ই-ক্যাবের সদস্য হলে কি লাভ?

ই-ক্যাবের সদস্য হলে কি সুবিধা?

শুরু থেকে ই-কমার্সের উন্নয়নে কাজ করছে ই-ক্যাব। ডিজিটাল কমার্স উদ্যোক্তাদের একটা বৃহৎ অংশ ই-ক্যাবের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণলায় অধিভূক্ত এবং এফবিসিসিআই তালিকাভূক্ত ই-কমার্স সেক্টরের একমাত্র প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন হিসেবে ই-ক্যাব কাজ করে আসছে। ১৫শ সদস্য প্রতিষ্ঠান, ২৯ টি উপকমিটি ও ১৭ জনের দাপ্তরিক জনবল নিয়ে ই-ক্যাবের ৯ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ বিগত ৬ বছরে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ৬ হাজার উদ্যোক্তাকে, সেমিনার আয়োজন করেছে প্রায় শতাধিক, দেশব্যাপী অর্ধশতাধিক ওয়ার্কশপ আয়োজন ও অসংখ্য মতবিনিময় সভা আয়োজন করেছে। ই-কমার্স সেক্টরের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সরকারের সাথে একসাথে কাজ করছে ই-ক্যাব।

দেশে যতরকম এর বিজনেস সেক্টর আছে সেসব সেক্টরের ট্রেডবডি বা এসোসিয়েশন আছে। কোনো পেশাদার ব্যবসায়ী নগদ লাভের জন্য এসোসিয়েশন এর সদস্য হয়না। ট্রেড লাইসেন্স যেমন ব্যবসার আইনগত স্বীকৃতি তেমনি এসোসিয়েশন এর মেম্বারশিপ এই সেক্টরে একজন উদ্যোক্তার পেশাদারিত্বের স্বীকৃতি। তবে এসোসিয়েশন এর সদস্য না হলেও ব্যবসা করতে কোনো বাঁধা নেই।

কোনো এসোসিয়েশন সদস্যদের সরাসরি ব্যবসা দেয়না বা টাকা দেয়না। এসোসিয়েশন ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি, উদ্যোক্তাদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে। ই-ক্যাবও তাই করছে। বর্তমানে ই-কমার্স সেক্টরে ঋণ সুবিধা না থাকলেও প্রাইম ব্যাংক থেকে ই-ক্যাব সদস্যদের বিনা জামানতে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে। ই-কমার্সখাতে েএখনো ভ্যাটের যে সুবিধা এই দাবী ই-ক্যাবই আদায় করেছে সরকারের কাছ থেকে।

কখনো সরকারী বা বেসরকারীখাতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুবিধা পেতে এসোসিয়েশন এর সদস্য হতে হয়। যেমন কেউ ই-ক্যাবের মেম্বার হলে বর্তমানে রেডজোন এলাকায় পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। প্রাইম ব্যাংকের ঋণসুবিধা পাবে। ভবিষ্যতে এমন অনেক কিছু আসতে পারে।

যেকোনো সমিতি বা সংস্থার সাথে জড়িত থাকলে নেটওয়াকিং হয়। তাতে সমজাতীয় উদ্যেক্তারা একজন আরেকজনকে সহযোগিতা করতে পারে।

অনেক এসোসিয়েশন আছে। তাদের সদস্য না হলে সে সেক্টরে অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়না। ই-ক্যাবের ক্ষেত্রেও রয়েছে। কোভিডের কারণে যখন জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়। তখন শুধুমাত্র ই-ক্যাব কোম্পানীগুলোকে অনলাইন অপারেশন এর অনুমতি দেয়া হয়। আর সেজন্য দীর্ঘ ৫ বছর সদস্য না হলেও ১ মাসের মধ্যে সদস্য হয়েছে ইউনিলিভার, উবার, ফ্রেস (তানভীর ফুড), টিকে গ্রুপ (ওয়েল রিফাউনারী), আকিজ ফুড, আব্দুল মোনেম লিমিটেড, মমতাজ হারবালসহ দেশের সব শীর্ষ কোম্পানী।

সুনিদিষ্টভাবে বলতে গেলে, যদি বলতে হয়। তাহলে ই-ক্যাবের সদস্য না হলে আপনি ই-কমার্স উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাংক ঋণ পাবেন না। ই-ক্যাবের সদস্য না হলে আপনি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ডাকে পণ্য পাঠাতে পারবেন না। ই-ক্যাবের সদস্য না হলে, লকডাউন এলাকায় পণ্য নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। ই-ক্যাবের সদস্য না হলে, ই-কমার্স সংক্রান্ত আপনার কোনো দাবী দাওয়া সরকার শুনবেনা।

সদস্যদের জন্য ই-ক্যাব কতৃক প্রদত্ত সুবিধা

১। ই-ক্যাবের লোগো ব্যবহার করে ক্রেতার আস্থা অর্জনের সুযোগ।

২। ই-ক্যাবের বিভিন্ন ট্রেনিং ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের সুযোগ।

৩। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড বিনা বার্ষিক ফি’তে ব্যবহারের সুযোগ।

৪। সরকারের সাথে বিভিন্ন আলোচনা ও পলিসিগত সভায় অংশগ্রহণের সুযোগ।

৫। প্রাইম ব্যাংক কতৃক বিনা জামানতে ৯% সুদে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণগ্রহণের সুযোগ।

৬। লকডাউন এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের অনুমতি। যা শুধুমাত্র ই-ক্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানের রয়েছে।

৭। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথ ক্যাম্পেইনে পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়ের সুযোগ যেমন, আমমেলা, ডিজিটাল কোরবানির হাট ইত্যাদি।

৮। ১৩৫০ সদস্যের পরিবারে পারস্পরিক আন্ত-বাণিজ্যের সুযোগ ও নেটওয়ার্কিং সুবিধা।

৯। বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীতে বিশেষ ছাড়ে স্টল বরাদ্দ নেয়ার সুযোগ।

১০। ই-ক্যাবের ফেসবুক গ্রুপে নিজের পন্য বা ব্রান্ডের প্রমোশনের সুযোগ।

১১। ই-পোস্টের মাধ্যমে ই-কমার্স ডেলিভারীতে ডাক বিভাগ দ্বারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পন্য প্রেরণের সুযোগ।

১২। বিভিন্ন সময়ে ই-ক্যাবের মেম্বাদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া বিশেষ সুবিধা গ্রহণের সুযোগ।

১৩। অন্যকোনো সদস্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনো ধরনের ভুল বোঝাবোঝি হলে সমঝোতার উদ্যোগ।

১৪। টিসিবি কতৃক সাশ্রয়ী ‍মূল্যে অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের জন্য ডিলারশিপ সুবিধা।

১৫। সিটি ব্যাংক কতৃক সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণগ্রহণের সুযোগ।

১৬। সদস্য প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানের জন্য মূল্য ছাড় ও বিশেষ অফার।

১৭। ব্রাকের প্রত্যাশা প্রকল্পের মাধ্যমে বিনিয়োগ পাওয়ার ‍সুযোগ।

ধন্যবাদ।

 

15,918 total views, 5 views today

Comments

comments