জাহাঙ্গীর আলম শোভন
ব্যবসায়ে অর্থসংস্থানের কিছু বিকল্প
.
.
আমাদের দেশে উদ্যোক্তা তৈরী হওয়া উদ্যোগের মানষিকতা তৈরী হওয়া দুটোই কঠিন। এই কঠিনের পিছনে বেশ কিছু কারণ আছে। এর অন্যতম হলো পুঁজি সংকট। এখানে যেমন উত্তরাধিকার সূত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা বাড়ী বা জমি পেলেও ক্যাশ টাকা পায়না বললেই চলে। আর নিজে রোজগার করে ক্যাশ করা আরো জটিল।
জাপানে নাকি এক টাকা চুরি করার চেয়ে একশ টাকা রুজি করা সহজ। আমাদের এখানে একটাকা পূজি সংগ্রহ করার চেয়ে একশ টাকা পঁজি নষ্ট করা সহজ। কারণ যেকেউ আপনাকে ব্যবসায়ের যেকোনো একটা পর্যায়ে পথে বসিয়ে দিতে পারে। ফলে বাবা মাও অল্প বয়সী উদ্যোক্তাদের উপর ভরসা করে টাকা বিনিয়োগ করতে চান না। হায়রে কপাল, যার জন্য নেই তার জন্য কোথাও নেই। ব্যাংক আপনাকে তখনি ১০ লাখ টাকা দেবে যদি আপনি ৩০ লাখ টাকার মালিক হোন। সত্যিই অদ্ভুৎ। যাদেরকে মা বাবাই ভরসা করেন না, শুধু চাকরী খুজতে বলে। বন্ধুরা পাশে থাকেনা, চাকরী পেলে কেবল বেতন কত জানতে চায়। তাদের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিমাতা হবে, এ আর এমন কি? হা হা হা।
তাহলে উপায়? উপায় কঠিন, জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। তবুও কেউ কেউ ঠিকই ক্লিক করে ফেলেন। এ ধরনের ক্লিক করার জন্য কিছু বিকল্প রাস্তাতো আছেই। আমি শুধু প্রচলিত সেসব বিরল কার্যক্রমের কথা শেয়ার করবো মাত্র। বাকীটা কদ্দুর কি করা যায়। সেটাতো স্থান কাল পাত্র আর বিষয়ের উপর নির্ভরশীল।
০১. লটারী সমিতি:
এটা আমার নিজের চোখের দেখা আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে দেখেছি আমাদের মফস্বল শহরে ব্যবসায়ীরা এভাবে চালানের পুঁজি যোগান। এতে একটি মার্কেটের সব ব্যবসায়ীরা একটি সমিতির মত করেন। এই সমিতির কোনো সভাপতি সেক্রেটারী নেই। নেই কোন ব্যাংক একাউন্ট কিংবা ডিপোজিট তবুও তারা প্রতি এক একজন ব্যবসায়ীকে মোটা অংকের টাকা ঋণ দেন। তাহলে কিভাবে সম্ভব। ধরুন একটি মার্কেটে ৬০ জন দোকানদার আছেন। তো তারা প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে সন্ধ্যার সময় এক জায়গায় জমা করেন। ৬০ দিন ৬০ জন এই দায়িত্ব পালন করেন। রাত ১০ টায় দোকান বন্ধ করে তারা সবাই এক জায়গায় একত্রিত হন। তারপর ৬০ জনের নামের উপর লটারী হয়। যিনি আজকের বিজয়ী তিনি আজকের সব টাকা পেয়ে যান, মানে ৩০ হাজার টাকা এবং সেটা ঋণ হিসেবে। ৩০ হাজার টাকায় সে মার্কেটের একজন ব্যবসায়ীর একটি চালানের পয়সা হয় বা কিছুটা হেল্প হয়।
এভাবে এই লটারী চলে ৬০ দিন। একটি বয়ামে ৬০ জনের নাম লেখা কাগজ থাকে। একটি করে দিন যায় আর একজনের নাম কমতে থাকে। এভাবে ৬০ জন ৬০দিন টাকা পান। টাকা ১দিন পেলেও একজন ব্যবসায়ীকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। ফলে ৬০ দিনে তার ঋণটাও শোধ হয়ে যায়। এভাবে কোনো সূদ দেওয়া ও নেওয়া ব্যতিত প্রতি ৬০ দিন পর পর একটা ঋণ পাওয়ার সুযোগ হয়।
০২. সমাবায় সমিতি বা বণিক সমিতি:
এটা খুবই প্রচলিত এবং কার্যকর পন্থা। বিভিন্ন এলাকার বা পাড়ার বা ব্লকের বা গলির ব্যবসায়ীরা এলাকাভিত্তিক ছোট সমিতি করেন। এতে সবাই মিলে মাসে একটা চাাঁদা দিয়ে থাকেন। তারপর বড়ো একটা ফান্ড তৈরী হলে সদস্যদের মাঝে সেটা ঋণ হিসেবে দিয়ে াকেন। এর ঋণে অল্প মুনাফা াকে তা দিয়ে সামিতির বিভিন্ন খরচ এর জন্য অর্থ সংস্থান করা হয়। নিজেদের সমিতি তার নিজের মেম্বারদের টাকা তাদের মাঝে ঋণ হিসেবে দেয় বলে খুব বেশী কঠিন শর্ত াকেনা।
আমাদের দেশের রিকশার শহর হিসেবে পরিচিত কুমিলÍা শহরের রিকশা চালকেরা আজ েেক ৪০ বছর আগে এরকম একটা সামিতি করে কোটি টাকার ফান্ড তৈরী করেছিলেন পরে তা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এবং আমাদের দেশে বেশ ক’ বছর শুধু ব্যবসায়ী নয় সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবিদের মাঝেও এই ব্যবস্থা ব্যাপক প্রচলন ছিলো। বর্তমানে নানা অনৈক্য ও সমস্যার কারণে এই ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। তার স্থান দখল করে নিয়েছে বেশীসুদের মাইক্রোক্রেডিট দাতা ছোট ছোট কো অপারেটিভ সোসোইটি, যদিও এটাও সমবায় সমিতি। এরকম আরেকটি বণিক সমিতি হলো নোয়াখালীর ‘‘বসুরহাট বাজার বণিক সমিতি’’ এটিও সমবায়ে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত সমিতি।
০৩. মুঠোচাল মুঠোটাকা ও নিজের ঘরে ব্যাংকিং:
আমাদের দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য মুঠোচাল সঞ্চয়। এই কালচার এখনো গ্রামে আছে খুব ছোট কাজ কিন্ত ব্যাপক ফলদায়ী। এতে গ্রামের বৌ ঝিয়েরা প্রতিদিন রান্নার আগে রান্নার জন্য মেপে যে চাল নেন তা থেকে একমুঠ চাল রেখে জমিয়ে রেখে দেন। কয়েকমাস পর সে চাল এক করে নেন প্রয়োজনে বেচে টাকা ক্যাশ করেন অথবা অভাবের সময় রান্না করেন। খুব বেশী কিছু না হলেও অভাবীদের সংসারের জন্য এটাও কম না। ঠিক এভাবে অনেকে খুচরা পয়সা অর্থাৎ ধাতব মুদ্রা মাটির ব্যাংকে জমান। পরে তা কাজে লাগান। এগুলো ছোট বা দরিদ্র পরিবারের জন্য খুব কাজের। কিন্তু ব্যবসায়ী বা বড়ো পরিবারের জন্য অতটা নয়। এতে বছরে আর কতোই জমে সেটা দিয়ে আর কিইবা হয়। যদিও আজকের বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এনজিও টিএমএসএস ২৫ জন মহিলা ভিক্ষুকের মুঠোচাল দিয়ে শুরু হয়েছে। এদের কাছে আজ কয়েকশ কোটি টাকার মাইক্রোক্রেডিট ফান্ড।
কিন্তু এ পদ্ধতিটা আমরা একটি আপডেট করতে পারি। কিভাবে সেটা আমি একটা ঘটনার মাধ্যমে আপনাদের জানাই বুঝতে সহজ হবে। তামান্না টেলিকম, গোলাম মোস্তফা, মগবাজার ওয়ারলেস রেলগেটে গত ১৫ বছল ধরে কমিউিনিটি হাসপাতালের সামনে দোকান করেন। এখন বেচাকেনাও বেশ ভালো। ফটোকপি, বিকাশ, কম্পোজ, লোড, মোবাইল এক্সেসরিজ মিলে মাসে ভালো কামাই আছে তার। কিন্তু টাকা আসে আর যায়, ব্যবসায় চলে, খেয়ে পরে দিন বেশ যায়। কিন্তু টাকা কোনো কাজে লাগাতে পারেন না। এ অবস্থায় আমি তাকে এক পরামর্শ দিলাম যে সঞ্চয়ের ব্যাপারে একটু সাহসী হতে বল্লাম। এর মানে হলো যখন ক্যাশে ভালো অংকের টাকা াকবে তখন প্লাস্টিকের একটি ব্যাংকে ৫০০/১০০০ হাজার করে রেখে দিতে পারলে প্রতিদিন তা হলে যেদিন যেদিন রাখা যায়। যে কথা সে কাজ, মোস্তফা ভাই প্রথমমাসে ঘরের ব্যাংকে ডিপোজিট করলেন ২০ হাজার টাকার বেশী। এই টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা ব্যবসায় খাটালেন আর ১০ হাজার টাকা নিজের জন্য রেখে দিলেন। এখনো তিনি সেটা করেন কখনো মাসে ৫/১০ হাজার কখনো ২ মাসে ১০/২০ হাজার হয়। বেশী হলে একটা অংশ ব্যবসায় লাগান আর কম হলে নিজের জন্য রাখেন সেগুলো দিয়ে ঘরের জন্য কিছু কেনেন, জমান অথবা কোথাও ঘুরে আসেন। যে মোস্তফা ঢাকা আর টাঙ্গাইলের বাইরে কখনো কোথাও যাননি তিনি গত ১ বছরে তিনবার ইন্ডিয়া ঘুরে এসেছেন, সেজন্য তাকে খরচের চাপ নিতে হয়নি।
এক্ষেত্রে আপনি ব্যবসায়ী হলে ব্যবসার লাভে লোকসান ও লেনদেনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনিও করে দেখতে পারেন। একমাসের টাকাও না হোক ৬ মাস ১ বছরের টাকাও যদি কিছু করা যায় মন্দ কি?
০৪. ক্রাউড ফান্ডিং:
ক্রাউড ফান্ডিং এর উপর ইক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ একটা বেশ ভালো লেখা লিখেছেন। পাশাপাশি সাতক্ষিরা ই শপের জন্য ক্রাউড ফান্ডিং করে প্রাকটিক্যালি দেখিয়ে দিয়েছেন। এর কথা হলো বেশ কয়েকজন লোক মিলে খুবই অল্প অল্প করে টাকা দিয়ে তাদের মধ্য থেকে একজনকে পুঁজি গঠনে সাহায্য করা। যেমন হতেপারে একটা কলেজের ১০০০ ছাত্র ১০০ টাকা করে এক লক্ষ টাকা দিয়ে একজন উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করবে। হতে পারে একটি ক্লাসের ৫০ জন ছাত্র ১০০০ টাকা করে দিয়ে তাদের একজনকে কোনো একটা কাজে সহযোগিতা করবে।
০৫. অর্ধেক ঋণ:
এ ধারণাটা আমার। এনজিও পিপি তৈরী করার সময় কাউকে এই ধারণা দিয়েছিলাম। এর মূল আইডিয়া হচ্ছে একটি এসোসিয়েমান বা সংস্থার অধীনে কিছু লোকের কাছ থেকে সঞ্চয় নেবে। এটা মাইক্রোক্রেডিট ইনস্টলমেন্ট এর মতো। ছয়মাস পর তাদের ঋণ দেয়া হবে। শর্ত হলো যে যতোটাকা জমা করেছে তাকে তার দ্বিগুন ঋণ দেয়া হবে। যেমন কোনো ব্যক্তি ছয়মাসে ৩০ হাজার টাকা জমা করলো এতে তিনি ৬০ হাজার টাকা ্ ঋণ পাওয়ার যোগ্য হলেন। এর সুবিধা হলো ৩০ হাজার টাকা যিনি জমা দিলেন তিনি ৬০ হাজার টাকা ঋণ পাবেন এর মানে হলো আসলে তাকে দেয়া হলো ৩০ হাজার টাকা। যিনি ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয়ের সময় ঠিকমতো ইন্সটলমেন্ট দিয়েছেন, খুব বেশী ভোগাননি তিনিই ঋণ পাওয়ার জন্য অগ্রদাবীদার বলে বিবেচিত হবেন। অবশ্যই এর জন্য মিনিমাম মুনাফা হবে। ্যদিও বাকী ৬ মাসে তিনি ইন্টারেস্ট সমেত বাকী ৩০ হাজার টাকা ফেরত দিবেন।
আর ঋণগ্রহীতার সুবিধা হলো তিনি ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে ৬ মাসের মাথায় ৬০ হাজার টাকার একটা নগদ অংক পেলেন। আসলে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে ছোট কিছু থেকেও বড়ো কিছু হতে পারে আর তা না হলে বড়ো সম্ভাবনাও নস্যাৎ হয়ে যায়। আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে যত সমস্যা আমাদের সামনে হাজির হয় তা শুধু একটা টেনশান নিয়ে হাজির হয়না বরং সমস্যাটির সমাধান করে নিজেকে প্রমাণ করার এবং আত্মবিশ্বাস জন্মাবার একটি সম্ভাবনা নিয়েও হাজির হয়।
০৬. পন্য ঋণ:
যদি ভালো ওয়ে বা জানাশোনা াকে তাহলে ব্যবসায়ের প্রম পর্যায়ে ঝুঁকি নিয়ে এধরনের ঋণ দেয়া ও নেয়া যেতে পারে। বিশেষকরে ই কমার্স ব্যবসায়ীদের জন্য এটা খুব কার্যকর ও ভালো উদ্যোগ হতে পারে। আপনি কেবল প্রমোশন বা বিজ্ঞাপনের জন্য কিছু খাটাবেন বাদ বাকী পন্যটা অন্য কারো কাছ থেকে ধারে বা ঋণে আনবেন শর্ত হলো বিক্রি হলে আপনি টাকা দিয়ে দেবেন। এটা কোনো নতুন আইডিয়া নয়। কিন্তু অন্য কোনো উপায় না থাকলে এটা কেউ সিরিয়াসলী ভেবে ও করে দেখতে পারেন।
এর জন্য প্রথমে আপনি এমন ২০ জন ব্যবসায়ীর নামের তালিকা তৈরী করুন যারা আপনাকে ধারে অল্প পন্য দিতে পারেন। তারপর তাদের থেকে ৫ জন বাদ দিয়ে দিন। তারপর বাকী ১০ জনের সাথে যোগাযোগ করুন। ফোনে নয় সরাসরি যান, চা খেতে খেতে কথা বলুন। ধরে নিলাম ৫ জন রাজি হয়েছে। তাহলে এই ৫ জনের বেস্ট সেলিং আইটেম সংখ্যা ৫০। এই ৫০টি পন্যের ছবি তুলে আপনি প্রমোশন শুরু করুন যেগুলোর চাহিদা আছে সেগুলো ২/৪ টা করে আনুন। বিক্রি করে টাকা দিয়ে দিন।
০৭. অগ্রিম মূল্য আদায়:
এটা হতে পারে কোনো এক্সক্লুসিভ আইটেমের ক্ষেত্রে অথবা দামের ক্ষেত্রে বড়ো কোনো ছাড় াকলে। এছাড়া এই কাজটি করার জন্য কাস্টমার লাইনে খুব ভালো ট্রাষ্ট তৈরী করতে হবে। যেমন নতুন ধরনের কোনো গেজেট আনবেন বা নতুন মডেলের গেজেট। আপনি ঘোষণা দিলেন প্রথম ১০ জন যদি তার অগ্রিম দাম দেয় তাহলে তাদের কাছে আপনি ক্রয়মূল্যে গেজেট বিক্রি করবেন মানে তাদের প্রায় ২০% সাশ্রয় হবে। আগেই বলেছি আমাদের দেশে এটা আত্মীয় স্বজন ছাড়া অন্য কারো কাছে পাওয়া কঠিন। এই লেবেলের ট্রাস্ট এখনো ই কমার্স এ তৈরী হয়নি।
০৮. ইস্যুভিত্তিক বা সিজনাল লোন:
প্রফেশনাল ব্যবসায়ীরা এই কাজটি খুব ভালো পারেন। যেমন কোরবানী ঈদের সময় কিছু ব্যবসায়ী লোকাল লোকজনকে চামড়া কেনার জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকেন। টাকা যিনি দেন তিনি কিন্তু দাম ধরে চামড়াটা কিনেই নেন। যেহেতু লোকাল লোকটির পুঁজি সংকট তাই তারা পারষ্পরিক সহযোগিতা ও বাস্তবতার আলোকে এটা করে াকেন। আজকাল ঈদ সিজনে বাংকগুলোও তিনমাসের জন্য লোন দিয়ে াকেন। এতে দুইপক্ষের ঝুঁকির মাত্রা কমে যায়। এভাবে কোনো একটা নির্দিষ্ট পন্যের জন্য পরিচিতি কারো কাছ েেক স্বল্প সময়ে যদি লোন বা বিনিয়োগ পাওয়া যায় যা থেকে বিনিয়োগ কারীকে লাভের একটা অংশ দেয়া হবে।
বিশেষকরে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা এ ধরনের ঋণ নিয়ে থাকেন। আবার ইট ব্যবসায়ীরা এ ধরনের লোন যখন নেন তখন তারা সেটা টাকা দিয়ে পরিশোধ করেন না বিনিময়ে ইট দিয়ে পরিশোধ করেন অবা ইট বিক্রির পরেই কেবল টাকা ফেরত দেন এতে ইট বিক্রি হবার জন্য যতদিন সময় লাগে ততদিন অপেক্ষা করতে হয়। মানে প্রায় ৩- ৬ মাস। তবে ৬ মাসে ২০% লাভ হলে বিনাকষ্টে অনেকে মনে করেন- মন্দকি? ব্যাংকে টাকা থাকলে তো আর এতো লাভ আসতো না। আর এটা ইসলামিক দৃষ্টিতে হালাল বলে মনে করেন অনেকে। কারণ এর লাভটা নির্দিষ্ট বা ফিক্সট নয়। কমবেশী হতে পারে। এভাবে ঋণ পেলেও খারাপ না। কিন্তু আসলে বুদ্ধি দেয়াতো সহজ বাস্তবে করে দেখানো কঠিন। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো নতুন উদ্যোক্তাকে কেউ দিতে চাইবে কিনা, এটাইতো মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।
০৯. পন্য দিয়ে ঋণ শোধ:
এটাকে বলা হয় দাদন ব্যবসায়। এটা আমাদের দেশের শত শত বছরের ঐতিহ্য বিশেষ করে সমুদ্রে বা নদীতে চাষীরা এই প্রক্রিয়ায় ঋণ নিতে াকেন। তারা আগেই মহাজনের কাছ েেক ঋণ নেয়। পরে মাছ ধরা পড়লে তাকে সে মাছ মহাজনের কাছের বিক্রি করতে হয়। এভাবে মাছ দিয়ে তার ঋণ একসময় শোধ হয়। আামাদের দেশে এই পক্রিয়ায় নিরীহ জেলেদের ঠকানোর অভিযোগ আছে, আবার জেলেরা বেশী দামের জন্য চুরি করে অন্যত্র মাছ বিক্রি করে দেয় বলে শোনা যায়। তবে সব ব্যবসায় পদ্ধতি আর ঋণ কাঠামো সব কাজে বা সব ব্যবসায় তো চলে না। তবুও আমার শেয়ার করার উদ্দেশ্য হলো এগুলো জেনে আপনাদের মাথায় নতুন কোনো ধারণা জন্ম নিতে পারে। অথবা আসলে অর্থসংকুলানের সম্ভাবনা কতটুকু তারও একটা ধারনা পেতে পারেন। অবশ্য ব্যবসায়ের পূজি সংগ্রহ নামে আরেকটা লেখাও মাস ছয়েক আগে ই ক্যাব ব্লগে পোষ্ট করেছিলা।
দশ নম্বার পথটা আপনি খুজে বের করার চেষ্টা করুন। ব্যবসায় করতে হলে এটা আপনার একটার যোগ্যতার অংশ যে আপনি ভালো বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারেন কিনা? এছাড়া প্রচলিত আরো অন্য অনেক উপায় আছে এগুলো অনেকের জানা এবং তার আপনারা অনেকেই করছেন যেমন কয়েকজন অংশীদার নিয়ে শুরু করা। প্রয়োজনে লাভ লোকসান শর্তে বিনিয়াগ নিতে পারেন। আসলে গত কয়েক বছর দেশের ব্যবসায়িক সেক্টরে একটা হা হুতাশ এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবাই বলছে ব্যবসা বণিজ্য নাইরে, গেলামরে, এইরে সেইরে। তবুও কিছু লোকতো টিকে আছে এবং ব্যবসায় করছে, কিছু লোকযে নতুন করে উঠে আসছেনা তাও কিন্তু নয়। আর লোকসান কিংবা কিছু লোকের পড়ে যাওয়া তাওতো সব সময় ছিলো। এখন দেখা যাক আপনার আমার কি হয়। আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
হিজরী নববর্ষ, মহররম এবং দূর্গাপূজার শুভেচ্ছা সবাইকে।
জাহাঙ্গীর আলম শোভন, ঢাকা- ২০/১০/২০১৫
10,075 total views, 2 views today