যেভাবে ব্লগে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো পড়বেন।
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
বাংলাদেশে এবং বাংলাভাষায় ই কমার্স শেখার জন্য খুব বেশী এবং ভালো রির্সোস ছিলো না। এটা মাত্র এক বছর আগের কথা। কিন্তু এখন আর সেদিন নেই। প্রায় ৪-৫টা বই ২০০০ সাল থেকে এ যাবত বেরিয়েছে। বইয়ের সমস্যা হলো-
প্রথমত প্রযুক্তি পুরনো হয়ে গেলে বইয়ের বিষয়বস্তু পুরনো হয়ে যায়।
এবং এগুলোতে শুধুমাত্র ওয়েবসাইট বানানোর বিষয়টা গুরুত্ব পেয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই যে ই কমার্স করতে হলে ওয়েব সাইট বানাতে হবে। কিন্তু শুধুমাত্র ওয়েব সাইট বানিয়ে নেটে ছেড়ে দিলেই কি বেচাকেনো শুরু হয়ে যাবে। না, তা হবে না। সেটা এতদিনে ই কমার্স উদ্যেক্তারা পুরোটাই বুঝে গেছেন। তাই তারা ব্যবসায়ের অন্যান্য বিষয়গুলোর শেখার ও জানার চেষ্টা করছেন।
আমরা জানি ই কমার্স শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসায়। এ ব্যবসায় করতে হলে শুধু শিখে পড়ে শুরু করতে হবে তাই নয় বরং প্রতিটি মুহুর্তে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। আর সবচে বড়ো কথা হলো আপনাকে ব্যবসায় জিনিসটা শিখতে হবে। ওয়েবসাইট বানাতে যদি আপনি নাও জানেন প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি সেটা সার্ভিস আকারে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে আদায় করে নিতে পারবেন। জানা থাকলে আপনি সেখান থেকে সুবিধা পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া কিছুটা দারণাতো থাকা লাগবেই।
আপনি নিজে যদি ব্যবসায়, ব্যবসায়িক পলিসি, মারপ্যাচ, বাজার ব্যবস্থা, লেনদেন, লাভ লোকসান এসব ইত্যকার নানা জিনিস না বোঝেন সেটা আপনি টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন না। এবং এই কারনেই ১৫ বছর আগে বাংলাদেশে ই কমার্স শুরু হয়েও তা বেশীদূর আগাতে পারেনি।
এসব কথায় মাথায় রেখে ই কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তাদের ব্লগটি চালু করেছে। এই ব্লগে ই কমার্স এর পাশপাশি রয়েছে, এফ কমার্স, এফিলিয়েটেড মার্কেটিং, ই জার্নালিজম ইত্যাদি বিষয়ে বেশকিছু রচনা। রয়েছে ওয়েব সাইট তৈরী ছাড়াও, সাইট নিরাপত্তা, এইসইও, ফেইসবুক মার্কেটিং, টেবনোলজি বেইজড বিজনেস, অনলাইন মার্কেটিং নিয়ে আপনাদের আকাংখা মেটানোর মতো কিছু লেখা। এবং সবচে বড়ো কথা হচ্চে ই কমার্স এর বর্তমান বাংলাদেশের সমস্যা ভিত্তিক, যেমন ডেলিভারী সার্ভিস, মার্কেটিং এর নানা উপায়, পন্যেও ছবিতোলা, ভিডিও মার্কেটিং, ডেভলপারদের সাথে ভুল বোঝাবোঝি, পার্টনার কেন্দ্রীক ব্যবসায়ের নানা সমস্যা, দেশের প্রচলিত ব্যবসায়ের নানা সমস্যা, ই কমার্স ইদ্যোক্তাদের ভুলত্রুটি ইত্যাদি বিষয়ে প্রচুর লেখা।
এমনকি ব্যবসায় শেখার জন্য, ব্যবসায় উদ্যোগ, পরিকল্পনা বিভিন্ন রকম মার্কেটিং কেনাবেচা, বিভিন্ন উদ্যোক্তার অভিজ্ঞতা ও মতামত সম্বলিত সাক্ষাতকার এবং পরিচিতি, রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়, সেবা ও পন্য সম্পর্কিত তথ্য। রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্যাট, ট্রেডমার্ক, পেটেন্ট, ব্যাংক একাউন্ট, অফিসভাড়া এসম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যভিত্তিক দরকারী পোস্টগুলো। আছে প্রেস রিলিজ কিভাবে লিখতে হয়, কিভাবে পন্য সংগ্রহ সংরক্ষণ ওডেলিভারী চেইন মেনটেন করতে হয়, কিভাবে পোডাক্টস রিভিউ লিখতে হয়। ছবি ও ভিডিও কিবভবে তৈরী ও এডিট করা উত্তম, সাইটের লুক কেমন থাকেব, সাইটে কিি কি সুবিধা থাকেবে, পন্যেও বর্নণা কিভোবে লিখতে হবে? কিভাব্ আকর্ষনীয় মার্কেটিং কারা যায়, সৃজনশীল মাকেৃটিং এর নানা উপায় বুদ্ধি। ফেইসবুক মার্কেটিং নিয়ে বেশ কিছু লেখা আপনার জানার খেরাক যোগাবে।
ব্যবসায়ীদের সাধারণ কিছু সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে কিভাবে ব্যাংক লোন পাওয়া যাবে, ইনভেস্টও পাওয়ার বুদ্ধিটা কি? ই কমার্স করার জন্য কিকি জানতে হবে? কিভাবে কোম্পানী প্রোফাইল তৈরী করতে হবে। ব্যবসায়ের পুজি পরিকল্পনা কেমন হবে? ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কিভাবে করতে হয়। এইসব নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখা।
এখন আসুন বলি কিভাবে এগুলো পড়বেন
প্রথম দিকে আমরা বলতাম যে যারা নতুন উদ্যোক্তা তারা সব লেখা পড়ে নিন। কিন্তু এখন এখানে প্রায় ৩০০ এর কাছাকাছি লেখা রয়েছে। তাই এতগুলো লেখা কারো জন্য প্রথমদিকে পড়া কঠিন মনে হতে পারে। সেজন্য আমার পরামর্শ বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখাগুলো পড়া।
যেমন ধরুন:
১. আপনি প্রথমে ই কমার্স এর মূল বিষয় এর সমস্যা ও সমাধান নিয়ে পড়লেন।
২. এর পর পড়লেন, ডেলভারী পোডাক্টস সোর্স এবং পেমেন্ট মেথড নিয়ে।
৩. এরপর ডোমেইন হোস্টিং নামকরণ ও ওয়েব সাইট তৈরী নিয়ে পড়েলেনে।
৪. তারপর পড়লেন ফেইসবুক কমার্স ও ফেইনবুক মার্কেটিং নিয়ে
৫. এরপর সাইটের নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয় জানলেন
৬. এবার ফটোগ্রাফী ও ভিডিওগ্রাফী নিয়ে পাঠ করুন।
৭. এবার পড়ুন মার্কেটিং এর যত উপায় আছে তা নিয়ে।
জরুরী নয় যে আপনি আমার এই তালিকা অনুসরণ করবেন। আপনি কিভোবে পড়বেন আপনি তার একটা তালিকা করে নিন। এবং সেভাবে এক একটা বিষয় ধরে ধারাবাহিকভাবে পড়তে থাকুন।
পড়ার সময় বা পড়ার পর করনীয়
১. আপনি বিষয় ভাগ করে পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতে পারেন। এজন্য আগেই ই কমার্স নোটবই নামে একটা নোটবই বানাতে পারেন।
২. অথবা কপিপেষ্টে করে প্রথ্যেকটি দরকারী তথ্য বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা ফাইলে পিসিতে সেভ করেও রাখতে পারেন।
৩. পড়ার আগে আপনার কিকি জানা দরকার সেরকম একটি তালিকা তৈরী করে নিতে পারেন। পড়ার সময় বা পড়ার পর মিলিয়ে দেখতে পারেন আপনার সব প্রশ্নের উত্তর মিলেছে কিনা।
৪. পড়ার সময় কোনো প্রশ্ন জাগলে সেটাও লিখে রাখুন। এই ব্লগে যদি উত্তর না পান, অন্যত্র খুজে দেখবেন না কেন?
৫. পড়া শেষ হওয়ার সে বিষয়ে যা বুঝেলেন তা নিয়ে নিজই একটা লেখা পোস্ট করতে পারেন। তাহলে নিজের শেখা বিষয়গুলো মনে থাকবে।
তাহলে এবার আপনি ১ থেকে ৩ মাসের সময় নিয়ে ই কমার্স বিষয়ক কোর্স মনে করে লেখাগুলো পড়া শুরু করতে পারেন। আপনি যে বিষয়ে ব্যবসায় করবেন সে ধরনের ভালো বালো ওয়েবসাইটগুলো দেখতে ভুলবেন না। ভুলে যাবেন না বিভিন্ন বিসয়ে ইউটিউবে প্রয়োজনীয় ভিডিও দেখার কথাও।
11,016 total views, 3 views today