ই-কমার্স ওভারভিউ: ২০১৫ থেকে ২০২০
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ২০১৪ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের ই-কমার্সের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। হাজার হাজার তরুন উদ্যোক্তার প্রশিক্ষন, সরকারের সাথে সহযোগী হিসেবে আইসিটি পলিসি বাস্তবায়নে ভূমিকা ও ডিজিটাল কমার্স পলিসি তৈরীতে সহযোগিতামূলক ভূমিকা রেখেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি ডিভিশন, এটুআই, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনসহ সরকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে যৌথভাবে ই-বাণিজ্যের উন্নয়নে কাজ করছে। আন্তজাতিক সংস্থার মধ্যে আইসিটি, এফএনএফ, শী ট্রেডস এর মতো সংস্থার সাথেও যৌথভাবে কাজ করেছে ই-ক্যাব।
বিগত করোনাকালীন সময়ে ই-ক্যাব চালু করে মেম্বার রেজিস্ট্রেশন ও হেলথ সেন্টারসহ নানাবিধ অনলাইন সেবা। ই-ক্যাবের স্টিকার নিয়ে সদস্য প্রতিষ্ঠানের ২০ হাজার গাড়ি সারাদেশে সাপ্লাইচেইন সচল রেখেছে। নিত্যপণ্য সরবরাহ তদারকীর মাধ্যমে ই-ক্যাব ডিজিটাল অর্থনীতির চাকাকে করেছে অধিকতর গতিশীল। ডিজিটাল হাটের মাধ্যেমে কোরবানি পশু বিক্রি, আমমেলার মাধ্যমে বাগান থেকে সংগ্রহ করা ক্যামিকেমুক্ত আম বাসায় ডেলিভারী, লকডাউন এলাকায় ঘরে ঘরে নিত্যপণ্য সরবরাহ, মানবসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে হাজারো দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, অনলাইনে টিসিবি’র পণ্য বিক্রির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা এবং ইজিনিয়াস উদ্যোগের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে সহশিক্ষা কার্যক্রমে গ্রহণ করার মাধ্যমে ই-ক্যাব যুগপত ভূমিকা পালন করে মানবিক সংস্থা হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশ ও মানুষের পাশে থাকা, সদস্য উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কাজে সহযোগিতা এবং সরকারের পাশে থেকে উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রাখায় ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ই-ক্যাবকে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরষ্কারে ভূষিত করেছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের শেষে বাংলাদেশে ৯ কোটির মতো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিলেন, যাঁদের ৮ কোটিই ছিলেন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ২০১৯–এর নভেম্বর পর্যন্ত মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ কোটির কিছু বেশি, যার ৯ কোটি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
আমাদের দেশে ৮০ শতাংশেরও বেশি অনলাইন বাণিজ্যই হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আমাদের দেশের এফ-কমার্স প্লাটফর্মের বেশির ভাগই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তাদের মধ্যে আবার উল্লেখযোগ্যসংখ্যকই নারী।
আইডিএলসি মান্থলি বিজনেস রিভিউতে (ফেব্রুয়ারি ২০১৯) প্রকাশিত ইমার্জেন্স অব এফ-কমার্স স্টার্টআপস প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধু ঢাকাতেই নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২ মিলিয়ন । বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারী ৮৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। দেশে এফ-কমার্স মার্কেটের আকার প্রায় ৩১২ কোটি টাকা। ব্যবহারকারীর মধ্যে ৭২ শতাংশের বেশি পুরুষ থাকলেও নারীদের মালিকানায় রয়েছে ৫০ শতাংশ ফেসবুক স্টোর। তাদের মাসিক আয়ের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। দেশে ২ লাখেরও বেশি অনলাইন স্টোর রয়েছে, যা ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
শিরোনাম | ২০১৫ | ২০১৬ | ২০১৭ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ |
ই-ক্যাবের সদস্য সংখ্যা | ২০০ | ৩০০ | ৫০০ | ৭০০ | ৯০০ | ১৩০০ |
ই-বিজনেস ওয়েবসাইট | ৫০০ | ৭০০ | ১০০০ | ১২০০ | ১৫০০ | ২০০০ |
ফেসবুক পেইজ (একটিভ) | ৭০০০ | ৮,০০০ | ১০,০০০ | ১২,০০০ | ১৫,০০০ | ২০,০০০ |
ফেসবুক পেইজ (মোট) | ২০,০০০ | ৩০,০০০ | ৫০,০০০ | ৮০,০০০ | ১২০,০০০ | ২০০,০০০ |
দৈনিক ডেলিভারীর পরিমাণ | ৪০,০০০ | ৫০,০০০ | ৭০,০০০ | ৯০,০০০ | ১২০,০০০ | ১৭০,০০০ |
বাস্কেট ভ্যালু | ৬৫০ টাকা | ৭০০ টাকা | ৭৫০ টাকা | ৮০০ টাকা | ১০০০ টাকা | ১৫০০টাকা |
মোট লেনদেন | ৩ হা কো | ৫ হা কো | ৬ হা. কো | ৮ হা. কো | ১২হা.কো | ১৬ হা. কো. |
দৈনিক লেনদেন | ৯ কো.টা | ১৩ কো. টা | ১৮ কো.টা | ২২ কো. টা | ৩৩ কো. টা | ৪৪ কো. টা. |
এরমধ্যে একটি অংশ রয়েছে। নন ডেলিভারিবল পণ্য। যেগুলো সরাসরি বাসায় ডেলিভারী দিতে হয়না। যেমন পরিবহন টিকেট। |
বর্তমানে বেশকিছু ইস্যু সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বিবেচনাধীন রয়েছে। এসব বিষয়ে দ্রুত ও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গৃহিত হলে ই-কমার্সের বর্তমান প্রবৃদ্ধির হার আরও বৃদ্ধি পাবে। যেমন
১. বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মূদ্রা বিনিময় বিভাগে রয়েছে বৈদেশিক মূদ্রার ব্যয় সীমা সংক্রান্ত বিশেষ প্রস্তাব।
২. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে বিবেচনাধীন রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স সংক্রান্ত ইস্যুসমূহ
৩. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষের বিবেচনাধীন রয়েছে ডেলিভারী বাইকে বক্স সংযোজনের অনুমতির বিষয়।
৪. স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স ক্যাটাগরিতে ই-কমার্স সংযোজন।
৫. অন্যান্য
1,877 total views, 6 views today