কাস্টমার ক্ষ্যাপাটে হবে, ভদ্র হবে, অভদ্র হবে, ভাল-খারাপ ব্যবহার করবে কারণে কিংবা অকারণে। যেহেতু ব্যবসা করছেন সেহেতু আপনি চান আর নাই চান সব ধরণের কাস্টমারের মুখোমুখি আপনাকেই হতে হবে। ক্ষ্যাপা কাস্টমার পরবর্তীতে আপনার কাছে ফিরে আসবে কি আসবে না তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সেবা প্রদানের মাধ্যমে আপনি কিভাবে তাকে সন্তষ্ট করলেন তার ওপর।
কাস্টমার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যেসকল অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত এমন ৭টি বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. শান্ত থাকুন:
কাস্টমার কল দিয়ে গালাগালি, চিল্লাচিল্লি করবে কষ্ট করে হজম করেন, আপনি চিল্লাচিল্লি করলে কিংবা পাল্টা জবাব দিলে কিন্তু কোন ধরণের সমাধানেই আসতে পারবেন না। দাঁত চেপে তার সকল অভিযোগ শোনেন।
২. ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ না করা:
কাস্টমার আসলে আপনার উপর না সে মূলত আপনার পণ্য কিংবা সেবার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আছে তাই কোনভাবেই তার অভিযোগে অথবা অভদ্র আচরণে মন খারাপ করবেন না।
৩. শোনার দক্ষতা বৃদ্ধি করুন:
একজন ক্ষুব্ধ কাস্টমার তার বুকে চাপা থাকা সকল ক্ষোভের কথা কাউকে শোনাতে চায় – সৌভাগ্য আর দুর্ভাগ্য যায় বলেন না কেন সেটা আপনাকেই শুনতে হবে। ধৈর্য্য ধরে তাঁর পুরো কথাগুলো শুনুন তাতে পরিস্থিতি ঠান্ডা হবে, একইসাথে কাস্টমারও অনুধাবন করতে পারবে যে আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এরপর আপনার পালা – কাস্টমার যা যা বলল সেটাই আবার সংক্ষেপে তাঁকে বলুন, সাথে জিজ্ঞাসা করুন এর বাইরে তাঁর আর কোন অভিযোগ বা জানার আছে কিনা। বডি ল্যাঙ্গুয়েজের দিকে খেয়াল রাখুন – সরাসরি আই কন্টাক্ট করুন, সোজা হয়ে বসবেন অথবা দাঁড়াবেন কিন্তু হাত বেধে থাকা যাবে না। আপনাকে বোঝাতে হবে আপনি তার অভিযোগ খুব গুরুত্বের সাথে দেখছেন।
৪. সহানুভূতি প্রকাশ:
কাস্টমার তার চেপে রাখা কষ্ট আপনাকে উজার করে বলার পর সে হয়ত অনুধাবন করতে পারবে যে উনি আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। সেক্ষেত্রে আপনিও সহানুভুতি প্রকাশ করুন তাঁর এধরণের একটি অভিজ্ঞতার জন্য।
৫. বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থনা:
কাস্টমারের অভিযোগ যুক্তিসঙ্গত হোক আর না হোক তাতে কিছুই যায় আসে না, উনাকে আপনার ধরে রাখতে হলে আপনাকে বিনয়ের সাথে তাঁর নিকট থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে তার তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্য। “আমি খুবই দুঃখিত যে আমাদের প্রোডাক্টে আপনি হ্যাপি না। আমাদেরকে আরেকবার সুযোগ দিন আপনাকে আরো ভালো সেবা দেয়ার” – সরাসরি এজাতীয় কথা ব্যবহার করুন।
৬. সমাধান খুজুন:
যখন আপনি কাস্টমারের অভিযোগ সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবেন তখন তার সমাধান খুজে বের করার চেষ্টা করুন এবং তাকেই জিজ্ঞাসা করুন যে – কি করলে তিনি খুশি হবেন এবং আপনি আপনার বুদ্ধিমত্তা এবং পেশাদারিত্ব দিয়ে তার সমাধান করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাস্টমাররা সেটাই চান।
৭. এইবার নিজেকে সময় দিন:
কাস্টমারের সাথে খুশি খুশি মেজাজে কথা শেষ করুন এবং তারপর ৫ / ১০ মিনিট নিজেকে সময় দেন। এই ধরণের কাস্টমার হ্যান্ডেল করা সোজা বিষয় না। গান শুনুন, হাটাহাটি করুন, কিছুটা রিল্যাক্স হয়ে আবারো পরবর্তী কাস্টমারের সাথে কথা শুরু করুন।
আমার কাছে ক্ষ্যাপাটে কাস্টমার হলো একটি ঝাকানো কোকাকোলার বোতল – খোলার সাথে সাথে সব উপচে পড়বে, সময় দেন দেখবেন আবারও আগের জায়গায় ফিরে যাবে, সময় দিবেন না তো জামা কাপড় ভিজে একাকার।
অর্নব মুস্তাফা
২৪.১০.২০১৫
Facebook: arnovi97
Linkedin: arnob-mustafa
Skype: arnovi97
Related Video: ই কমার্সে কাস্টমার সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা (ভিডিও)
5,921 total views, 1 views today