“দেশে ই-কমার্সকে জনপ্রিয় তুলতে হলে সাধারণ মানুষকে ই-কমার্স সম্পর্কে সচেতন করতে হবে আর এ জন্যে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে মেলা আয়োজন করা যেতে পারে। একই সাথে ই-কমার্স সম্পর্কে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে। এ জন্যে অবশ্যই পণ্য ডেলিভারি ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।” গতকাল (এপিল ১০, ২০১৫) ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর ই-কমার্স মাস উদযাপন অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব উপদেষ্টা মাননীয় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান এ কথা বলেন। এ উৎসবে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

nilov

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের শাকসব্জি জন্মে যেমন- নাপা শাক, তোপসে মাছ। এসব পণ্য ঢাকা সহ বড় বড় শহরগুলোতে তেমন পাওয়া যায় না এবং অনেকেই এসব শাকসব্জি বা মাছের কথা জানে না। ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশের যেকোন জায়গায় বসে মানুষ অনলাইনে এসব পণ্য কিনতে পারে। একটি শক্তিশালী ই-কমার্স ইণ্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার লক্ষ্যে দক্ষ জনবল তৈরি করা দরকার আর এ ই-ক্যাবকে যত দ্রুত সম্ভব বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। একই সাথে জন্যে স্কুল কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের ই-কমার্স সম্পর্কে জানাতে হবে।”

তিনি আশ্বাস দেন যে  কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে ই-কমার্স অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

দেশে ই-কমার্সকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ২০১৫ সালকে “ই-কমার্স বছর” হিসেবে ঘোষণা করে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এপ্রিল ৭, ২০১৫ (মঙ্গলবার) “ই-কমার্স দিবস” উদযাপন করে এবং এপ্রিল মাস জুড়ে “ই-কমার্স মাস” পালন করছে। ই-কমার্স দিবস এবং ই-কমার্স মাস উপলক্ষে ই-ক্যাব এর সদস্যরা ডিসকাউন্ট সহ বিভিন্ন অফার দিয়েছে। ই-কমার্স মাস উপলক্ষে ধানমণ্ডির স্টার্ট আপ রেস্টুরেন্ট অ্যাণ্ড ক্যাফেতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ই-ক্যাব। ই-ক্যাব এর কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, সাধারণ সদস্য, উপদেষ্টা, ই-কমার্স ইণ্ডাষ্ট্রির সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবর্গ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উদ্বোধনী বক্তৃতা প্রদান করেন ই-ক্যাব এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। তিনি তার বক্তৃতায় ই-ক্যাব এর কর্মকাণ্ড এবং সাফল্যসমূহ দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন। এরপরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, “আমার প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল ই-ক্যাবকে সদস্যদের একটি সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলা।”এর পরে ই-ক্যাব এর সদস্যগণ কিভাবে ই-ক্যাব এর মাধ্যমে কিভাবে ব্যবসায় উন্নতি করেন তা সকলের সামনে তুলে ধরেন।

মোঃ সবুর খান, প্রাক্তন সভাপতি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), এবং ই-ক্যাব উপদেষ্টা, ই-ক্যাব এর কর্মসূচি সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে উদ্যোক্তা তৈরির একটি ধারা চালু হয়েছে যা ২০১৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যাণ্ড ইণ্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন কালে আমি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেই।

ই-ক্যাব নতুন ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্যে খুবই সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ই-কমার্স এর মাধ্যমে আমাদের দেশের পণ্য অন্য দেশে যেন রপ্তানি করা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। একই সাথে দেশীয় ই-কমার্স খাতকে শক্তিশালী করে তুলতে হলে একটি পলিসি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।”

 

মোস্তাফা জব্বার, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং ই-ক্যাব উপদেষ্টা ই-ক্যাব এর কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কাজ হচ্ছে তাদের সদস্যদের জন্য ব্যবসার পথ তৈরি করা এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সমূহ দূর করা। এ কাজটি ই-ক্যাব ভালভাবে করে যাচ্ছে এবং অদূর ভবিষ্যতে তারা এভাবে কাজ করে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “ই-কমার্সই হচ্ছে ভবিষ্যতের বাণিজ্য। আমাদের তরুণ-তরুণীরা এটি বুঝতে সক্ষম হয়েছে। তাই তারা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ই-কমার্স বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ই-কমার্সের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সর্বাগ্রে এ চ্যালেঞ্জগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। ই-কমার্সের উপরে এখনো সুনির্দিষ্ট কোন পলিসি নেই তাই ই-ক্যাবকে একটি পলিসি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে। অনলাইনে প্রতারণা রোধে ই-ক্যাবকে খুবই শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে কারণ ক্রেতার আস্থা অর্জন করতে না পারলে এ খাতে সত্যিকারের কোন উন্নতি হবে না। বর্তমানে বেশিরভাগ ই-কমার্স ব্যবসা ক্ষুদ্র ব্যবসা। তাই এসএমই ফাউণ্ডেশন থেকে ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা যেন ফাণ্ড পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মমতাজ বেগম, এ্যাডভোকেট, চেয়ারম্যান, জাতীয় মহিলা সংস্থা; প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি (বিসিএস); কে. এম. আব্দুল ওয়াদুদ মহাব্যবস্থাপক, পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক;  মোঃ মুজিবুর রহমান জেনারেল ম্যানেজার (জিএম), এসএমই ফাউণ্ডেশন; মোহাম্মদ আব্দুর রউফ সিওও আড়ং;  আশীষ চক্রবর্তী, মহা-ব্যবস্থাপক, এস এস এল ওয়্যারলেস; এবং ডায়মণ্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড এর হেড অব অনলাইন প্রমোশন মোঃ গিয়াস উদ্দীন।

অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিরা কেক কেটে লিটলঅ্যাঞ্জেলসবিডি.কম ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,  ই-ক্যাব অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক, ই-ক্যাব ডিরেক্টর(গভর্ণমেন্ট অ্যাফেয়ার্স) রেজওয়ানুল হক জামী, ই-ক্যাব ডিরেক্টর (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) সেজান সামস, ই-ক্যাব ডিরেক্টর(কমিউনিকেশনস) আসিফ আহনাফ, এবং ই-ক্যাব নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌস হাসান সোহাগ।

যোগাযোগ:

ঠিকানা: হাউস-২৯, রোড-৬, ধানমণ্ডি, ঢাকা-১২০৫

ফোন: ০৯৬১৩-২২২-৩৩৩

5,445 total views, 3 views today

Comments

comments

Your email address will not be published.