Social-Media-and-College-Admissions.jpg-1024x701

 

সময় প্রতিদিন যেভাবে মানুষকে ব্যস্ত করছে , সেখানে কর্মব্যস্ত জীবনে কেনাকাটার সহজ মাধ্যম প্রতিনিয়ত হয়ে উঠছে ই-কমার্স সাইটগুলো । এক ক্লিকে জিনিস কেনা , অনলাইন কিংবা ক্যাশ অন ডেলিভারি বা মোবাইল এর মাধ্যমে পেমেন্টগুলো হচ্ছে । কিন্তু পাঁচ কোটির ওপর মোবাইল গ্রাহক কিংবা এক কোটির ওপর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্যে আমরা কতটা ক্রেতা বান্ধব ই-কমার্স বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছি তা প্রশ্নসাপেক্ষ ব্যাপার ।

 

কিছু বিষয় থাকে যা আমাদের দেশের ক্রেতাদের এ ধরণের ই-কমার্স বিষয়ক প্রতিষ্ঠান থেকে জিনিস কিংবা পণ্য কিনতে আগ্রহী করে তুলবে কিংবা আমরা ক্রেতা তৈরি করতে সক্ষম হবো ।imagesCAREWO8X

 

১। ক্রেতা নির্বাচনঃ

ক্রেতা যদি হয় ১৮ বছরের ওপর শিক্ষিত কেউ তবে সেই ক্রেতা মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু সেই শিক্ষিত ক্রেতাই অনলাইনে কিনতে আগ্রহী নয় । কারণ কি ? ক্রেতা জিনিস ধরে দেখতে পারছেনা । সেখানে কোম্পানিকে ক্রেতার কাছে যেতে হবে । সবকিছুর ওপর একটা আসল কথা হল সবকিছু অনলাইনে বিক্রি করে ফেলবো , ভার্চুয়াল জগত সব । কিন্তু না, পণ্য কিন্তু বাস্তব জগতে কেউ কিনছে । তার জন্যে ক্রেতার সন্তুষ্টির জন্যে মাঝে মাঝে ক্রেতার কাছে যেতে হবে । হতে পারে সেটা মেলার মাধ্যমে কিংবা ডোর টু ডোর । আর আজকের কম বয়সী মানুষটা আগামী দিনের ক্রেতা । সম্ভাব্য ক্রেতার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে ।

 

২। ক্রেতা প্রশিক্ষণঃ

“ক্রেতা প্রশিক্ষণ” কথাটি পড়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই । মনে রাখতে হবে আমরা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ । সেখানে সবকিছুই আমাদের অনেক কষ্ট করে করতে হবে । যে ক্রেতা নয় , তাকে ক্রেতা বানাতে হবে । পারলে একজন ভিক্ষুককে ই- কমার্সের ক্রেতা বানান । এতে হাসার কিছু নেই , আমাদের দেশে ভিক্ষুকেরও বাড়ি আছে । ভিক্ষুকরা যদি নিজের ভিক্ষা কিভাবে বাড়াবে সেটার জন্যে মিটিং করতে পারে আমাদেরই দেশে , তবে কেন আপনি ক্রেতা তৈরির জন্যে কষ্ট করবেন না( উদাহরণ হিসেবেই বলা হল) । আমাদের দেশ কিন্তু আমেরিকা না , এখানে ক্রেতাও আপনাকে তৈরি করতে হবে । কারণ ক্রেতা বুঝেনা জানেনা ই-কমার্স কি । আর অল্প ক্রেতা ই- কমার্স জানলে আপনার ব্যবসার প্রসার হওয়ার সম্ভাবনা কম ।

 

৩।ক্রেতা সন্তুষ্টিঃ

আমাদের দেশের মানুষ ফ্রি শব্দটির সাথে পরিচিত । তাই ক্রেতাকে পণ্য বা জিনিস ফ্রি ডেলিভারির ব্যবস্থা করুন । কষ্ট হবে, তবুও করুন । কি দরকার পুরো দেশজুড়ে প্রথমেই ব্যবসা শুরু করার, নিজের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী একটি শহরে প্রথমে শুরু করুন । ঠিকমত একটি শহরেই আপনার কাস্টমার আপনি তৈরি করে ফেললে সেটি মেইনটেইন করতেই আপনাকে রীতিমত হিমশিম খেতে হবে ।এমন হতে পারে একটা শহরই আপনার জন্যে কোটি টাকার বিজনেসের জায়গা হতে পারে । তাই পরিমান বাড়ানো না , কোয়ালিটি বজায় রাখুন আপনার বিজনেসের ।

 

৪। কিভাবে ক্রেতা তৈরি করবেনঃ

চমৎকার করে কিছু লিফলেট করুন , জানি আমাদের দেশে অনেকেই লিফলেট না পড়েই ফেলে দেয় । তবুও কিছু মানুষতো পড়বে । আর ব্যবসায় এইরকম বিষয় ঘটবে , এটার জন্যে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে । কারণ ব্যবসা মানেই আপনাকে অকল্পনীয় বাঁধা পেরোতে হবে। কিছু জায়গায় মনে হবে এই খরচ না করলেও হয় , কিন্তু কিছু প্রমোশন আপনাকে করতে হবে। ১০ জনের মধ্যে ৪ জন যদি আকৃষ্ট করতে পারেন তবেই আপনি সফল , আরও বেশি করলে আরও ভালো । আপনার লক্ষ্যই হবে সর্বোচ্চ । সেই লিফলেটে কিভাবে ক্রেতা পণ্য কিনবে তার ছবি সম্বলিত দিক নির্দেশনা থাকবে ।

 

৫। ভিডিও তৈরি করুন প্রশিক্ষণেরঃ

ক্রেতা তৈরি আছে এই ধরণের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন । অনেক মানুষ ক্রেতা হতে পারছেনা না জানার কারণে । তাদেরকে ক্রেতা হিসেবে গড়ে তুলুন । ব্যবসার জন্যে আপনাকে দৌড়াতে হবে । সব অনলাইনে হবে এটা ভাবনা করা ভুল । তাহলে আপনি একজন দক্ষ ব্যবসায়ীর মতন আচরণ করছেন না । ভিডিও তৈরি করে কিভাবে কেনাকাটা করতে হয় তা ক্রেতাকে শিখান। অনলাইনে এই সিস্টেমে ছড়ান । আপনারই ব্যবসা প্রসার হবে ।

directory-submission-2015

 

৬। বিহেভিয়ার ফর কাস্টমারঃ

আমাদের দেশে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ক্রেতার সাথে খুব একটা ভালো ব্যবহার করেনা । পণ্য কেনার পর ক্রেতাকে চিনি না এইরকম একটা অবস্থা । কিন্তু একজন ক্রেতাই আপনাকে আরও ১০ জন ক্রেতা তৈরি করে দিবে । নিজেও সেই ক্রেতা আপনার প্রোডাক্ট কিনবে ।

 

৭।ক্যাশ অন ডেলিভারি থেকে বের হয়ে আসুনঃ

ক্রেতাকে আধুনিক করুন। যত দ্রুত আধুনিক করবেন তত আপনার কাজ সহজ হবে । অনলাইন কিংবা মোবাইল পেমেন্ট নিন। এ ক্রেতাকে প্রশিক্ষিত করুন আস্তে আস্তে।

 

৮। মোবাইলে কেনাকাটার ব্যবস্থা করুনঃ

ক্রেতা যেন মোবাইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট দেখতে পায় সেইরকম করুন । ক্রেতার কাজ সহজ করুন । যত সহজ করবেন ততই ক্রেতা বাড়বে ।

 

৯। ক্রেতার ঠিকানা রাখুনঃ

সবসময় ক্রেতার ঠিকানায় পণ্য ডেলিভারি করুন । নিজের কাজ সহজ করুন এবং ক্রেতার কাজ সহজ করুন। যেখানে সেখানে প্রোডাক্ট ডেলিভারি বন্ধ করুন । নিজের ব্র্যান্ড ক্রিয়েট করুন । ক্রেতার নির্ভরতা বাড়বে।

 

১০। সার্ভিস ফর কাস্টমারঃ

প্রোডাক্ট নিয়ে কোন সমস্যা হলে ক্রেতার সাথে সুন্দর ব্যবহার করুন । ক্রেতার জন্যে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমার সার্ভিস রাখুন । প্রোডাক্ট বিক্রির পর ক্রেতাকে চিনিনা এরকম চিন্তা করা উচিত নয় । আমাদের দেশের অনেক বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ক্রেতাকে পরবর্তীতে সার্ভিস দিতে চায় না , ভালো ব্যবহার করে না । আমাদের দেশের জন্যে অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার সার্ভিস অবহেলিত । সেজন্যে আপনাকে এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে । আপনি ভালো সার্ভিস দিলে সেই বড় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আপনি প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে পারবেন , এভাবেই বড় প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার আপনার ক্রেতা হবে । বিজনেস যত বড়ই হোক ক্রেতাকে কখনও অবহেলা করা উচিত নয় । সুনাম অর্জন করতে কষ্ট করতে হয় ঠিক তেমনি তা ধরে রাখাও জরুরি । এটাই আপনার প্রতিষ্ঠানকে অন্যদের থেকে আলাদা করবে।

১১। ক্রেতার মনের কথা বলুনঃ

ক্রেতার ওপর বিরক্ত হবেন না । একজন ক্রেতা বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ক্রেতা হতে পারে । একটি প্রোডাক্ট কিনলে তার সাথে সামাঞ্জস্য আরও কিছু প্রোডাক্ট এর খবর দিন । মাঝে মাঝে প্রিমিয়াম ক্রেতাকে কিছু গিফট দিন । কোন একটা উৎসব আয়োজন করুন । ক্রেতাকে উৎসবের নিমন্ত্রন পাঠান । ক্রেতা অনেক খুশি হবে ।

eCommerce SEO

 

ধন্যবাদ সবাইকে ।

ভালো থাকবেন ।

শুভেচ্ছা

 

Content Writer- Nazmul Hasan Majumder

For Facebook profile click here  

For Facebook Page – contentever 

 

13,447 total views, 5 views today

Comments

comments