বিদ্যমান মূদ্রা ব্যবস্থাপনায় ই-কমার্স সেক্টরের সমস্যাসমূহ
পণ্য আমদানীতে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ?
* বৈদেশিক মূদ্রা ব্যয়ের ক্ষেত্রে বৈধ ব্যয়সীমা পর্যাপ্ত নয় বিধায় অনেকে ভিন্ন পথে ব্যয় পরিশোধ করছে কিংবা অনেকে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারছেনা।
* আমাদের দেশে অনেকগুলো গ্লোবাল ই-কমার্স শপিং প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে, যারা খুচরা প্রোডাক্ট প্রি-অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি করে থাকে। এই ধরনের প্লাটফর্মগুলোকে ছোট ছোট করে অনেক সেলার কে পেমেন্ট করতে হয়, যা সম্পূর্ণ ফরেন কারেন্সি কার্ডের উপর নির্ভর করতে হয়। কার্ড লিমিট অনেক কম হবার কারণে ভার্চুয়াল কার্ড দিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে পেমেন্ট করতে হয়। এই ধরনের ব্যবসায়ীদের জন্য পেমেন্টে বিশেষ সহযোগিতার প্রয়োজন ।
* ছোট প্রোডাক্টগুলো অনেক সময় GPO এর মাধ্যমে আনতে হয়। সেখানে অনেক প্রোডাক্ট হারিয়ে যায়, সঠিকভাবে ট্রাক করা যায়না। ছোট পার্সেল অল্প খরচে এনে ব্যবসা করার মত সুযোগ সুবিধা নেই। প্রাইভেট শিপিং মেথড ব্যবহার করে প্রোডাক্টের চেয়ে খরচ ২/৩ গুন বেশি চলে আসে|
দেশীয় লেনদেন এর ক্ষেত্রে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ?
* স্ক্রো (Escrow) সিস্টেম না থাকায় ই-কমার্সখাতে কাংখিত গতি পাচ্ছে না। এবং ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছেনা।
* ক্যাশ অন ডেলিভারী নির্ভর সাপ্লাই ব্যবস্থাপনায় অনলাইনে লেনদেন হচ্ছে খুবই সীমিত পরিসরে।
* অনলাইন বা ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন না হওয়ায়। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দূর্বলতা কারণে অনেক কাজে প্রতিষ্ঠানসমূহ পিছিয়ে আছে। যেমন ঋণ গ্রহণ কিংবা বিনিয়োগ প্রাপ্তি।
* ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণের সুযোগ সীমিত বিধায় উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের অভাবে ব্যবসার পরিধি বড় করতে পারছেনা।
পণ্য রফতানীতে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ?
১। চাহিদা ও যোগান থাকা সত্বেও ক্রসবর্ডার ই-কমার্সের পরিধি বাড়ছেনা। ই-রফতানীর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মূদ্রার রেমিট্যান্স অথবা রফতানী কোনো ধরনের স্বীকৃতি না থাকায় উদ্যোক্তারা প্রণোদনা পাচ্ছে না এবং তারা এখাতে কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।
২। ইন্টেকচুয়াল বা বুদ্ধিভিত্তিক পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক কতৃক নানাবিধ বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষ বিভিন্ন শিল্পকর্মের মূল্য লাখ টাকা হয়ে থাকে। ফলে বড় অংকের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যতিত অন্যভাবে বা অনলাইনে প্রদান করতে ক্রেতারা নিরুৎসাহিত হন। কিন্তু ব্যাংকে পরিশোধিত অর্থ উত্তোলন করার ক্ষেত্রে এই ধরনের আয় রেমিট্যান্স কিংবা রফতানী অন্যকোনো ক্যটাগরিতে বিবেচনা করা হয়না বিধায় এজন্য বাড়তি চার্জ দিতে হয়।
৩। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পণ্য বা সেবা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ডেলিভারী দেয়া হয়। কিন্তু এর মূল্য দেশের বাইরে থেকে বৈদেশিক মূদ্রায় পরিশোধ করা হয়। সেক্ষেত্রে দেখা যায় বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হলেও পণ্যটি রাষ্ট্রের সীমা পার হয়নি বিধায় এ ধরনের আয়কে রফতানী আয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়না আবার রেমিট্যান্স হিসেবেও দেখা হয়না। ফলে বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের এই খাতটি সঠিকভাবে বিকশিত হচ্ছে না।
5,869 total views, 2 views today