business teamwork - business men making a puzzle
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
কর্মী বাছাই করার সহজ তরীকা হলো,  আপনি কি কি কাজ করবেন সেটা ঠিক করুন। কাজের আকার কতটুকু হবে তাও নির্ধারণ করুন। কি কি কাজ আছে তার তালিকাটাও জররী। এবার তার পাশে লিখুন সে কাজগুলো করার জন্য কর্মীর কি কি যোগ্যতা থাকা দরকার। সে যোগ্যতাগুলো যাচাই করার জন্য আপনার কিকি প্রশ্ন হবে? আপনার প্রশ্নের কি উত্তর হলে আপনার মূল্যায়ন কি হবে? এই বিষয়টার জন্য আপনার হোমওয়ার্ক করতে হবে। একটি সুন্দর ও বাস্তবমূখী মূল্যায়ন পত্র তৈরী করে নিতে পারলে কর্মী নির্বাচন সহজ হয়ে যাবে।

আপনার প্রতিষ্ঠানে কোন কোন কাজগুলো করার জন্য কর্মীর কিকি যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন?
১.    ব্যবস্থাপনা ও পলিসি মেকিং:
অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য প্রফেশনাল ডিগ্রি থাকা ভালো, আর তা না হলে ৩-৫ বছরের অভিজ্ঞতা ভালো কাজ দিতে পারে। তবে যদি প্রাথীর সামাজিক বা অন্যকোন ক্ষেত্রে এ ধরনের যোগ্যতা অভিজ্ঞতা থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর বাইরে নেতৃত্ব ও আনুগত্যশীলতার দ্বৈত যোগ্যতা থাকা দরকার।
পলিসি মেকিং এর জন্য অভিজ্ঞতাটাই আসল তবে মেধাবীদের ক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে একটা প্লান  চাওয়া যেতে পারে। পলিসি মেকিং এর জন্য বাস্তব সম্মত জ্ঞান ও দূরদর্শিতা থাকা চাই।
২.    কর্মী ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদনশীলতাবৃদ্ধি: দুটো বিষয়ের ক্ষেত্রে, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ তা না পেলে যে গুণগুলো থাকা দরকার তা হচ্ছে নেতৃত্বের যোগ্যতা, টিমে কাজ করার ক্ষমতা, পন্যের মান বোঝার ক্ষমতা, সমায়ানুবর্তিতা ও কিছুটা মিতব্যয়ী হওয়াও প্রত্যাশিত।
৩.    গণযোগাযোগ ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ: এ সর্ম্পকিত শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে আসবে। সর্ম্পকিত কাজে অভিজ্ঞতা অর্থাৎ সে পদে কাজ করার সরাসরি অভিজ্ঞতাও কাজের কাজ দিতে পারে। তা না হলে নিজের ব্যক্তি সামাজিক পারিবারিক জীবনে সম্পর্কের প্রভাব ইত্যাদি থাকা চাই।  এবং ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেবে চটপটে, রসবোধসম্পন্ন, বন্ধুবৎসল, সদালাপী ও হাস্যজ্জল হওয়া বাঞ্চনীয়।
৪.    ওয়েব ডেভলপমেন্ট ও সাইবার নিরাপত্তা : এ বিষয়ে যে কর্মী কাজ করতে চায় তার প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। পেশাদার, সৎ ও দেশপ্রেমও কাম্য। কাজের প্রতি আন্তরিকতা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবে তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে এটা গুরুত্বপূর্ণ।
৫.    মার্কেটিং ও প্রমোশন: এ পদে একজন কর্মীর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সফলতার ইতিহাস থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া আত্ববিশ্বাসী, মিষ্টভাষী, সৃজণশীল, লক্ষ্যপূরণে দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং উচ্চাভিলাসী হওয়া ভালো।
৬.    একাউন্টস ও ফিন্যান্স: এই পদে লোক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বড়ো প্রতিষ্ঠান হলা অবশ্যই বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা দরকার। তবে একাউন্টিং সফটওয়ার অপারেটিং এর যোগ্যতা থাকলে ভালো। আর সৎ, ঠান্ডামেজাজী এবং ব্যালেন্স মাইন্ডেড হতে হবে। কিছুটা মিতব্যয়ী হওয়াটাও দরকার।
৭.    পন্য ক্রয় ও পন্যের বাজারদর পর্যবেক্ষণে রাখা: এ পদে কাজ করার জন্য কর্মীর অভিজ্ঞতাই প্রথম ও প্রধান। পাশাপাশি চোখ কান খোলা রাখা, পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, পরিশ্রমী ও শারিরিক যোগ্যতা আবশ্যক।
৮.    কাস্টমার কেয়ার ও টেলিফোন কেয়ার: এ কাজে কাজ করা লোকটির সামাজিক ও পেশাগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। মিষ্টভাসী, সুদর্শণ, আন্তরিক, শুদ্ধ ও জড়তাবিহীন উচ্চারণ, সঠিক ও প্রমিত উচ্চারণ।
৯.    পরিবহণ, ডেলিভারী ও প্যাকিং: এ ধরনের কাজ করার জন্য যে ধরনের কর্মী নির্বাচন করবেন তার সংশ্লিস্ট বিষয়ে ভালো ধারণা দরকার , যোগাযোগ দক্ষতা থাকা চাই, যেকোন বিষয়ে সর্বশেষ তথ্যগ্রহ করা তার কাজের অংশ হবে সে প্রবণতাটা কর্মীর কাছে থাকা চাই।
১০.    দামগ্রহণ ও ব্যাংকিং: অভিজ্ঞতাই একজন কর্মীকে এবিষয়ে এগিয়ে রাখবে। সাথে মেধা ও দায়িত্বশীলতা তার কাজের সহায়ক হবে। ব্যাংকিং ইনফরমেশন জানা থাকতে হবে। ব্যাংকিং নলেজও থাকা চাই।
১১.    সাধারণ কার্যাবলী ও অফিস কার্যাবলী: সংশ্লিস্ট বিষয়ে ভালো জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, সামাজিক আচরণ ধারণা ও কাজের প্রতি একনিষ্ঠতা জরুরী। সব বিষয়ে উপর প্রাথমিক ধারণা থাকা চাই।
১২.    নিরাপত্তা পন্য সংরক্ষণ: সংশ্লিস্ট বিষয়ে ভালো জানা থাকতে হবে। থাকতে হবে উপস্থিত বুদ্ধি ও বিপদে সিদ্ধান্ত গ্রহনের যোগ্যতা
১৩.    যাতায়াত ও যোগাযোগ: সংশ্লিস্ট বিষয়ে ভালো অভ্যাসের চর্চা, ডায়নামিক ও দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা।
কমীদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের অভিযোগের অন্ত নেই। অভিযোগও অমূলক নয়। কিন্তু সমস্যাটা আমাদের সমাজে গেড়ে বসেছে। একজন ব্যবসায়ীর ব্যবসা না করে কোনো গত্যন্তর নেই। কর্মীদের সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য চাই কিছু পরিকল্পনা এবং পদ্ধতি ও নীতিগত উপাদান। এসব থাকবে আগামী লেখায়।

7,942 total views, 2 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.