graphics-design-in-ecommerce

একটি পরিপূর্ন ই-কমার্স ব্যাবসায় মডেল তৈরি করতে হলে অনেকগুলো বিষয় পরিকল্পনার মধ্যে রাখা জরুরী। গ্রাফিক্স ডিজাইন, এর মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই আমি আজকের লেখায় এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

বর্তমানে আমরা দেখে থাকি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ই-কমার্স এবং এফ-কমার্স কোম্পানী আত্নপ্রকাশ করছে। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, বেশিরভাগ কোম্পানীরই ওয়েবসাইট, ওয়েব ব্যানার, লোগো, ফ্যানপেজের পোষ্ট, পোষ্ট ইমেজ খুব একটা দৃষ্টিনন্দন না, যা তাদের কাস্টমারদের আকর্ষন করার অন্যতম হাতিয়ার হওয়া উচিৎ। আসলে- ”একটা রুচিশীল ডিজাইন যে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক মান বা গুনগত পরিচয় বহন করে।”
গ্রাফিক্স ডিজাইনের গুরুত্ব সম্পর্কে ইংরেজিতে একটি কথা প্রচলিত আছে :

When you combine the right image, a well-written headline, professionally executed in a well-established package, then BOOM! The message hits its target.

আপনার ব্যাবসায়ের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন কতটা গুরুত্বপূর্ন তা নিচে পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করছি:

১. ব্র্যান্ডিং:

একটি কোম্পানীর টোটাল ব্র্যান্ড ইমেজ শুরু হয় একটি অসাধারন লোগোর মাধ্যমে, এবং এই লোগোটিই কোম্পানীর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করে। শুধুমাত্র লোগো এড করাই নয়, বরং কোম্পানীর বিজ্ঞাপন, ই-মেইল, ব্রূশিয়ার, লিফলেট, ওয়েব ব্যানার, ফেসবুক ও অন্যান্ন ফ্যান পেজের কভার ইত্যাদি প্রত্যেকটি সেক্টরেই সংশ্লিষ্ট ফন্ট, কালার এবং সামান্জস্যপুর্ন গ্রাফিক্স এর ব্যবহার থাকা জরুরী। যা আপনার গ্রাহকরা দেখে একটা সময় অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আদর্শ ব্র্যান্ডিং এর মূল চাবিকাঠি হল সমন্বয়, আর আদর্শ গ্রাফিক ডিজাইন হল সমন্বয়ের মূল চাবিকাঠি।

২. মার্কেটিং:

নির্দিষ্ট গ্রাহককে টার্গেট করার ক্ষেত্রে যতগুলো পদক্ষেপ গ্রহন করা দরকার তার মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন হল প্রধান পার্ট। কারন আপনার ডিজাইন আপনার কোম্পানির হয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে।

যেমন: (ক) প্ররোচনার শক্তি: গ্রাফিক্স ডিজাইনের সবথেকে বিশুদ্ধ ব্যাপার হল এটি গ্রাহকের মনকে প্ররোচনা প্রদান করবে এবং এটি আপনার ব্যবসায়কে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড এ উন্নিত করবে। এর মাধ্যমে তৈরী হবে সৃষ্টিশীল উপাদান, যা আপনার ব্যাবসায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

(খ) চাক্ষুস সৌন্দর্য: আসলে, আপনার ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যবহার করা হয় আপনার টার্গেট কস্টমারকে পটানোর জন্য। সুন্দর গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনাকে আপনার গ্রাহকের সামনে পরিচয় করিয়ে দিবে যে, আপনি কে। সে কি আপনার সঙ্গে কথা বলবে নাকি দৌড়ে পালাবে তাও নির্ভর করে এটার উপর।

৩. ফলপ্রসু প্রমোশন:

দুর্বল গ্রাফিক্স আপনার প্রডাক্ট বা ব্র্যান্ড এর জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। আপনি কি কখনো কোন সাইট ভিজিট করেছেন যা কিনা দেখতে খুবই এলোমেলো বা কুৎসিত অথবা আপনার ইনবক্সে কখনো এমন কোন মেইল এসেছে যার ডিজাইনটি দেখে আপনার মোটেও ভাল লাগে নি? এমনটা যদি হয়ে থাকে তাহলে আপনি হতাস হয়ে সেই সাইট থেকে বের হয়ে আসবেন এটাই স্বাভাবিক। ঠিক তেমনিভাবে, আপনার কোম্পনীর একটি বিজ্ঞাপন যদি দেখতে এমন কুৎসিত হয় বা লেখাগুলো পড়তে অসুবিধা হয় তাহলে আপনি আপনার কাস্টমারের এটেনশন হারাবেন। যদিও আপনার বিজ্ঞাপনটি সর্বোচ্চ ডলার খরচ করে দিয়েছিলেন। তবুও আপনার বিজ্ঞাপনটি ফেইল করবে, যথেষ্ট রিচ হবে না এবং আলটিমেটলি চাহিদার তুলনায় অনেক কম সেল আসবে।

 

সবশেষে, আমি একটি বিষয়ে টাচ করে যেতে চাই। তা হল- গ্রাফিক্স ডিজাইনে ক্যারিয়ার।

গ্রাফিক্স ডিজাইনে ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম সৃষ্টিশীল হতে হবে। ডিজাইনের মূল থিম আপনার মাথা থেকে আসতে হবে। এরপরে আপনাকে সফটওয়্যার এর কাজ শিখতে হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের অনেক ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে- এডোবি ইলাস্ট্রেটর, এডোবি ফটোশপ, এডোবি আফটার ইফেক্টস, এডোবি ফ্ল্যাশ এছাড়া কোড়েল ড্র নামে একটি সফটওয়্যার আছে যা আমাদের দেশে খুব একটা জনপ্রিয় না। শুধুমাত্র স্টিল ভেক্টর গ্রাফিক্স এর জন্য ইলাস্ট্রেটর এবং ফটোশপ এ দুটো সফটওয়ার আমাদের দেশে জনপ্রিয়।

আমাদের দেশে একজন ভাল মানের প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারের অনেক চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানী ভেদে তাদের বেতন সর্বনিম্ন ১৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আছে। এছাড়া বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স সেক্টরেও তাদের প্রচুর ইনকামের সুযোগ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার তা হল- সৃষ্টিশিল এবং রুচিসম্পন্ন কাজ করার দক্ষতা।

আশা করি আমার এই লেখাটি অনেকের কাজে আসবে। সবাইকে ধন্যবাদ

19,201 total views, 2 views today

Comments

comments