এই মুহুর্তে ক্রসবর্ডার ই-কমার্সকে জাগাতে হবে
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
এই মুহুর্তে দেশের অর্থনীতিতে আরএমডি এর পরে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সে খাতটি আমাদের সামনে এসেছে। সেটি হলো ক্রস বর্ডার ই-কমার্স। আমাদের রেগুলার ই-কমার্সে যেখানে প্রবৃদ্ধি ২৫% সেখানে এই খাতে গত ৫ বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭৫% হারে। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্বেও এই অর্জন আশা ব্যাঞ্জক। বর্তমান বাঁধাগুলো অপসারণ করলে এই হার কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এবং রফতানী বাণিজ্যে বিশাল ভূমিকা রাখবে। সেজন্য ই-কমার্স সংশ্লিষ্টদের মতে নিচের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে।
রপ্তানি বাণ্যিজ্যে ১০ শতাংশ প্রণোদনা
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ফেব্রুয়ারী ০৮, ২০১৮-এ জারিকৃত এফই সার্কুলার নং-০৩ অনুযায়ী সফট্ওয়্যার, আইটিএস (Information Technology Services) খাতের জন্য সেক্টর-স্পেসিফিক নগদ সহায়তা প্রদানের পূর্ণাঙ্গ নিয়মাবলী সংক্রান্ত সার্কুলার দেয়া হয়। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আগামী ২০২১ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সরকারের দেয়া, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফটওয়্যার ও আইটি সেবা খাতের সাথে ই-কমার্স ব্যবসায়ী ও ই-ক্যাব সদস্য কোম্পানিসমূহকে রপ্তানিতে উৎসাহিত করতে অত্যন্ত জরুরি। রপ্তানি বাণিজ্যে ১০ শতাংশ প্রণোদনা ই-কমার্স সেক্টরে প্রয়োগের বিনীত অনুরোধ করছি। প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সুবিধার্থে এখানে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) কে সম্পৃক্ত করা যায়।
সরকারের ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সহায়ক হবে। এভাবে ইন্ডাস্ট্রি সহায়ক নীতিমালা ও সহায়তার মাধ্যমে ই-কমার্স খাতকে বিকশিত করবে। বর্তমানে ই-কমার্সে প্রবৃদ্ধির হার ২৫%। এই হার বৃদ্ধি পেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মান, কর্মসংস্থানবৃদ্ধি ও রফতানী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ক্রস–বর্ডার ই–কমার্সের জন্য চাই বাড়তি সুবিধা
বর্তমানে ক্রস বার্ডার ই-কমার্স সুবিধা দিতে পলসি ও বন্দরে ওয়্যার হাউস সুবিধা চালু নেই। বিশ্বের অনেক দেশ অনলাইনের মাধ্যমে তাদের পন্য বিদেশে বিক্রির জন্য বন্দর সমূহে আলাদা ওয়ার হাউজ চালু করেছে। ক্রস বার্ডার ই-কমার্স সুবিধা দিতে এই সুবিধা সময়ের দাবী। এতে করে ই-কমার্স ব্যবসায়ের প্রসার বাড়বে। দেশীয় পন্যের বাজার বিভিন্ন দেশে প্রসারিত হবে।
দেশীয় পন্য অনলাইনে বিদেশে বিক্রির ক্ষেত্রে ক্যাশ ইনসেনটিভ
দেশীয় পন্য অনলাইনে বিদেশী বা প্রবাসী ক্রেতার কাছে বিক্রির মাধ্যমে অনলাইন উদ্যোক্তারা দেশের জন্য বৈদেশিখ মুদ্রা অজর্ণ করছেন। রেমিটেন্সখাতে ক্যাশ ইনসেন্টিভ থাকলেও ই-কমার্স থাতে তা নেই।
যেসব ই-কমার্স কোম্পানী বিদেশী ও প্রবাসী ক্রেতার কাছে পন্য বিক্রি করে বা রেগুলার ই-কমার্স কোম্পানীসমূহ যেসব দেশীয় পন্য বিদেশী ক্রেতার কাছে বিক্রি করে সেগুলোর ক্ষেত্রে ক্যাশ ইনসেনটিভ দেয়া অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এতে করে একদিকে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সুবিধা পাবে বিদেশী ও প্রবাসী ক্রেতারা অন্যদিকে রফতানী আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরনে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কারণ এতে করে অনলাইনে আন্তজাতিক ক্রয়-বিক্রয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে।
6,601 total views, 3 views today