রমযান ও ঈদ কেন্দ্রীক প্রমোশান প্লান
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
কয়দিন পরেই টিভি স্ক্রিন, বিজ্ঞাপনের পাতা আর ফেইসবুকের ওয়াল ভরে যাবে ঈদের শুভেচ্ছায় কতো কতো শুভেচ্ছার আড়ালে চাপা পড়ে যাবে দুনিয়ার কতো দরকারী বিষয়। এই সময় বিজ্ঞাপন দিয়ে পন্য বিক্রি করা অনেক চ্যালেঞ্জিংই বটে।
এই সময়ে সাধারণত প্রথাগত যেসব প্রমোশন ট্রাডিশন দেখা যায়, সেগুলো হলো
1. ঈদের বিশেষ অফার সহ টিভিতে প্রচুর এড।
2. ঈদের বিশেষ কালেকশান বের করে বিলবোর্ডে তুলে ধরা
3. ঈদের শুভেচ্ছা ও পন্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে পেপার এড।
4. পত্রিকার সাথে পাওয়া যায় এলাকাভিত্তিক লিফলেট
5, মসজিদের সামনে ইফতারের টাইমটেবিল ও পন্যের প্রচারপত্র।
আপনি নিশ্চয় এই প্রথাগত ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারেন। করতে পারেন নতুন কিছু। কি করা যায় একটু নতুন একটু অন্যরকম।
1 আপনি যেসব পন্য বিক্রি করেন সেগুলোর মধ্যে যা যা রমযান মাসে দরকার গতে পারে। সেগুলোকে একটা প্যাকেজ আকারে অফার দিতে পারেন।
2. যারা 2/3 হাজার টাকার পন্য কিনবে তাদের আপনার পক্ষ থেকে গিফট করতে পারেন রাজশাহীর শাহী লিচু অথবা কেমিক্যালমুক্ত আম।
৩. প্রতিদিন সঙ্গিসহ একজনকে অফার করুন ভালো রেস্টুরেন্টএ বুফে ইফতার। আবার ওই রেস্টুরেন্টএ যারা ইফতার করে তাদের মধ্যে প্রতিদিন একজনকে অফার করুন আপনার পন্যের একটি গিফট প্যাকেট। যদি রেস্টুরেন্ট কতৃপক্ষ রাজি হয়।
৪. আয়োজন করতে পারেন, কুইজ এসএমএস, গেম, রিভিউ, কমেন্ট বা অন্যকোন কনটেস্টর এর মধ্যে 10 বিজয়ী পাবে পুরস্কার আর অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের জন্য 10% ছাড়।
৫. অফার করুন আপনার কেনা পন্য থেকে 20 টাকা প্রদান করা হবে এতিম শিশুদের ইফতারের জন্য এতিমখানায়। আপনি বাড়তি টাকা না দিয়ে শরীক হোন এই মহান কাজে। এ ধরনের অফার দিতে পারেন।
6. বিভিন্ন শপিং সেন্টারের সামনে বিলবোর্ড ফেস্টুন লিফলেটে জানিয়ে দিতে পারেন আপনার অফার সম্পর্কে।
7. ছোট একটি পকেট সাইজের রমযান গাইড বানিয়ে ফ্রি দিতে পারেন। যেটাতে ভেতরে আপনার পন্যের এডও থাকবে। রমযান এসেসসিয়াল দোয়াগুলো শুধু তাতে থাকবে।
৮. বানাতে পারেন একটি যাকাত চক ক্যালকুলেটর এর এক পিঠে যাকাতের নির্দেশিকা অন্যপিঠে মেমোচক। যেকেউ এতে নিজের যাকাত নিজেই হিসেব করতে করতে পারবে। ধনী মানুষদের মাঝে এটি বিতরণ করুন। যদি আপনার কাস্টমার টার্গেট তারা হয়ে থাকে।
9. ঈদের জামাজুতো একসাথে বিশেষ অফার দিতে পারেন।
10. দিতে পারেন ফ্যামিলি অফার 5 হাজার টাকার বিশেষ কেনাকটা মানে কোন এক রেস্টুরেন্ট ঈদের পরে আড্ডা ও খাওয়ার সুযোগ, 10 হাজার টাকা মানে ঈদের পরে একটা শর্ট ট্যূর কোন থিম পার্কে। 20 হাজার টাকা মানে ঢাকা থেকে দূরে কোথাও ঘোরার সুযোগ।
11. দিতে পারেন নগদ ক্যাশব্যক অফার। ‘‘ আপনি আপনার পন্য হাতে পেয়ে পেমেন্ট করে বিল নাম্বার একটি এসএমএস দিলেই পাবেন নগদ ক্যাশব্যাক’’ এমন অফার থাকতে পারে এই ঈদে।
12. থাকতে পারে ঈদের কোন বিশেষ কাপল গিফট।
13. দিতে পারেন নগদে মোবাইলে টক টাইম।
15. অথবা শুধুমাত্র এই রমযানে ফ্রি করে দিতে পারেন শিপিং বা কুরিয়ার চার্জ।
16. দিতে পারেন গ্রুপ প্যাকেজ, যে আপনার অফিস থেকে যদি আপনার 5 জন ক্লায়েন্ট সহ পাঞ্জাবী কিনেন তাহলে তাহলে ৫ জনের জন্য রয়েছে একদিনর ইফতার।
17. বিভিন্ন অফিসের জন্য দিতে পারেন। ভ্রাম্যমান অফার। কোন অফিস বা আবাসিক বিল্ডিংএ যদি 10 জন ক্রেতা রেজিস্ট্রেশন করে তাহলে। 48 ঘন্টার মধ্যে সেখানে যাবে আমাদের ভ্রাম্যমান শপ। এজন্য পুরো 1 মাসের জন্য 1টি গাড়িতে শপ সাজিয়ে নিতে পারেন।
18. সবাই মিলে কোন একটা শপিং মলের ফেয়ার হলে (বসুন্ধরা ও যমূনা) আয়োজন করতে পারেন। ঈদ ই কমার্স মেলার।
19. ভ্রাম্যমান মেলারও আয়োজন হতে পারে।
20. কোন জিনিসগুলো মানুষের বেশী দরকার হতে পারে, সেগুলো উপহার বা লটারী হিসেবে দিন। যেমন ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন বা দরকারী কোন গেজেট।
21. আর প্রথাগত, বুস্টপোস্ট, ফেইসবুক মার্কেটিং আর যা যা করার তাতে করতে পারেন। খুলতে পারেন ঈদ মার্কেটিং বিষয়ে একটি পেইজ যাতে সবাই মিলে পোস্ট দিতে পারে।
এরকম আরো অনেক কিছুই আপনি খুজে নিতে পারেন। আপনি আপনার পন্য, আপনার কাস্টমার, আপনার বিক্রি টার্গেট প্রর্ভতি যখন ঠিক করবেন তখন আপনি নিজে হয়তো এর চেয়ে আরো সুন্দর একটা আইডিয়া নিজে বের করতে পারবেন।
7,788 total views, 3 views today