করোনার সময়ের ই-কমার্স পণ্য ডেলিভারী দেয়া
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাস্তবে এটা আসলে এক ধরনের শিথিল লকডাউন। এর মধ্যে ক্যাবিনেট ডিভিশন থেকে জরুরী পণ্য ও ঔষধ ডেলিভারী করতে পারবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদি ও খাদ্য পরিবহন করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কিছু শর্ত রয়েছে।
এই সময়ে যারা ডেলিভারী সেবা দিবেন তাদের জন্য করনীয়
১. প্রথমত আপনি জরুরী পণ্য, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সামগ্রী এবং জরুরী খাদ্য পরিবহন ব্যতিত অন্যকিছু ডেলিভারী করতে যাবেন না।
২. প্রথমেই টিমের প্রতিটি লোককে তাদের আসা, যাওয়া, ওয়ার হাউসে অবস্থান, বাসায় চলাফেরা সব ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দিন। প্রয়োজনে স্যানিটাইজার, মাস্ক ও গ্লাভস সরবরাহ করুন।
৩. ওয়ারহাইজে প্রবেশের আগে পরে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক করুন। নিশ্চিত করার জন্য একজনকে সুপারভিশনের দায়িত্ব দিন।
৪. সব কর্মীকে মুখোশ ও হাতমোজা পরান। প্রয়োজনে গাউন বা পিপিই পরাতে পারেন। এ ব্যাপারে আইনগত বাধ্যতা না থাকলেও ক্রেতার আস্থা ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে বোঝাতে সহজ হবে।
৪. প্রতিটি পন্য কমপক্ষে ৬ ঘন্টা আগে ওয়ার হাউজে প্রবেশ করেছে সেটা নিশ্চিত করুন।
৫. আপনার ডেলিভারী পন্যের মূল প্যাকেটের উপর একটি বাড়তি পলিপ্যাক দিতে পারেন। ডেলিভারী করার সময় কাস্টমারের কাছ থেকে দূরে থেকে একটি ট্রে বা টেবিলের উপর বা মেঝেতে রেখে পন্য ডেলিভারী দিন। তখন প্রয়োজনে বাড়তি পলিব্যাগ খুলে ডাস্টবিনে রাখুন। অথবা ওয়ার হাউজে থেকে বের করার আগে একবার এবং কাস্টমারের বাড়িতে প্রবেশের আগে একবার পলিপ্যাকের স্যানিটাইজ করে নিন।
৬. আপনার প্যাকেটের গায়ে একটি প্রিন্টিং কাগজে বিষয়গুলো লিখে দিন। যাতে, আপনি যে, সব কিছু মেনে চলছেন সেটা ক্রেতা বা আইন শৃংখলাবাহিনী জানতে পারে। লিখে দিন ‘‘ ১.এই পন্যটি ওয়ার হাউজে ৬ ঘন্টা রাখা হয়েছে। ২. ওয়ারহাউজ জীবানুমুক্ত রাখা হয়েছে। ৩. কর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে। ৪. এই প্যাকটি সানিটাইজ করা হয়েছে।
৭. ইনভয়েস এর উপর লিখে দিতে পারেন। আপনি মূল্য পরিশোধ করার ক্ষেত্রে অনলাইনে করুন তাহলে অধিক নিরাপদে থাকবেন। তা না হলে সরাসরি স্পর্শ না করে ডেলিভারী পার্সন এর পলিপ্যাকে টাকা রেখে দিন।
৮. যারা ই-ক্যাবের মেম্বার রয়েছেন তারা ই-ক্যাবের স্টিকার, ই-ক্যাব প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র, মন্ত্রীপরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি, ই-ক্যাব সদস্যদের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের অনুমতিপত্র, এবং ই-ক্যাব সদস্যদের জন্য বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পত্র সঙ্গে রাখুন। সাথে অবশ্যেই আপনার কোম্পানী ট্রেড লাইসেন্স, কর্মীর আইডি কার্ড এবং পন্যের ইনভয়েস এবং গাড়ি থাকলে গাড়ির কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।
৯. আপনি যদি লজিস্টিক কোম্পানী হয়ে থাকেন। তাহলে নিজে ঔষধ বিক্রি করতে যাবেন না। আপনি যেহেতু এই ব্যাপারে লাইসেন্সড না, তাই সমস্যায় পড়তে পারেন। সেজন্য অনুমোদিত কোম্পানীর ঔষধ ডেলিভারীর দায়িত্ব নিতে পারেন।
১০. রেস্টুরেন্ট এর খাবার ডেলিভারী করতে চাইলে কোন কোন রেস্টুরেন্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শুধু তাদের খাবার ডিস্ট্রি্বিউট করুন। অনেক স্ট্রিট ফুডের গাড়ির সাথে কিছু ফুড ডেলিভারী কোম্পানীর লোগো দেখেছি। এই সময়ে স্ট্রিট ফুডের ফাস্টফুড ডেলিভারী করা থেকে বিরত থাকুন।
শুধু দায়িত্ব পালন কিংবা নিয়ম পালন নয়। আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের নিরাপত্তা যেমন জড়িত। তেমনি পুরো সমাজ এলাকা দেশ এমনকি সারা বিশ্বের মানুষের জীবন মরনের প্রশ্ন। তাই সতর্ক হোন প্রতিটি পদক্ষেপে। আপনার একটি ভুল অনেক মানুষের মৃত্যর কারণ হতে পারে।
5,930 total views, 3 views today