এই পোষ্টটি অভিজ্ঞদের তেমন কাজে না অাসলেও ইকর্মাস, ওয়েব টেকনোলজি বা ওয়েব সাইট মেইনটেনেন্স সর্ম্পকিত টেকনিক্যাল জ্ঞান কম বা খুবই সামান্য, এমন উদ্যোগক্তার জন্য অাশা করি কিছুটা হলেও কাজে অাসবে। বেসিক লেভেলে যে সব টেকনিক্যাল বিষয় গুলো জানা দরকার হবে:
- Domain Name ও Hosting Server নির্বাচন
- Hosting Control Panel কি এবং কোন বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি
- FTP কি এবং কি ভাবে কাজ করে, কি ভাবে file Upload kortay hoi
- CMS কি এবং ওয়েব সাইটের থিম (!) কোথায় পাওয়া যাবে
- CMS টি পরিচালনার জন্য টোকটাক Web টেকনোলজির ধারনা (Basic HTML)
- Browser এ Add-ons এর ব্যবহার (Screen shot, FTP, Color picker….)
- সোসাল মিডিয়ায় Account তৈরি ও কানেক্ট করা (facebook page, Google+ page, Twitter Page, Youtube Channel)
- বেসিক ফটো এডিটিং (Color adjust, Resize, File size Reduce, Water Mark/ জলছাপ and more…)
এই বিষয় গুলো জানা থাকলে অাপনার ইকর্মাস সাইটি মেইনটেনেন্স ক্ষেত্রে অনেক উপকারে অাসবে। অাপনি যদিও নিজে টেকনিক্যাল বিষয় গুলো পরিচালনা না করে অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে করিয়ে থাকেন বা করানোর পরিকল্পনা থেকে থাকে, তারপরও বলবো অাপনার উপরোক্ত বিষয়গুলো জানা থাকা অাব্যশক। এতে করে অাপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অথবা অাপনার টেকনিক্যালটিম কে গাইট করতে সহায়ক হবে।
Domain Name ও Hosting Server নির্বাচন
- Domain Name: অাপনার ওয়েব সাইটির নাম টি ই হলো Domain Name। যেমন: www.giftbari.com একটি Domain Name। .com টপ লেভেল ডোমেই হওয়াতে সবার প্রথম পছন্দ .com নাম। অাপনার পছন্দের ইকর্মাস domain Name টি .com.bd ও হতে পারে। Domain name টি ফ্রি অাছে কি না তা সহজেই অনলাইন হতে চেক করতে পারেন, এর জন্য অনেক ওয়েব সাইট রয়েছে। www.domainname.com তাদের মধ্যে একটি । www.godaddy.com (অারো অনেক কম্পানি রয়েছে) হতে ও অাপনার পছন্দের Domain name টি কিনে রাখতে পারেন।
- Hosting Server: Hosting Server হলো অাপনার ওয়েব সাইটির পাবলিস করার জন্য একটি সার্ভার ও স্পেস দরকার হবে যেখানে অাপনার ইকর্মাস সাইটি সেটাপ করা থাকবে। একই কম্পানি অথবা অালাদা কম্পানি হতে Domain Name এবং Hosting Server নিতে পারেন। Hosting Server বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। নিন্মের ছবিটি হতে একটি ধারনা নিতে পারেন: Hosting সংক্রান্ত কিছু পোষ্ট রয়েছে e-cab এর ব্লগ সাইটে। অামি এ নিয়ে বিস্তারিত অালোচনা না করে বরং Hosting Server এর যে সার্ভিস গুলো গুরুত্বপূর্ন সে সর্ম্পকে বলবো। অাপনি যে কম্পানি হতেই সার্ভিস নেন না কেন কিছু জিনিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো : Web Space, Bandwidth, Up-time, Sub-Domain, FTP, webmail, 24/7 Support।
Domain Name এবং Hosting দুটি অালাদা বিষয়, যদিও একটি অারেকটির পরিপূরক এবং অনেক কম্পানি দুটি সার্ভিস এক সাথে বা অালাদা অালাদা ও দিয়ে থাকে। যেহেতু Domain Name এবং Hosting দুটি অালাদা বিষয়, তাই একই কম্পানি হতে দুটি সার্ভিস হতে হবে এমন কোন ব্যাপার নেই। Hosting Server অাপনি চাইলে যে কোন সময় পরির্বতন করতে পারেন।
Hosting Control Panel
Hosting Server Provider অাপনাকে Hosting Control Panel এর একসেস প্রদান করবে। Hosting Contol Panel দিয়ে ই অাপনার ওয়েব সাইটের সব এবং গুরুত্বপূর্ন কাজ করে থাকবেন। তাই এই একসেসটি (ইউসার নেম ও পার্সওর্য়াড) সর্তকতার সঙ্গে সংগ্রহ করুন। Hosting Control Panel এর যে বিষয় গুলো জানা দরকার তা হলো:
- FTP একাউন্ট তৈরি করা ও File Upload করার পদ্ধতি (বিস্তারিত নিন্মে)
- Hosting Control panel এর password পরিবর্তন করতে পারা
- Domain এর Email ID তৈরি করা (যেমন: [email protected], [email protected] )
- ব্যক্তিগত Email এ webmail forwarding করা বা কানেক্ট করা
- DataBase তৈরি করা
- Sub-Domain তৈরি করা (যেমন: blog.e-cab.net)
ভিন্ন Hosting Service Provider কম্পানির Hosting Control Panel দেখতে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। বহুল ব্যবহৃত Hosting Control Panel ইন্টারফেইজ “cPanel” এর একটি পরিচিতি ভিডিও দেখে Hosting Control Panel সর্ম্পকে ভাল ধারনা তৈরি করে নিতে পারেন:
FTP কি এবং কি ভাবে কাজ করে, কি ভাবে file Upload করতে হয়:
FTP (File Transfer Protocol) হলো অাপনার Hosting Server এ File অাপলোড করার মাধ্যম। যেমন, অাপনার তৈরি করা ওয়েব সাইটি FTP এর মাধ্যমে Hosting server a Upload করবেন। image, text, audio, video , zip … সব ধরনের file দ্রুত গতিতে Hosting Server a upload জন্য FTP Software ব্যবহার করা হয়। অনেক জনপ্রিয় FTP software রয়েছে, তার মধ্যে অামার পছন্দের FTP হলো “FileZilla” ও “FireFTP”। FileZilla সফটওয়্যারটি ফ্রি ও ব্যবহার সহজ। Hosting Service company অাপনাকে FTP কানেক্ট করার একসেস দিয়ে থাকবে এবং Hosting Control Panel এর FTP সেকশন এ এর একসেস পাবেন বা নিজের ইচ্ছা মত একসেস বানাতে পারেন। FileZilla সফটওয়্যারটি একটি স্ক্রিন শর্ট নিন্মে দেওয়া হলো:
তবে সব Hosting Control Panel এ ‘File Server’ নামে অপশন রয়েছে যা কি না FTP এর কাজ(একই ধরনের) করে থাকে। অাপনার ইকর্মাস সাইটটি একবার সেটাপ হয়ে গেলে FTP বা Hosting Control Panel এর খুব বেশি ব্যবহার দরকার হবে না। ইকর্মাস ইকর্মাস র ৯০% কাজ সাইটের নিজস্ব Control Panel ব্যবহার করে অাপনি প্রডাক্ট অাপলোড, ডিলিট, ইডিট, ব্লগ লিখা বা ওয়েব সাইটের যেকোন কথ্য পরির্বতন করতে পারবেন । এর জন্য অবশ্য অারো বেশ কিছু বিষয় জানতে হবে অাপনার । যেমন: অাপনরা ইকর্মাস সাইটি কোন CMS(এ নিয়ে নিন্মে অালোচনা করা হবে) দিয়ে তৈরি ও তার ব্যবহার জানা।
CMS কি এবং ওয়েব সাইটের থিম (!) কোথায় পাওয়া যাবে
CMS (content management system) হলো অাপনার ওয়েব সাইটটি কোন টেকনিক্যাল জ্ঞান(প্রোগ্রামি বা কোডিং) ছাড়াই কত সহজ ভাবে মেইন্টেনেন্স করেত পারেন। ইকর্মাস সাইটের জন্য বর্তমানে অনেক ধরনের CMS রয়েছে বাজারে যার বেশির ভাগই ফ্রি বা ওপেন সোর্স, যেমন:Magento, OpenCart, PrestaShop, ZenCart, osCommerce, woocommerce ….ইত্যাদি । মানে ঐসব CMS ব্যবহার করে অাপনি ওয়েব সাইট বানাতে পারেন এবং এর জন্য কোন এককালিন, মাসিক কিংবা বাৎসরিক টাকা দিতে হবে না।
থিম(CMS Theme): ইকর্মাস সাইটের জন্য CMS টি ফ্রি হলেও তা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে অাপনি সাইটের মনের মত লুক দিতে পারবে না। এর জন্য অাপনাকে ডিজাইনার ও ডেভোলাপারের সাহয্য নিতে হবে। অার অাপনার সাইটি দেখতে কেমন হবে তা ই হলো থিম। মানে অাপনার ওয়েব সাইটের অাউটলুক টাই হলো থিম। কোন ডিজাইনার ও ডেভোলাপার কে দিয়ে থিম ডিজাইন করিয়ে তা অাপনার CMS এর উপযোগি করে তুলা হলো কাস্টম থিম ডিজাইন যা কি না অনেক সময় সাপেক্ষ ও ব্যয় বহুল। অন্যথায়, বর্তমানে অনেক ভাল মানের থিম কিনার অনলাইন মার্কেট/ওয়েব সাইট রয়েছে, যেখান থেকে অাপনার পছন্দের CMS এর থিম কিনতে পারবেন $40 – $190 এর মধ্যে। এবং এসব থিম কাস্টম থিম হতে যেমন সময় সাশ্রয়ই হবে তেমনি নিরাপত্তা দিক থেকে ও ১০০% বেশি নিরাপদ। তবে অনেক ওয়েব সাইটে এইসব CMS এর ফ্রি থিম দেখে থাকবেন! যা কি না অাপনার জন্য অতন্ত বিপদজনক। মনে রাখা ভালো যে সব থিম এর মূল্য $40 – $190, তা ফ্রি হয় কি ভাবে? মানে সব কিছু ফ্রি ভাল নয় । থিমের অনেক জনপ্রিয় সাইট রয়েছে, এর মধ্যে বহুলজনপ্রিয় একটি সাইট হলো : http://themeforest.net
CMS টি পরিচালনার জন্য টোকটাক Web টেকনোলজির ধারনা (Basic HTML)
CMS টেকনিক্যাল জ্ঞান(প্রোগ্রামি বা কোডিং) ছাড়াই মেইন্টেনেন্স করা গেলেও অাসলে কিছু বেসিক HTML এর সঙ্গে অাপনার পরিচিত হতে হবে, যা কিনা অাপনার প্রতি নিয়তই কাজে অাসবে। বেসিক HTML বলতে যেমন, HTML Tag( h1-h6, p, span, div, a … etc), HTML পেইজ স্ট্রাকচার (head, Title, Meta, Body)। HTML একটি মহা সমুদ্রের মত যা কিনা এই ব্লগে অামি ৩০দিন ধরে লিখেও শেষ করতে পারবো না। তবে HTML শিখতে নয়, বেসিক ধারনা নিতে ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন, র্সাচ করেত পারেন “Basic HTML” দিয়ে। নিন্মের লিংক হতে ও ভাল ধারনা নিতে পারেন: বেসিক HTML
এবং সময় করে একটু একটু করে HTML এর সবগুলো চাপটার শুধু দেখে যেতে অনুরোধ থাকলো। এতে কের অানার HTML স্ট্রাকচার, ট্যাগ সর্ম্পকে ভাল ধারনা হবে এবং CMS পরিচালনায় সহায়ক হবে। HTML Tag সর্ম্পকে ধারনার জন্য একটি ভিডিও
Browser এ Add-ons এর ব্যবহার
অামরা কম বেশি সবাই কিছু না কিছু Add-ons ব্যবহার করে থাকি Browser এর সাথে। যারা এর সাথে পরিচিত নয় , তাদের জন্য এক কথায় বলতে গেলে Add-ons হলো এক ধরনের এ্যাপ্লিকেশন যা কি না অাপনার ওয়েব ব্রাউজার এর সাথে এ্যাড হয়। Add-ons কে কাজে লাগাতে পারেন প্রতি নিয়ত। ‘Fireshot’ Firefox ব্রাউজারের একটি Add-ons যার মাধ্যমে অাপনি অাপনার ওয়েব সাইটের স্ক্রিনশর্ট নিতে পারেন, মার্ক করতে পারেন। Social & Communication, Photos, Music & Videos, Bookmarks, Feeds, News & Blogging, Download Management ইত্যাদি ধরেনর Add-ons ব্যবহার করে অাপনি অাপনার প্রতিদিনের অনেক কাজকে সহজ করতে পারেন। youtube অডিও-ভিডিও ফাইল কনর্ভাট/ডাউনলোড, থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজ করতে পারেন। নিন্মে Firefox ব্রাউজারের কিছু Add-ons এর উদাহরন দেওয়া হল:
- Fireftp (FTP addons file upload এর জন্য)
- Fireshot ( ব্রাউজারের স্ক্রিনশর্ট এর জন্য)
- ColorZilla (কালার পিক করার জন্য)
- Alexa Sparky (Alexa রিপোর্ট মনিটরিং)
- SEO Site Tools (SEO টুলস্)
সোসাল মিডিয়ায় Account তৈরি ও কানেক্ট করা
সোসাল মিডিয়ায় একাউন্ট তৈরি সংক্রন্ত বেশ কিছু পোষ্ট রয়েছে e-cab এর ব্লগ সাইটে। খুব বেশি কঠিন কাজ ও নয় এগুলো তৈরি করা। Facebook এর পাশাপাশি অন্যান্য সোসাল মিডিয়াতে অাপনার ইকর্মাস সাইটটির জন্য একাউন্ট তৈরি করে একটিভ থাকতে পারেন। এতে করে অাপনার সাইটের অর্গানিক ভিজিটর অানতে সহায়ক হবে। এ বিষয়ে ও বেশ কয়েকটি পোষ্ট রয়েছে e-cab এর ব্লগ সাইটে। তারপর ও অাবার দেখে নিতে পারেন সোসাল মিডিয়ায় একাউন্ট তৈরি করার প্রক্রিয়া গুলো:
- Youtube Channel তৈরি করা
- Google+ একাউন্ট তৈরি
- Twitter একাউন্ট for Business
- Facebook পেইজের সাথে Twitter একাউন্ট যুক্ত করা
বেসিক ফটো এডিটিং
খুব বড় অাকারে যারা ইকর্মাস শুরু করেননি বা যাদের বাজেটে অালাদা করে ডিজাইনের জন্য তেমন বরাদ্দ নাই শুরুর দিকে, তারা টুকটাক ইমেজ এডিটিং এর কাজ যেমন: Color adjust, Resize, File size Reduce, Water Mark/ জলছাপ…… ইত্যাদি ইত্যাদি জেনে রাখতে পারেন। এর জন্য অাপনাকে খুব ভাল ডিজাইনার বা এক্সর্পাট ও হতে হবে না। ইমেজ এডিটিং এর জন্য অনেক সফটওয়্যার রয়েছে তার মধ্যে LightRoom, Adobe Photoshop সবচেয়ে জনপ্রিয়। ডিজাইনার হিসেবে অামি বলবো Adobe Photoshop দিয়ে ই শুরু করেন। এতে করে অাপনার অনেক বেশি কাজে অাসবে ভবিষ্যৎতে।Basic Photo Editing এর অনেক ভিডিও রয়েছে ইউটিউবে। বাজারে অনেক বাংলা ভিডিও টিউটরিয়াল রয়েছে Adobe Photoshop এর উপর, খুব কাজে অাসবে টিউটরিয়াল গুলো।
ভাল অাউটপুটের জন্য ডিজাইনারের সাহায্য এর কোর বিকল্প নাই। সুতরাং কাজের ধরন ও প্রয়োজনীতা বুঝে ডিজাইনারের সহায়তা নিন এবং নিজে চেষ্টা করুন। সকলের জন্য রইল শুভ কামনা।
আরও পড়তে পারেনঃ
ইউজার ইন্টারফেস (UI ) কি এবং ই-কমার্স সাইট গুলোর জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
Mahady Hasan
UI & Frontend Developer
লিংডইন এ আমি
Email: [email protected]
web: www.somoytech.com
12,218 total views, 2 views today