ড বা প্লাগইনস আপনি যুক্ত করতে যাবেন তখন অনেক ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
৪. উকমার্সঃ ম্যাজেন্টোর পরেই বিশ্বব্যাপী যে ই-কমার্স প্লার্টফর্ম ব্যাবহৃত হচ্ছে তা হচ্ছে উকমার্স। উকমার্স মূলত কোনো সিএমএস না। ব্লগিং অ্যাপ্লিকেশন এবং সিএমএস ওয়ার্ডপ্রেসের একটি প্লাগইনস হচ্ছে এই উকমার্স। ওয়ার্ডপ্রেসের সঙ্গে এই ফ্রি প্লাগইনসটাকে ইনস্টল করে ওয়ার্ডপ্রেসকেই একটি ই-কমার্স সিএমএস এ পরিনত করা যায়। একটা ই-কমার্স সিএমএস এ যেসব ফিচার থাকা দরকার তার অধিকাংশই রয়েছে উকমার্সে।এবার আমরা উকমার্সের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।
সুবিধাঃ উকমার্সের সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে এটির সহজবোধ্যতা। এর প্রায় সবকিছুই কাস্টমাইজ করা সম্ভব। এর সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য প্লাগইনস এবং ইন্টিগ্রেশন। মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যেই যে কেউ তার ইকমার্স সাইট দাড় করাতে পারবেন উকমার্স ব্যাবহার করে। এতে ব্যাবহার করা হয়েছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সর্বজন ব্যাবহৃত সব প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। যার ফলে আপনি খুব সহজেই উকমার্সের এক্সপার্ট ডেভলপার পেয়ে যাবেন। আপনি একজন ননপ্রোগ্রামার হয়ে থাকলেও খুব সহজেই কিছু টিউটোরিয়াল দেখেই শিখে নিতে পারবেন উকমার্স পরিচালনা পদ্ধতি। এছাড়াও সব ধরনের ডেলিভারি, পেমেন্ট গেটওয়ে আপনি এতে সংযুক্ত করতে পারবেন খুব সহজেই। আমাদের দেশের বেশ কিছু ডেভলপার উকমার্সের জন্য বেশ কিছু ফ্রি পেমেন্ট গেটওয়েও ডেভলপ করেছেন ইতোমধ্যেই। এটি এসইও বান্ধব।
অসুবিধাঃ যেহেতু উকমার্স কোনো মৌলিক ই-কমার্স সিএমএস না, কাজেই উকমার্সের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোন কাজের জন্য কোন প্লাগইনস ব্যাবহার করতে হয়, তা ব্যাবহার কারীরা ঠিকমত বুঝে উঠতে পারেন না। আর ব্লগিং সিএমএস হওয়াতে এতে কিছু উটকো অপশন থেকে যায়, যা অনেকেই রাখতে বা দেখতে চাননা।
গ্রহনযোগ্যতাঃ গ্রহনযোগ্যতার দিক থেকে উকমার্স এর ব্যাপারে খুব একটা প্রশ্ন ওঠে না।কাজেই ই-কমার্স সাইট ডেভলপিং এর জন্য যদি কোনো সহজ মাধ্যম আপনি খুজে থাকেন, তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি উকমার্স ব্যাবহার করতে পারেন।
৫. ভার্চুমার্টঃ ভার্চুমার্টও উকমার্সের মত একটি প্লাগিনস। এটি আরেক জনপ্রিয় সিএমএস জুমলার একটি ই-কমার্স এক্সটেনশন। তবে ভার্চুমার্ট সচার আচার খুব একটা ব্যাবহার করতে দেখা যায় না তেমন কাউকেই। এবার আমরা ভার্চুমার্টের কিছু সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।
সুবিধাঃ উকমার্সের মত ভার্চুমার্টেও ই-কমার্স সাইট পরিচালনার জন্য অধিকাংশ ফিচারই রয়েছে। এটিও মূলত একটি এসইও বান্ধব সিএমএস। এচাড়াও ভার্চুমার্টের জন্য শতাধিক প্লাগইনস এবং অসংখ্য ফ্রি ও পেইড থিম রয়েছে। সহজ এবং বহুলব্যাবহৃত প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে ডেভলপ করা। এবং এর ইউজার ইন্টারফেসও বেশ ভালো।
অসুবিধাঃ ম্যাজেন্টোর মত ভার্চুমার্টও একটি রিসোর্স হাংগ্রি ই-কমার্স প্লাটফর্ম বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। এতে এত বেশি তথ্য ইনপুট করতে হয় যে, ব্যাবহারকারী অনেক সময় বিরক্ত হয়ে যান। আর সবচেয়ে লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে ভার্চুমার্টের মাধ্যমে ডেভলপ করা সাইট অনেক ভারী হয়ে যায়। আর এর প্রভাবে সাইটের ভিজিটর হারানোর যথেষ্ট আশংকা রয়েছে।
গ্রহণযোগ্যতাঃ সাইটের সৌন্দর্যদর্ধনের জন্য ভার্চুমার্ট বেশ ভালো একটা প্লাটফর্ম। কিন্তু ই-কমার্স সাইটের জন্য ভার্চুমার্টের ব্যাবহার আমি খুব একটা সমর্থন করি না। কাজেই সম্ভব হলে এড়িয়ে যান ভার্চুমার্টের ব্যাবহার থেকে।
পরামর্শঃ আপনি যদি ই-কমার্স সাইটের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সিএমএস খুজে থাকেন তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে ম্যাজেন্টো। আর আপনি যদি ই-কমার্স ভিত্তিক সবচেয়ে সহজবোধ্য এবং হালকা সিএমএস খুজে থাকেন তাহলে অবশ্যই ওপেনকার্ট ব্যাবহার করুন। উকমার্সও বেশ ভালো, তবে মনে রাখবেন এটি কোনো মৌলিক ই-কমার্স সিএমএস না, একটি প্লাগইন মাত্র।
ই-কমার্স সিএমএস সম্পর্কে আরো বিস্তরভাবে পরবর্তী পোষ্টগুলোতে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করবো। আজকে শুধু কিছু কমন প্রশ্নের একটি উত্তর দেওয়ার প্রচেষ্টা থেকে এই লেখাটা। আর একটা বিষয় একটু পরিষ্কার করি, সিএমএস ব্যাবহার করে যদি আপনি সাইট ডেভলপ করেন তাহলে অতিরিক্ত ভাবে, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, স্টক ম্যানেজমেন্ট এধরনের অতিরিক্ত কোনো সফটওয়ার আপনি না ব্যাবহার করেও অনেক তথ্যের সঠিক ব্যাবস্থাপনার কাজ সহজেই সম্পাদনা করতে পারেন।
আগামী পোষ্টগুলোতে এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য, টিউটোরিয়াল নিয়ে হাজির হবো ইনশা আল্লাহ। ততক্ষন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং ই-ক্যাবের সঙ্গেই থাকুন।
ই-কমার্স সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য জানতে চোখরাখুন ই-ক্যাব ব্লগে।
এতক্ষণ ধৈর্য ধরে লেখাটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও পড়তে পারেনঃ
ফেইসবুক বিজ্ঞাপনের কন্টেন্ট সংগ্রহঃ ওয়েবসাইট প্রোমোট
ফেইসবুক বিজ্ঞাপনের কন্টেন্ট সংগ্রহঃ পোষ্ট বুস্ট/পোষ্ট এংগ্যাজমেন্ট
ফেইসবুক বিজ্ঞাপনের কন্টেন্ট সংগ্রহঃ পেজ প্রোমোট
পণ্য সীমাবদ্ধতা ও মান নিয়ন্ত্রনের উপায়
ই-কমার্সের সম্ভাবনা ও প্রস্তাবনা
9,819 total views, 4 views today