পন্যগ্রাফী ছবিসহ
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
হ্যাঁ পন্যের ছবি তোলা নিয়ে বলছিলাম। বিশেষকরে অনলাইন শপ ব্যবসায়ীদের জন্য।
ফটোগ্রাফী নিয়ে প্রথম লেখাটা পোষ্ট করার করার ই ক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ বলেছিলেন এ বিষয়ে ৪/৫ টি লেখা দিতে। আমি বলেছিলাম এবিষয়ে আমি অতকিছু জানিনা। যতটা জানলে ৪/৫টি লেখা দেয়া যায়।
প্রথম লেখাটি:
তারপর আরো একটা লেখা দিলাম। ছবিসহ। তখন মনে হলো ফটোগ্রাফী এমন একটা টেকনিক্যাল বিষয় শুধু লেখার হরফ দিয়ে সেটা বোঝানো কঠিন বটে। ছবিসহ লেখাটাতে আমি কথা দিয়েছিলাম যে পন্যের ফটোগ্রাফী নিয়েও স্বচিত্র লেখা দেবো। এটা সেই কথা রাখা। মজার ব্যাপার হলো এ বিষয়ে সত্যি সত্যি ৫টি লেখা হচ্ছে। এর মধ্যে মোবাইলে পস্যের ফটোগ্রাফী নিয়ে টিপস দিতে দিতে একটি মাঝারী সাইজের লেখা পোস্ট করা হয়ে গেছে। সেটি তৃতীয় লেখা ছিলো। এটি চতুর্থ। আর এডিটিং এর উপর হবে ৫ম লেখা। জানিনা। আরো বেশী হয় কিনা। কারণ ইতোমধ্যে ভিডিওগ্রাফীর উপরও ২টি লেখা দেয়া হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় লেখাটি:
তৃতীয় লেখা:
আর এটি চতুর্থ লেখা।
১. ক্যামেরার পজিশনটি ঠিক করুন। আইলেভেল বা সিটডাইন লেবেল অথ্যাৎ একজন মানুষ চেয়ারে বসলে তার চোখ যেখানে থাকে ভিউর জন্য ভালো। তবে পন্যের ছবি তোলার সময় সমানুপাতিক লেবেলটা ভালো। সবচে বড় কথা হলো পন্যটি কোন অবস্থায় কিভাবে রাখা আছে। সেটার উপর ক্যামেরার অবস্থান নির্ভর করবে।
২. ফোকাস ঠিক করুন। আপনি ঠিক যে জিনিসটির ছবি তুলছেন সেটাই ক্যামেরার মূল ফোকাসে থাকবে এটা মাথায় রাখুন। ফোকাসের পাশাপাশি পার্সফেকটিভ, লেন্স এবং হোয়াইট ব্যালেন্স দেখে নিতে ভুলবেন না।
৩. মনে রাখবেন ক্যামেরার সেটিং, মুড, আবহাওয়া, রেজুলেশন, জুম এসব অপশন ও সেটিংগুলো ঠিক করে নেয়ার কথা।
৪. পন্যের ছবি তোলার জন্য ব্যাকগ্রাইন্ড অতি আবশ্যক একটা বিষয়। সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো। তবে সাদায় যদি পন্যটির অবয়ব স্পস্ট না হয়। তাহলে ম্যাচিং কালার অফহোয়াইট ও ক্রিম কালার ব্যবহার করতে পারেন।
৫. যদি ভালোভাবে ফোটাতে পারেন তাহলে অন্যকালারও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন কাল্ োপন্যের জন্য হালকা হলুদ ব্যাকগ্রাউন্ড। আবার যদি আপনার মুন্সয়ানা থাকে তাহলে কন্ট্রাস্ট কালার ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যাকগ্রাউন্ডটা যেন চিকচিকে না হয়।
৬. ভালো লাইটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে ছবি তুলবেন পর্যাপ্ত আলো থাকা চাই। আলো ২/৩ দিক থেকে এমনভাবে পড়তে হবে যেন কোনোদিকে খুব গাড় ছায়া না পড়ে। আবার হালকা ছায়া পড়লে হয়তো ভালোই দেখাবে।
৭. আলো এবং ব্যাকগ্রাইন্ডের ঝামেলা জটিল মনে হলে আইটডোরে চলে আসুন। বিধাতা আপনার জন্য পর্যাপ্ত আলো এবং নানারকম প্রাকৃতিক নেপথ্যছবি বা ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরী করে রেখেছেন। আপনার কাজ হচ্ছে আলোটাকে ব্যালেন্স করা আর নেপথ্যমাঠটাকে ম্যাচিং করে নির্বাচন করা। যাতে আপনার পন্য বিষয় এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ খাপ খেয়ে যায়।
৭) ছবিতে দেখুন কোন পন্য কিসের তৈরী তা আলাদা লিখে বোঝানো হয়নি। ছবি দিয়েই বলা হয়েছে। এ পদ্ধতি খবই সুন্দর ও কার্যকর।
৮) একটি পন্যের বিভিন্ন কালার থাকলে একই ছবিতে ভিন্ন কালারের পন্যের ছবি তুলুন। তানাহলে একটা ইঙ্গিত দিয়ে বোঝান।প্রথম ছবিটি দেখুন। জামাটির ৪টি কালার রয়েছে। আর কালারগুলো যেন একুরেট আসে। কতরকমের কাপ হয় ছবিটিতে কিন্তু পরিষ্কার। যদিও এলামেলো মনে হয় কিন্তু কাপগুলোর রাখার মাঝে একটা সৃজণশীলতা রয়েছে। কালার একুরেসির কথা মাথায় রাখুন। আপনার পন্যের যে রং তার চেয়ে বেশী ভালো বা খারাপ কালার আসলে পরে সমস্যা হতে পারে। কারণ আপনি কিন্তু ছবি দেখিয়ে পন্য বিক্রি করছেন।
৯) কোনো ব্যবহার্য পন্যের ছবি তোলার ক্ষেত্রে পন্যটির ব্যবহারের জিনিস। নির্দেশিকার একটা ইঙ্গিত ছবিতে দেখাতে পারলে সবচে উত্তম। যেকথা ২০ টি শব্দ দিয়ে লিখে বোঝাতে হতো। সেকথা পাশে রাখা দুটি ফুলই বলে দিচ্ছে। প্রথমছবিটি দেখুন।
১০) মডেলিং ছবির ক্ষেত্রে মডেলের পোজ ও অভিব্যক্তি এবং ফিগার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মোটা বা খুব হালকা স্বাস্থ্যের কাউকে এজন্য বাছাই করবেনা। অথবা খুব বেটে কেউওনা। একেষেত্রে সেন্দৈর্য় একটা বিষয় সেটা ভুলে যাবেন না। শালীনতার ব্যাপরটাও মাথায় রাখুন।
১১) হাউজওয়ারের ক্ষেত্রে ডেকোরেশনটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে যথাসম্ভব ভালো ডেকোরেশন এর কথায় মাথায় রাখুন।
১২) আজকাল ফ্রন্ট সাইডের পাশাপাশি ব্যাকসাইডের ছবিও দিতে পারেন। অনেকের জানার আগ্রহ আছে যে জামাটা পরলে পেছন থৈকে কেমন দেখায়। বিশেষ করে কোন জামায় পিছনের ডিজাইন থাকলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই পেছনের দিকের একটা ছবিও নেবেন।
১৩) ছবির পাশে এরকম জায়গা রাখার কথা আগেও বলেছি। এরকম জায়গা থাকলে সেখানে ছবির বিবরণ লেখা যায়। এরকম জায়গা এডিট করার সময়ও রাখা যায়। কিন্তু ছবি তোলার সময়ও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। ছবিতে দেখুন খালি জায়গাতে জলছাপ ব্যবহার করা হয়েছে। তা হলেও এখানে অনায়াসে এই পোষাকের বিবরণ দাম সাইজ কিকি কালার কি সূতা এগুলো খুব সহজে লেকা যাবে।
১৪) ছবিটি দেখুন পরনের ঝামাটি আরো ২ রকমের স্টেপে পাওয়া যায়। সেটা কিভাবে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশের কাস্টমাররা এতটা এডভান্স হয়েছে কিনা সেটা অবশ্য একটা সেন্দেহ আছে। পরের ছবিটা দেখুন পাণীয়টা যে খুব লাইট বা হালকা সেটা কিভাবে বোঝানো হয়েছে। বুঝলেনতো। এভাবেই আপনার পন্যকে ছবির ভাষায় তুলে ধরতে হবে।
১৪) ছবিতে অন্যকোনো ইলিমেন্ট ব্যবহার করলে তার কালারের ব্যাপারে সচেতন থাকবেন। যন তার কালারের সাথে পন্যের কালার ম্যাচ করে। এটা খুবই দরকারী একটা বিষয়। কারণ এখানে ভুল করলে ছবির আবেদন নস্ট হয়ে যেগে পারে। প্রথম ছবিতে দেখুন ছোট ছোট কাঠগুলোতে একটার পর একটাতে কিভাবে কালার ম্যাচ করেছে।
(১৫) অন্য ইলিমেন্ট ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকবেন যেন এমনটি না হয় যে মানুষ বুঝতে পারছেনা। কোনটি পন্য। যেমন সাদাকালো কাপের পাশে বিস্কুট দেখ বোঝা যাচ্ছেনা। আসলে বিস্কুট দিয়ে কাপের আরো ৩টি কালার আছে হয়তো সেকথা বোঝাতে চাচ্ছে। যেমন পরের ছবিতে কিন্তু ােঝা যাচ্ছে যে তারা ডাল বেছতে চায়না বরং ৪ ডিজ্বেিনর স্পুন সেট বেছতে চায়।
১৬) একই পন্য ভিন্ন ভিন্ন সাইজের থাকলে তা একই সাথে দেখিয়ে দিতে পারেন। যদি কোনটা কোনটার চেয়ে ছোট বা বড় এটা বোঝানোর প্রয়োজন হয়ে।
১৭) এনিমেশন বা এডিট করে পন্যের ছবি দেয়া যায়। তবে কালারের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যেন হুবহু আসল পন্যটির মতো হয় তাও মনে রাখতে হবে।
১৮) যদি আপনার পন্যটি সত্যি সত্যি দামী হয়। তাহলে ছবিতে এমন মেডেল, ব্যাকগ্রাইনড ও ভাবসাব রাখতে হবে যেন আপনার দাবীটি প্রতিষি।িঠত করা যায়।
১৯) দেখুন একজায়গায় সাদা অন্যজায়গায় ন্যাচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করা হয়েছে দুটোতেই পন্যটি কিবাবে ফুটে উঠেছে একেবারে চোখে পড়ার মতো।
২০) আবার দেখুন পন্যের রঙ আর নেপথ্যরং এক তবুও ছবি ফুটেছে। আপনি এ ব্যাপারে দক্ষ না হলে। আপনার জন্য আগেরটাই ভালো।
২১) তবে একথা সত্য যে, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের তুলনা নেই।
২২) দেখুন ছবি কিভাবে কথা বলে. প্রথম ছবিতে এই জুতা পরে কিকি তাজ করা যায় সেটা কিভাবে বোঝালো খেয়াল করুন। দ্বিতীয় ছবিতে দোলনাটা চলমান নয় এটা এক জায়গায় স্থায়ী থাকবে সেটা কিভাবে বোঝালো। আশা করি বুঝেছেন।
15,080 total views, 4 views today

















































